বিশ্বজুড়ে প্রায় এক দশকের মধ্যে গত বছর সবচেয়ে বেশি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। এর মধ্যে ইরান, ইরাক এবং সৌদি আরবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ। বিশ্বব্যাপী মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সংখ্যা বাড়াতে প্রধান ভূমিকা রেখেছে এ তিন দেশ। মঙ্গলবার অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

মানবাধিকার সংস্থাটি মৃত্যুদণ্ডবিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী মোট ১ হাজার ৫১৮ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে, যা ২০১৫ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ এবং ২০২৩ সালের তুলনায় ৩২ শতাংশ বেশি। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার দিক থেকে বিশ্বের শীর্ষ দেশ চীন। দেশটির পাশাপাশি উত্তর কোরিয়া ও ভিয়েতনামে কার্যকর হওয়া হাজার হাজার মৃত্যুদণ্ড এ প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

অ্যামনেস্টির মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড বলেছেন, মৃত্যুদণ্ড একটি জঘন্য অপরাধ। আজকের বিশ্বে এটির কোনো স্থান নেই। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সংখ্যা বাড়লেও কার্যকরকারী দেশের সংখ্যা টানা দ্বিতীয় বছরের মতো কমে রেকর্ড সর্বনিম্ন পর্যায় ১৫টিতে নেমেছে।

গত বছর কেবল ইরানে ৬৪ শতাংশ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। ওই বছর কমপক্ষে ৯৭২ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে দেশটি, যা আগের বছরের তুলনায় ১০০ জনের বেশি। খবর বিবিসির।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত নিয়ে ট্রাম্প-পুতিনের মধ্যে কী আলোচনা হলো

মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি ও ইউক্রেন শান্তি আলোচনার বিষয় নিয়ে গতকাল শনিবার প্রায় ৫০ মিনিট ফোনে কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। হোয়াইট হাউস ও ক্রেমলিন—উভয় পক্ষ থেকেই এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

হোয়াইট হাউস থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ট্রাম্প বলেন, ‘পুতিন আমাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে ফোন করেছিলেন, তবে আরও গুরুত্বপূর্ণ ছিল ইরান নিয়ে আলোচনা। দেশটি সম্পর্কে তিনি ভালোই জানেন।’

ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনা করেছি। রাশিয়া-ইউক্রেন নিয়ে তুলনামূলকভাবে কম কথা হয়েছে, তবে সেটা আগামী সপ্তাহে আলোচনা করা হবে।’

বিবৃতিতে ট্রাম্প বলেন, ফোনালাপটি ছিল ‘প্রায় এক ঘণ্টা।’ ট্রাম্প বলেন, ‘তিনি যেমন মনে করেন, আমিও তেমন মনে করি—ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ বন্ধ হওয়া উচিত। আমি তাঁকে বলেছি, তেমনি তাঁর যুদ্ধটিও (ইউক্রেন) শেষ হওয়া দরকার।’

পুতিনের সঙ্গে ফোনে আলাপের বিষয়ে আর বিস্তারিত কিছু জানাননি ট্রাম্প।

পুতিনের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ বলেন, আলোচনার সময় পুতিন ট্রাম্পকে সম্প্রতি ইরান ও ইসরায়েলের নেতাদের সঙ্গে তাঁর বৈঠকের বিষয়ে অবহিত করেন। তিনি ইরানের পারমাণবিক ইস্যুতে পারস্পরিক গ্রহণযোগ্য সমাধান খুঁজে বের করতে রাশিয়ার প্রস্তাব পুনর্ব্যক্ত করেন।

সাংবাদিকদের উশাকভ বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতির বিপজ্জনক উত্তেজনা দুজনের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। তিনি বলেন, ভ্লাদিমির পুতিন ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের নিন্দা জানিয়ে সংকট আরও গভীর হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এ পরিস্থিতির ‘অপ্রত্যাশিত পরিণতি’ গোটা মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

উশাকভ আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের আলোচনার সময় রাশিয়া তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে কিছু পদক্ষেপের প্রস্তাব দিয়েছে, যা পারস্পরিক গ্রহণযোগ্য চুক্তি খুঁজে পেতে সহায়ক হতে পারে। রাশিয়া এই ইস্যুতে মধ্যস্থতার চেষ্টা চালাতে আগ্রহী এবং তাদের মূলনীতি ও অবস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

ট্রাম্প ওই অঞ্চলকে ‘খুবই উদ্বেগজনক’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন বলে জানান উশাকভ। তবে তিনি ইরানে ইসরায়েলের হামলার পক্ষে সাফাই গেয়েছেন।

উশাকভ বলেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি দুই নেতা।

পুতিনের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, ইস্তাম্বুলে রুশ ও ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদলের শান্তি আলোচনার সময় যেসব সমঝোতা হয়েছে, সেগুলোর বাস্তবায়ন, বিশেষ করে যুদ্ধবন্দী বিনিময়ের বিষয়টি ট্রাম্পকে অবহতি করেছেন পুতিন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ