পরিবারকল্যাণ পরিদর্শিকার ১ হাজার ৮০টি পদে নতুন করে মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে আইন অনুযায়ী প্রশিক্ষণার্থী মনোনয়নপ্রক্রিয়া তিন মাসের মধ্যে শেষ করতে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছেন, তা বহাল রয়েছে। তাই এখন হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বাধ্য বলে জানিয়েছেন রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী।

এর আগে পৃথক চারটি রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব (বর্তমানে আপিল বিভাগের বিচারপতি) ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশসহ ওই রায় দেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর তা স্থগিত চেয়ে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করা হয়। লিভ টু আপিলটি গত ২৫ মার্চ আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন শুনানি নিয়ে চেম্বার আদালত ‘নো অর্ডার’ দেন। ফলে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকে।

পাঁচ বছর আগে ২০২০ সালের ১০ মার্চ পরিবারকল্যাণ পরিদর্শিকার ১ হাজার ৮০টি পদে নিয়োগের জন্য ওই বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর।

হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়, ২০২০ সালের ১০ মার্চের সার্কুলার (বিজ্ঞপ্তি) অনুসারে রিট আবেদনকারীসহ ইতিমধ্যে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের থেকে আইন অনুসারে নতুন করে মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে তিন মাসের মধ্যে মনোনয়নপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের (স্বাস্থ্যসচিব ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক) নির্দেশ দেওয়া হলো।

রিট আবেদনকারী পক্ষের তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালের ১১ মে লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৭ হাজার ৬২১ প্রার্থী ২০২৩ সালের ২৫ মে থেকে একই বছরের ১৮ জুন পর্যন্ত মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন। নিয়োগের জন্য লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর নির্বাচিতদের ১৮ মাসের প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার পর ওই পদে নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে। মৌখিক পরীক্ষা শেষে নিয়োগের চূড়ান্ত ফলাফলের জন্য যখন প্রার্থীরা অপেক্ষা করছিলেন—এ অবস্থায় পরিবারকল্যাণ পরিদর্শিকা প্রশিক্ষণার্থী নিয়োগে মনোনয়নপ্রক্রিয়া বাতিল করে গত বছরের ১৪ জানুয়ারি বিজ্ঞপ্তি দেয় পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর। এই বিজ্ঞপ্তির বৈধতা নিয়ে পৃথক চারটি রিট করেন কয়েকজন প্রার্থী। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে হাইকোর্ট রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে রুল নিষ্পত্তি করে পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশসহ ওই রায় দেন হাইকোর্ট।

পরিবারকল্যাণ পরিদর্শিকার ভূমিকা সমাজে গুরুত্বপূর্ণ

হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়, ‘অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে ২০২০ সালের ১০ মার্চ থেকে রিট আবেদনকারীসহ অনেক প্রার্থীর সরকারি চাকরিতে নিয়োগের বয়সসীমা ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। অন্যদিকে যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা নির্দিষ্টভাবে শিশুর জন্মের সময় মা ও শিশুর মৃত্যু রোধ নিশ্চিতে পরিবারকল্যাণ পরিদর্শিকার ভূমিকা সমাজে গুরুত্বপূর্ণ। তাই সংশ্লিষ্ট পদগুলোতে (পরিবারকল্যাণ পরিদর্শিকা) যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আবশ্যিক দায়িত্ব। দেখা যাচ্ছে, ২০২০ সালের ১০ মার্চের সার্কুলার অনুসারে পরিবারকল্যাণ পরিদর্শিকা পদে নিয়োগপক্রিয়ার উদ্যোগ ছাড়া বর্তমানে আর কোনো নিয়োগপ্রক্রিয়া নেই। এ অবস্থায় পরিবারকল্যাণ পরিদর্শিকার ১ হাজার ৮০টি শূন্য পদের জন্য লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে মনোনয়নপ্রক্রিয়া কেন শেষ করা হবে না—এর কারণ খুঁজে পাইনি।’

হাইকোর্টে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম, আইনজীবী মোহাম্মদ সিদ্দিক উল্লাহ মিয়া, জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ও সৈয়দা নাসরিন শুনানিতে ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান।

রিট আবেদনকারীদের অন্যতম আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন আজ বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, মৌখিক পরীক্ষা হলেও ফলাফল প্রকাশ না করে পরিবারকল্যাণ পরিদর্শিকা মনোনয়নপ্রক্রিয়া বাতিল করে বিজ্ঞপ্তি দেয় পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর, যে কারণে রিট করা হয়। হাইকোর্ট নতুন করে মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে তিন মাসের মধ্যে পরিবারকল্যাণ পরিদর্শিকা মনোনয়নপ্রক্রিয়া শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। এর বিরুদ্ধে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পক্ষে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়। আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত ‘নো অর্ডার’ দিয়েছেন। ফলে এখন নতুন করে মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে তিন মাসের মধ্যে মনোনয়নপ্রক্রিয়া শেষ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বাধ্য। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তিন মাসের মধ্যে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে—এটিই প্রত্যাশা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল খ ত পর ক ষ ম খ ক পর ক ষ আপ ল ব ভ গ য় পর ব র শ ষ করত আইনজ ব শ ষ কর অন স র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতীয় উড়োজাহাজের ভয়াবহ ১০টি দুর্ঘটনা

কোঝিকোড় দুর্ঘটনা (২০২০)

২০২০ সালের ৭ আগস্ট এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের একটি ফ্লাইট কেরালার কোঝিকোড় বিমানবন্দরে অবতরণের সময় বৃষ্টিভেজা রানওয়েতে ছিটকে পড়ে এবং দুই ভাগ হয়ে যায়। এতে ২০জন নিহত হন, আহত হন বহু যাত্রী। খারাপ আবহাওয়া, কম দৃশ্যমানতা এবং টেবলটপ রানওয়ে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ছিল।

ম্যাঙ্গালুরু দুর্ঘটনা (২০১০)

২০১০ সালের ২২ মে দুবাই থেকে আসা এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের ফ্লাইট ৮১২ ম্যাঙ্গালুরুতে অবতরণের সময় রানওয়ে ছাড়িয়ে একটি খাদে পড়ে যায়। বিমানে থাকা ১৬৬ জনের মধ্যে ১৫৮ জন নিহত হন। রানওয়েটি ‘টেবলটপ’ হওয়ায় দুর্ঘটনার মাত্রা ভয়াবহ হয়। টেবলটপ রানওয়ে হলো এমন একটি বিমানবন্দর রানওয়ে, যা একটি পাহাড় বা উঁচু মালভূমির ওপর অবস্থিত এবং চারপাশে গভীর খাদ বা ঢাল থাকে।

পাটনা দুর্ঘটনা (২০০০)

২০০০ সালের ১৭ জুলাই কলকাতা থেকে দিল্লিগামী অ্যালায়েন্স এয়ারের একটি ফ্লাইট পাটনার একটি আবাসিক এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। এতে বিমানের ৫৫ যাত্রী ও ভূমিতে থাকা ৫ জনসহ মোট ৬০ জন নিহত হন। অবতরণের সময় পাইলট নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলার কারণেই দুর্ঘটনাটি ঘটে।

উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় আহত একজনকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ১২ জুন, ভারত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন
  • সরকারি হিসাবের চেয়ে করোনায় মৃত্যু ছিল বেশি
  • নওগাঁর ছয় আসনে ঈদের ছুটিতে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের গণসংযোগ
  • দণ্ডাদেশ বহালের রায়ের বিরুদ্ধে ১০ আসামির আপিল ও লিভ টু আপিল
  • কুষ্টিয়ায় করোনা শনাক্তের পিসিআর ল্যাবে চুরি, খোয়া গেছে ৪০ লাখ টাকার যন্ত্রাংশ
  • যে ‘ধর্মীয় অনুপ্রেরণায়’ ইরানে এই হামলা চালাল ইসরায়েল
  • কুষ্টিয়ার একমাত্র পিসিআর ল্যাবের সব যন্ত্রাংশ চুরি
  • দক্ষিণ ভারতের নিষ্পেষিত মুসলিম নারীদের কণ্ঠস্বর
  • ভারতীয় উড়োজাহাজের ভয়াবহ ১০টি দুর্ঘটনা