জনসমক্ষে ও রাজনৈতিক নানা অনুষ্ঠানে উপস্থিতি কমিয়ে দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা এবং বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে গুঞ্জন বন্ধ করতে মুখ খুলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ফার্স্টলেডি মিশেল ওবামা।

মিশেল বলেছেন, তিনি নিজের ভালো–মন্দের দিকে মনোযোগ দিচ্ছেন এবং নিজের জীবনের ওপর নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে সচেতনভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।

সম্প্রতি মার্কিন অভিনেত্রী সোফিয়া বুশের পডকাস্ট দ্য ওয়ার্ক ইন প্রোগ্রেসে হাজির হয়েছিলেন মিশেল ওবামা। সেখানে কথা বলার সময় তিনি বারাক ওবামার সঙ্গে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদের গুঞ্জন উড়িয়ে দেন।

আট বছর আগে হোয়াইট হাউস ছেড়ে যাওয়ার পর তাঁর জীবনে যেসব পরিবর্তন এসেছে, সেগুলো নিয়েও মিশেল ওবামা খোলাখুলি কথা বলেছেন।

ওবামা দম্পতির দুই মেয়ে এখন প্রাপ্তবয়স্ক। সাবেক এই ফার্স্টলেডি বলেছেন, এখন তিনি নিজের অগ্রাধিকার পুনর্মূল্যায়ন করার স্বাধীনতা পেয়েছেন এবং নিজের ভালো থাকার ওপর মনোযোগ দিতে পারছেন।

গত জানুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় অভিষেক অনুষ্ঠান এবং তার আগে একই মাসে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না মিশেল ওবামা। এরপরই বারাক ওবামার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে।

সবচেয়ে বেশি যে গুঞ্জন শোনা যায়, সেটি হলো ওবামা দম্পতির বিচ্ছেদ হতে চলেছে।

সোফিয়া বুশের পডকাস্টে মিশেল ওবামার আলাপচারিতা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে সিএনএন।

মিশেল বলেন, ‘বছর কয়েক আগেই আমার এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু আমি নিজেকে সে সময় অতটা স্বাধীনতা দিতে পারিনি। আমি আমার সন্তানদের তাদের নিজেদের মতো জীবনযাপন করার সুযোগ দিয়েছি। তারপরও হয়তো কেন আমি কিছু করতে পারছি না, সেটার অজুহাত হিসেবে আমি তাদের জীবনের কথা বলেছি।’

আরও পড়ুনপ্রেসিডেন্ট থাকাকালে মিশেলের সঙ্গে দাম্পত্য জীবনে প্রভাব পড়েছিল: বারাক ওবামা০৫ এপ্রিল ২০২৫

কেন তিনি বড় বড় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকছেন না, সেটার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে মিশেল বলেন, ‘নিজের যত্ন নিতে আমি ইচ্ছা করে এসব সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাকে আমার নিজস্ব দিনপঞ্জির দিকে তাকাতে হয়, এ বছরই আমি এটা তৈরি করেছি। আমার জন্য সত্যিই একটা বড় উদাহরণ ছিল, আমি এমন কিছু নিয়ে ভেবেছি, যেটা আমার হয়তো করা উচিত ছিল। আমি নাম বলছি না এবং আমার জন্য যেটা সবচেয়ে ভালো, আমি সেটা করব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

মিশেল স্বীকার করেন, অনেক নারী নিজেকে সবার আগে রাখতে অস্বস্তিতে ভোগেন।

সাবেক এই ফার্স্টলেডি বলেন, ‘একজন নারী হিসেবে আমরা এটাই করি। আমার মনে হয়, আমরা হতাশাগ্রস্ত মানুষের মতো সংগ্রাম করে যাই।’

মিশেল বলেন, জনসমক্ষে নানা অনুষ্ঠানে হাজির না হয়ে তিনি এখন সেই সব কাজ করছেন, যা তাঁর হৃদয়ের কাছাকাছি। তবে তিনি এখনো বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিচ্ছেন, অনেক প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত আছেন এবং মেয়েদের লেখাপড়া নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।

আরও পড়ুন৯ জানুয়ারি রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠিত হবে জিমি কার্টারের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া৩১ ডিসেম্বর ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন ম শ ল বল গ ঞ জন

এছাড়াও পড়ুন:

মার্কিন পণ্যের শুল্কে ছাড় দিচ্ছে চীন, গোপনে তালিকা করছে

বাণিজ্যযুদ্ধের প্রভাব কমানোর চেষ্টা করছে চীন। মার্কিন পণ্যে যে ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে তারা, সেই শুল্ক থেকে কিছু কিছু মার্কিন পণ্যে ছাড় দিচ্ছে তারা। ইতিমধ্যে তার একটি তালিকাও করা হয়েছে। এমনকি কোম্পানিগুলোকে সে বিষয়ে তারা অবগতও করেছে। বিষয়টির সঙ্গে সম্পৃক্ত দুটি সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

ইতিমধ্যে চীন কিছু পণ্যে শুল্কছাড় দিয়েছে, যেমন নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ, মাইক্রোচিপস, বিমানের ইঞ্জিন। সেই সঙ্গে কোম্পানিগুলোর কাছে তারা জানতে চেয়েছে, কোন কোন পণ্যে ছাড় দেওয়া প্রয়োজন। যদিও বিষয়টি নিয়ে আগে সংবাদ প্রতিবেদন করা হয়নি।

অনেকটা সন্তর্পণে এ কাজ করছে চীন। এতে সুবিধা হলো, তারা একদিকে জনসমক্ষে যুদ্ধংদেহী অবস্থান বজায় রাখছে, অন্যদিকে সবার অজান্তে ছাড় দিচ্ছে।

তবে এ তালিকায় ঠিক কী পরিমাণ পণ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, তা পরিষ্কার নয় বা এখন পর্যন্ত তা জানা যায়নি। কর্তৃপক্ষও বিষয়টি জনসমক্ষে প্রকাশ করেনি। সেই সূত্র দুটিও নিজেদের পরিচয় প্রকাশ করতে চাননি। কারণ, এ তথ্য এখনো সরকারিভাবে জানানো হয়নি।

চীন সরকার গোপনে কোম্পানিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানিয়ে দিচ্ছে, কোন কোন পণ্যে এই ছাড় দেওয়া হয়েছে। মার্কিন এক ওষুধ কোম্পানির একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এই কোম্পানি চীনের বাজারে ওষুধ বিক্রি করে।

চীনের সাংহাই প্রদেশের সরকার সেই কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করে গত সোমবার। সূত্র জানিয়েছে, সেদিনই তারা ছাড়ের তালিকা সম্পর্কে তাদের অবগত করে। ওষুধ তৈরিতে তাদের মার্কিন প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করতে হয়। সে জন্য তারা আগে থেকেই ছাড়ের বিষয়ে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করছিল।

সেই সূত্র আরও জানায়, ওষুধ তৈরিতে এখনো তাদের মার্কিন প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করতে হয়। আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, আরও বিভিন্ন কোম্পানিকে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের আমদানি করা পণ্যে শুল্কছাড়ের প্রয়োজন আছে কি না।

তবে এই ছাড়ের তালিকা ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে। এর আগে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, চীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা ইথেনে ছাড় দিয়েছে। ইথেনের একমাত্র সরবরাহকারী যুক্তরাষ্ট্র। যে কারণে ইথেন প্রক্রিয়াজতাকারী কোম্পানিগুলো ছাড় চেয়েছে।

মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, শিগগিরই চীনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি হবে। তবে এই চুক্তিতে ন্যায্যতা থাকবে।

আরও দুটি সূত্র জানিয়েছে, এই বাণিজ্যযুদ্ধের প্রভাব পরিমাপ করতে চীন বিভিন্ন কোম্পানির ওপর জরিপ করছে। দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় কর্তৃপক্ষ এক বিদেশি ব্যবসায়িক লবিকে বলেছে, শুল্কের কারণে বড় ধরনের কী সমস্যা হতে পারে, তা যেন সরকারকে জানানো হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মার্কিন পণ্যের শুল্কে ছাড় দিচ্ছে চীন, গোপনে তালিকা করছে