অনুমোদন নেই, প্রাণীর জোগানদাতা সাবেক মেয়র, পরিচালনায় সাবেক কাউন্সিলর
Published: 8th, April 2025 GMT
ভালুকের শরীরে পচন ধরার ঘটনায় আলোচনায় এসেছে ময়মনসিংহ নগরের জয়নুল আবেদিন উদ্যানের ভেতরে পরিচালিত মিনি চিড়িয়াখানাটি। এখানকার কর্মীরা চিড়িয়াখানাটির অনুমোদন ও প্রাণীগুলো আমদানির কাগজপত্র আছে দাবি করলেও কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট বলছে, চিড়িয়াখানাটির কোনো অনুমোদন নেই।
সিটি করপোরেশন থেকে মেসার্স সেলিম এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান চিড়িয়াখানার জমিটি বরাদ্দ নিয়েছিল। কর্মী ও আশপাশের লোকজনের ভাষ্য, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ইকরামুল হক (টিটু) এখানে প্রাণীর জোগান দিতেন। আর সামনে থেকে চিড়িয়াখানাটি পরিচালনা করতেন সাবেক কাউন্সিলর মাহবুবুর রহমান।
২০১৩ সালে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় মিনি চিড়িয়াখানাটি গড়ে তোলা হয়। ৩০ টাকায় টিকিট কেটে দর্শনার্থীরা চিড়িয়াখানাটিতে ঢুকতে পারেন। পরের বছর থেকে চিড়িয়াখানাটিতে প্রাণীর দেখাশোনা করছেন কামাল হোসেন। তিনি বলেন, কুমির, ভালুক, হরিণসহ ২৩ প্রজাতির প্রাণীর অনুমোদন আছে। তাঁর কাছে কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি কিছু দেখাতে পারেননি।
কামাল হোসেন বলেন, সাবেক মেয়র (ইকরামুল হক) বেশির ভাগ সময় প্রাণীর ব্যবস্থা করতেন। বেশির ভাগ প্রাণী ঢাকা থেকে আনা হতো। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থাকলেও সাবেক মেয়র ও কাউন্সিলর কীভাবে এর সঙ্গে সম্পৃক্ত হলেন—জানতে চাইলে তিনি বলেন, একজনের নামে লাইসেন্স নিলেও চিড়িয়াখানাটি চালাতেন তাঁরাই (সাবেক মেয়র ও কাউন্সিলর)। অনেক লোক আছে ঢাকা থেকে এসে প্রাণী দিয়ে যান। তিনি বলেন, ‘আমরা জানি শুধু লাইসেন্স আছে। কিন্তু কত সালে লাইসেন্স নেওয়া হয়েছে, এসব জানি না।’
চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের প্রবেশমূল্য ৩০ টাকা.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বকেয়া বেতনের দাবিতে টঙ্গীতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, দুই ঘণ্টা পর মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক
বকেয়া বেতনের দাবিতে গাজীপুরের টঙ্গীতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা। আজ বুধবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত খাঁপাড়া এলাকায় এ কর্মসূচি পালিত হয়।
সিজন্স ড্রেসেস লিমিটেড নামের একটি কারখানার শ্রমিকদের এ কর্মসূচির কারণে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে মহাসড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ ছিল। এতে দুর্ভোগে পড়েন চলাচলকারী যাত্রী, চালক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। পরে বেলা ১১টার দিকে পুলিশ ও সেনা সদস্যরা তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
শিল্প পুলিশ ও শ্রমিকদের সূত্রে জানা যায়, কারখানাটির দেড় হাজার শ্রমিক সকালে কাজে যোগ দিয়ে মার্চ মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবি জানান। তবে কর্তৃপক্ষ পরিশোধের তারিখ তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে না পারায় শ্রমিকেরা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। এর কিছুক্ষণ পর তাঁরা স্লোগান দিয়ে কারখানা থেকে বেরিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের এশিয়া পাম্প বাসস্ট্যান্ড নামের এলাকায় অবস্থান নেন। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে প্রায় দুই ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে শিল্প ও থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। এতে শ্রমিকেরা আরও উত্তেজিত হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ দুটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে এবং গরম পানি ছিটিয়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
বিক্ষোভরত কয়েকজন শ্রমিক জানান, ঈদের আগে তাঁদের অর্ধেক বেতন-বোনাস দিয়ে কারখানা ছুটি দেওয়া হয়েছিল। তখন বলা হয়, ঈদের পরই বাকি টাকা পরিশোধ হবে। কিন্তু এখনো কিছু পাননি তাঁরা। এ জন্য ঘরভাড়া ও দোকানের বকেয়া পরিশোধ করতে পারছেন না।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক ইসমাইল হোসেন জানান, শ্রমিকেরা মহাসড়ক থেকে সরে যাওয়ায় আজ বেলা ১১টা থেকে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।