চলমান বিসিএস জট কাটিয়ে পরে এক বছরের মধ্যে পরীক্ষা শেষ করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে পিএসসি। এদিকে দাবি আদায়ে তিন দিন সময় দিয়ে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) কার্যালয় ছেড়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা। সেনাবাহিনীর মধ্যস্থতায় আজ মঙ্গলবার বিকেলে আন্দোলন স্থগিত করেন তারা।  

৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আজ রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পিএসসি কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন চাকরিপ্রার্থীরা। এক পর্যায়ে দুপুরে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে ভেতরে ঢুকে পড়েন তারা। পরে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন পিএসসি কর্মকর্তারা।

বৈঠক শেষে চাকরিপ্রার্থীরা জানান, সেনাবাহিনীর সদস্যদের কাছে পিএসসি তিন দিন সময় চেয়েছে। সেনাবাহিনীর ওপর আস্থা রেখে কর্মসূচি তিন দিন স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

বাইরে বিক্ষোভের মধ্যেই ভেতরে ব্রিফ করেন পিএসসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোবাশ্বের মোনেম। তিনি ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা পেছানোর দাবিকে অযৌক্তিক মন্তব্য করেন। এ মন্তব্যে আন্দোলনকারীরা ক্ষুব্ধ হয়ে এক পর্যায়ে ফটক ভেঙে কার্যালয়ে ঢুকে পড়েন। পরে পিএসসি কর্মকর্তারা তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে বাধ্য হন।

চাকরিপ্রার্থীরা জানান, ছয় মাস পার হলেও অর্ধেক প্রার্থীর ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা হয়নি। বর্তমান গতিতে চললে এটি শেষ করতে আরও এক বছর লাগবে। উত্তীর্ণদের ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা রয়েছে। ৪৪তমের মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়া অধিকাংশ প্রার্থী ৪৬তম বিসিএসের লিখিত দেবেন। তারা লিখিত নাকি মৌখিক– কোনটির প্রস্তুতি নেবেন, প্রশ্ন তাদের।

এ ব্যাপারে পিএসসি চেয়ারম্যান বলেন, যারা পড়াশোনা করেছেন, তারা সবাই প্রস্তুত। দুই সপ্তাহ পরীক্ষা পেছানোর জন্য তারা বসে রয়েছেন বলে মনে হয় না। কারণ একই সিলেবাসে দুটি পরীক্ষা; একটি পড়েই দেওয়া যাচ্ছে। পরীক্ষা পেছানোর দাবি অযৌক্তিক।

পিএসসি চেয়ারম্যান ও কমিশনের অন্যান্য সদস্য আজ সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জানিয়েছেন, বিদ্যমান চারটি বিসিএস জট কাটিয়ে পরে এক বছরের মধ্যে একটি পরীক্ষা শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। একই সঙ্গে বিসিএস পরীক্ষার পাঠ্যসূচিতেও পরিবর্তনের চিন্তাভাবনা রয়েছে এবং শিগগির পাঁচ বছর মেয়াদি কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করা হবে।
যদিও এসব কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়নি। নানা কারণে নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী এক বছরের মধ্যে বিসিএস শেষ করা যাবে কিনা, তা নিয়ে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আগের পিএসসি কর্তৃপক্ষ এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।

বর্তমানে পিএসসির অধীনে বিসিএসের ২৬টি ক্যাডারে নিয়োগ হয়। নন-ক্যাডার পদে নিয়োগেরও সুপারিশ করে সংস্থাটি। ইতোমধ্যে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন সরকারের কাছে দেড় বছরের মধ্যে পরীক্ষাসহ বিসিএসের নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করার সুপারিশ করেছে।

এতে বলা হয়, বিসিএস পরীক্ষা হবে এক বছরের মধ্যে। বাকি ছয় মাসে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ ও নিয়োগ প্রক্রিয়া হবে। এ জন্য প্রিলিমিনারি, লিখিত, মৌখিক ও মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা বছরের কোন সময়ে হবে, তার পঞ্জিকা দিয়েছে কমিশন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প এসস চ কর প র র থ র পর ক ষ শ ষ কর প এসস

এছাড়াও পড়ুন:

মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার

প্রায় ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দির ও কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পৃথক আয়োজনে রাস উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে হবে এ উৎসব। রাস উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ায় বসছে ৫ দিনব্যাপী মেলা। 

কলাপাড়ায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে মন্দিরের আঙ্গিনাসহ রাধা ও কৃষ্ণের ১৭ জোড়া প্রতিমা।

মঙ্গলবার পূর্ণিমা তিথিতে রাত ৯টা ২২ মিনিটে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে এ তিথি শেষ হবে। সেদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এর পর মন্দিরের আঙ্গিনায় রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন তারা। তাই, দুই মন্দিরেই ১৭ জোড়া প্রতিমা বানানো হয়েছে। প্যান্ডেল সাজানোর কাজ শেষ। চলছে লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ। 

এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মন্দির প্রাঙ্গণ, কুয়াকাটার মন্দির প্রাঙ্গণ ও সৈকতে অস্থায়ীভাবে বসছে শতাধিক পোশাক, প্রসাধনী, খেলনা ও গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকান। কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী উৎসব হলেও কলাপাড়ায় এ উৎসব চলবে পাঁচ দিন। এসব দোকানে অন্তত ৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন আয়োজকরা। 

কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমের রাস উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেছেন, আজকের মধ্যেই আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের এ উৎসব হলেও এখানে ৫ দিনব্যাপী মেলায় সব ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। আমাদের মন্দির প্রাঙ্গণে অন্তত ৭০টি দোকান বসেছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হবে। 

কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেছেন, আগামীকাল রাতভর মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে। পরদিন সকালে গঙ্গা স্নান হবে। লাখো পুণ্যার্থীর আগমনের আশা করছি আমরা। বুধবারও গঙ্গা স্নান হবে। উৎসব উপলক্ষে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেছেন, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় ১ লাখ পুণ্যার্থী সমাগমের আশা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। 

ঢাকা/ইমরান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ