গরম বাড়ার সাথে সাথে শরীরে ক্লান্তিভাব বেড়ে যায়। এর ফলে কমে যায় কাজের ক্ষমতা। অনেক সময় খেতে ইচ্ছে হয় না। অনেকের পেটেও নানা সমস্যা দেখা দেয়। বেশি গরমে হঠাৎ হঠাৎ অনেকের তাপমাত্রা বেড়ে যেতে থাকে।  এটি শরীরের জন্য একদমই ভালো নয়। অনেক সময় পেট ফাঁপা, ত্বকের সংক্রমণ, হজমের সমস্যার কারণে এই সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে পারেন। যেমন-

১.

গরমকালে মসলাদার খাবার, ভাজা খাবার কিংবা জাঙ্ক ফুড, কোমল পানীয়, আইসক্রিম- এই ধরনের খাবার জন্যও শরীর অনেক সময় গরম হতে থাকে। এ কারণে এসব খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলুন।

২. গরমকালে যতটা সম্ভব হালকা খাবার খান। খাদ্য তালিকায় সবুজ শাকসবজি, লেবু, পুদিনা পাতা, লাউ, শশা, তরমুজ, কমলা লেবু, আঙ্গুরের মতো মৌসুমি ফল যোগ করুন। এসব খাবার শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করে।

৩.বেশি গরম পড়লে অনেকেই সরাসরি ফ্রিজের ঠান্ডা পানি খান। এটা ঠিক নয়। এই ঠান্ডা জল খেলে সর্দি-কাশির সমস্যা বাড়বে। এমনকি ঠান্ডা লেগে আপনার শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে পারে। তাই এই সময়ে ঠান্ডা পানি খেতে চাইলে মাটির কলসি ব্যবহার করুন। এতে পানি অনেকক্ষণ ঠান্ডা থাকে।

৪. এই গরমের সময় মসলাদার খাবার, এমনকি বাইরের কোনও স্ট্রিট ফুড খাওয়া ঠিক নয়। এতে আপনার পেটের সমস্যা হতে পারে।

৫. অনেকের হয়তো জানা নেই, মানসিক চাপের কারণেও শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। তীব্র মানসিক চাপের সঙ্গে শরীরের তাপমাত্রা হু হু করে বাড়তে থাকে। এ কারণে গরমকালে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান। মাথায় চাপ কম নিন। শরীরকে ঠান্ডা রাখুন। সেই সঙ্গে ধ্যান করুন। এতে মানসিক চাপ কমবে। শরীরের তাপও কিছুটা হলে কমবে। 
৬. গরমেও স্কুল, কলেজ, অফিসে সকলকেই যেতে হয়। এই তীব্র সূর্যালোক ও তাপপ্রবাহের কারণ ও শরীরে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সময়ে সরাসরি সূর্যের আলো গায়ে লাগতে দেবেন না। ছাতা বা টুপি ব্যবহার করুন। হালকা রঙের পোশাক পরুন। ছায়াযুক্ত স্থানে থাকার চেষ্টা করুন। 

৭. প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। শরীরকে হাইড্রেট রাখার চেষ্টা করুন। এসময়ে অতিরিক্ত পরিশ্রম করা ঠিক নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, সঠিক সময়ে খাওয়া-দাওয়া করলে, শরীর হাইড্রেট থাকলে এবং স্বাস্থ্য বিধি মেনে চললে আপনার শরীর সুস্থ থাকবে। সেই সঙ্গে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কিছুটা হলেও কমবে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গরম সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

সন্তানের প্রতি ছিল তাঁর অগাধ বিশ্বাস

বাবা সন্তানের ওপর ছায়ার মতো স্নেহময় এক উপস্থিতি। নিঃশর্ত ভরসার প্রতীক। সন্তানের ভবিষ্যৎ গঠনের প্রয়োজনে নিজের বর্তমান, এমনকি নিজের স্বপ্নও নীরবে উৎসর্গ করে দিতে পারেন যিনি– আজ তাদের স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানানোর দিন। বাবা দিবস উপলক্ষে সমতা’র বিশেষ আয়োজন। গ্রন্থনা শাহেরীন আরাফাত

আমার জন্ম, বেড়ে ওঠা বৃহত্তর বরিশালে। এখন সেই জায়গাটা পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি পৌরসভার সমুদয়কাঠি গ্রাম। তখনকার সামাজিক পরিসরে আমাদের পরিবারের অবস্থা সাধারণ মানুষের চেয়ে একটু ভালো ছিল। আমার বাবা বিজয় কুমার আইচ তখন পিরোজপুরে কাজ করতেন। তাঁর রেশনের দোকান ছিল। প্রতি শনিবার বাড়ি আসতেন। আমরা বাবার আশায় বসে থাকতাম। এটি ছিল আমাদের জন্য একরকম আশীর্বাদের মতো।
বাবার একটি ব্যবসাও ছিল। এ থেকে মূলত আমাদের পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতা এসেছে। গ্রামের সাধারণ মানুষের চেয়ে সম্ভবত বাবার জ্ঞান বা বোধ উন্নততর ছিল। তাঁর ব্যক্তিত্বের জন্য দশ গ্রামের লোকজন তাঁকে মানত। গ্রামে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঝগড়া লেগেই থাকত। বাবার সঙ্গে কথা না বলে কেউ থানা-পুলিশ করতে যেত না। বাবা সবাইকে খুব বুঝিয়ে বলত– মামলা করলে কে জিতবে, কে হারবে– এটি অনেক পরের কথা। মামলা নিয়ে বরিশাল-পিরোজপুরে দৌড়াদৌড়ি করতে করতে দুই পক্ষই নিঃস্ব হয়ে পড়বে। তারচেয়ে বরং তোমরা নিজেরা মিটমাট করে ফেল।
গ্রামের পণ্ডিতরা তখন তালপাতায় অ-আ-ক-খ শেখাতেন হাত ধরে ধরে। আমার সেটি একদম পছন্দ হতো না। বাবা কী করলেন, তিনি একটা স্লেট ও পেন্সিল দিয়ে ছবি আঁকতে শুরু করলেন। অ-আ-ক-খ দিয়ে যত ছবি আঁকা হয়, তা শেখাতেন। এর মধ্যে আমার যে ছবিটা পছন্দ হতো, সেটি আমি মনের মধ্যে গেঁথে নিতাম। যার ফলে বাবার মাধ্যমে অত্যন্ত আনন্দদায়ক এক শিক্ষা পেয়েছি আমি। 
আমার বাবারা ছিলেন ৪ ভাই। এর মধ্যে ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় দু’জন পশ্চিমবঙ্গে চলে যান। আমার বাবা ও এক কাকা বাড়ি ছেড়ে যাননি। আমরা ছিলাম ৬ ভাই ৩ বোন। কাকাতো ভাই ৪ জন, বোন একজন। মোট ১৪ ভাইবোন। কাকা কম বয়সেই গত হন। বিলাসী জীবন আমাদের ছিল না। তবে গ্রামের মানুষের কাছে আমরা ছিলাম বড়লোক। পরিবারে অনেক সদস্য থাকলেও খাবারের অভাব হতো না কখনোই। এমনকি দুর্ভিক্ষের মতো অবস্থায়ও খাবারের কষ্ট করতে হয়নি। আমাদের একটা গুদামঘর ছিল। সেখানে বাবা পাশের বন্দর কাউখালী থেকে সারা বছরের চাল, ডাল, পাউডার দুধ, চিনি, লবণ, গুড় এনে ড্রামে ভরে রাখতেন। বাইরে যত সংকটই থাকুক না কেন, বছরজুড়ে খাবারের অভাব হতো না। সমস্যা হতো ঝড়ের সময়। উপকূলীয় অঞ্চলে এমন ঝড় মাঝে মাঝেই আসত। কখনও ঘরের চাল উড়ে গেলে আমরা সমস্যায় পড়ে যেতাম। 
অন্যদের সামনে বাবা নিজের অবস্থানের জন্যই বেশি হাসি-তামাশা করতেন না। যখন আমাদের সঙ্গে থাকতেন, তখন তিনি একজন সাধারণ মানুষের মতো হাসি-খুশি থাকতেন। তখনকার বাবাদের আমরা মারধর করতে দেখেছি, এমনকি খড়ম দিয়ে পেটাতে দেখেছি। বাবা আমার গালে জীবনেও একটা চড় মারেনি। কোনো ভাইবোনকেও মারধর করতে দেখিনি। তখন হয়তো আরও এমন বাবা ছিলেন। তবে গ্রামে আমি এমন বাবা আর দেখিনি। সন্তানের প্রতি ছিল তাঁর অগাধ বিশ্বাস। সন্ধ্যার পর বাড়ি ফিরলেও তিনি কখনও জিজ্ঞেস করতেন না, কেন দেরি করে ঘরে ফিরেছি। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইসরায়েলি যুদ্ধযন্ত্রকে থামাইতেই হইবে
  • বন্ধু হওয়ার সুযোগ দিন, শত্রু নয়
  • ৬ কোটির ক্লাবে শাকিব খানের ‘তাণ্ডব’
  • একদিনে আয় ৮১ লাখ, ৬ কোটির ক্লাবে শাকিব খানের তাণ্ডব!
  • ফুসফুসের সুরক্ষায় যা করণীয়
  • লন্ডন বৈঠকের পর এখন বিএনপির দৃষ্টি নির্বাচনে , কী ভাবছে অন্য দলগুলো
  • সন্তানের প্রতি ছিল তাঁর অগাধ বিশ্বাস
  • হামলার আগে ইরানে গোপন অভিযান চালায় মোসাদ