বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সম্পর্কে পরিবর্তন আসছে। ব্রাসেলসের সঙ্গে দীর্ঘদিন উন্নয়ন সহযোগিতামূলক সম্পর্ক ছিল ঢাকার। সেই সম্পর্ককে একধাপ এগিয়ে রাজনৈতিক অংশীদারিত্বে নিতে চাচ্ছে দু’পক্ষই। আর এ উদ্দেশ্যে অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা চুক্তি (পিসিএ) নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে বাংলাদেশ ও ইইউ। আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে চুক্তি সইয়ের বিষয়ে আশাবাদী ঢাকা।

২০০১ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সহযোগিতা চুক্তি সই করে বাংলাদেশ, যা ছিল মূলত উন্নয়ন সহযোগিতাকেন্দ্রিক। এ চুক্তিতে অর্থনীতি, উন্নয়ন, সুশাসন ও মানবাধিকারের মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল। বাংলাদেশের অর্থনীতির পরিবর্তনের কারণে এবার সেই সহযোগিতাকে একধাপ উন্নীত করে রাজনৈতিক অংশীদারিত্বে উত্তরণের লক্ষ্যে কাজ করছে দুই পক্ষ। চুক্তিটি চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে ব্রাসেলসে আজ বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক। বৈঠকে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) নজরুল ইসলাম। অন্যদিকে, ইইউর পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন বৈদেশিক সম্পর্ক বিভাগের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পাওলা পামপোলিনি।

কর্মকর্তাদের মতে, দরকষাকষি শেষ করে আগামী দেড় বছরের মধ্যে চুক্তিটি সইয়ের জন্য চূড়ান্ত হতে পারে। তবে তারা আশা করছেন, ২০২৬ সালের জুন নাগাদ আলোচনা শেষে পিসিএ সইয়ের জন্য চূড়ান্ত হয়ে যাবে। আইনগত বাধ্যতামূলক চুক্তি সইয়ের মাধ্যমে ইইউর সঙ্গে বাংলাদেশের অংশীদারিত্বের বিষয়ে সহযোগিতার একটি রূপরেখা প্রতিষ্ঠা হবে। 

নজরুল ইসলাম বলেন, ইইউর সঙ্গে বাংলাদেশের সহযোগিতার রাজনৈতিক উত্তরণ ঘটবে পিসিএ সইয়ের মাধ্যমে। ফলে রূপরেখা চুক্তিটি সই হলে গণতন্ত্র, সুশাসন, নিরাপত্তা, মানবাধিকারের পাশাপাশি অর্থনীতি, ব্যবসা ও বিনিয়োগের মতো নানা ইস্যুতে সহযোগিতা আরও জোরদার হবে। 

দরকষাকষি শেষ করে আগামী বছরের জুনে চুক্তিটি সইয়ের জন্য চূড়ান্ত করার ব্যাপারে আশাবাদী বাংলাদেশ। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম রাষ্ট্র হিসেবে ইইউর সঙ্গে পিসিএ সই করবে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওয়েবসাইটে প্রচারিত তথ্য অনুযায়ী পিসিএ হলো, আইনগত বাধ্যতামূলক চুক্তি, যা ইইউ এবং একটি অংশীদার দেশের মধ্যে সহযোগিতার ক্ষেত্রে একটি রূপরেখা প্রতিষ্ঠা করে। অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা চুক্তির মাধ্যমে ইইউ অংশীদার দেশগুলোতে রাজনৈতিক সংলাপ, শান্তি ও নিরাপত্তা, সুশাসন ও মানবাধিকার, বাণিজ্য, অর্থনীতি, আর্থিক সহযোগিতাসহ বিস্তৃত ক্ষেত্রগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে। অর্থাৎ, এই সহযোগিতার পরিধিতে রয়েছে গণতান্ত্রিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নকে সমর্থন করা। একটি শক্তিশালী মুক্ত বাজার অর্থনীতি এবং ব্যবসা ও বিদেশি বিনিয়োগের জন্য একটি সহায়ক পরিবেশের বিকাশ নিশ্চিত করা। নানা ক্ষেত্রে বাণিজ্য সম্পর্ক এবং সহযোগিতা জোরদার করা।

চুক্তির আওতায় বাণিজ্য, বিনিয়োগ, অর্থনৈতিক সহযোগিতা, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, সুশাসন, শ্রম অধিকার, সংযুক্তি, প্রতিরক্ষা, অন্তর্জাল নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলা, জ্বালানি, মৎস্য, দক্ষ অভিবাসন, ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরে সহযোগিতা, কৃষিসহ প্রায় ৩৫টি বিষয় রয়েছে।  

পিসিএ নিয়ে গত বছরের নভেম্বরে ঢাকায় প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। এবার মূল আলোচনা শুরু হবে। ইইউর সঙ্গে বাংলাদেশের সহযোগিতা চুক্তি ভবিষ্যতে প্রতিস্থাপন হবে পিসিএ চুক্তির মাধ্যমে। বাংলাদেশ ও ইইউ সম্পর্ক একধাপ এগিয় নিতে ২০২৩ সালের অক্টোবরে পিসিএ সইয়ের বিষয়ে আলোচনা শুরুর সিদ্ধান্ত নেয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সহয গ ত র র জন ত ক র জন য সইয় র বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

‘ইসরায়েল হামলা বন্ধ করলে ইরানও বন্ধ করবে’

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি জানিয়েছেন, যদি তার দেশের উপর ইসরায়েলি আক্রমণ বন্ধ হয়, তাহলে ‘আমাদের প্রতিক্রিয়াও বন্ধ হবে।’

রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেছেন।

শুক্রবার ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে এটি আরাঘচির প্রথম প্রকাশ্য উপস্থিতি।

আরাঘচি বলেন, “যদি আগ্রাসন বন্ধ হয়, তাহলে আমাদের প্রতিক্রিয়াও বন্ধ হবে।”

ইসরায়েলের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

আরাঘচি জানিয়েছেন, ইরান চায় না এই সংঘাত প্রতিবেশী দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়ুক।

তিনি বলেন, “পারস্য উপসাগরে সংঘাত টেনে আনা একটি কৌশলগত ভুল এবং এর লক্ষ্য হল যুদ্ধকে ইরানের ভূখণ্ডের বাইরে টেনে আনা।

তিনি ইসরায়েলকে চলমান ইরান-মার্কিন পারমাণবিক আলোচনাকে নষ্ট করার চেষ্টা করার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন।

ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, “মার্কিন সবুজ সংকেত এবং সমর্থন ছাড়া ইসরায়েলের আক্রমণ কখনো ঘটত না।”

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ