ভালুকের পা অবশ, অসুস্থ মায়া হরিণ
Published: 12th, April 2025 GMT
খাঁচার ভেতরে এক জোড়া কালো ভালুক। এর মধ্যে একটি ভালুকের পেছনের বাঁ পা অবশ হয়ে পড়েছে। ওই পায়ের সব লোম উঠে সৃষ্টি হয়েছে ক্ষত। স্ত্রী ভালুকটিও সুস্থ নেই। ঝিমিয়ে কাটে দিন। বান্দরবানের মেঘলা পর্যটনকেন্দ্রের ‘মিনি চিড়িয়াখানায়’ রয়েছে এই দুটি ভালুক। কেবল ভালুক নয়, পর্যটনকেন্দ্রটিতে থাকা ১৩টি মায়া হরিণের মধ্যে ৩টি অসুস্থ হয়ে পড়ে রয়েছে।
বন বিভাগ এসব বন্য প্রাণী তাদের কাছে হস্তান্তরের জন্য একাধিকবার চিঠি দিয়েছে পর্যটনকেন্দ্রটির পরিচালনার দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসনকে। এত দিন রাজি না হলেও সম্প্রতি জেলা প্রশাসন মেঘলা পর্যটনকেন্দ্রের মিনি চিড়িয়াখানায় থাকা ২৩টি বন্য প্রাণী বন বিভাগকে হস্তান্তর করতে সম্মত হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের লোকজন এসে প্রাণীগুলো নিয়ে যাবে বলে গত বৃহস্পতিবার বন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
বান্দরবান জেলা শহরে প্রবেশমুখে মেঘলা পর্যটনকেন্দ্র। সম্প্রতি সেখানে গিয়ে দেখা যায়, একটি ছোট ঘরে ভালুক দুটি রাখা। পুরুষ ভালুকটি চিত হয়ে মেঝেতে পড়ে রয়েছে। মেয়ে ভালুকটিও চুপচাপ বসে রয়েছে খাঁচার কোনায়। ভালুকের ঘরের পাশে মায়া হরিণের খাঁচা। সেখানে চারদিকে লোহার বেষ্টনী দিয়ে ছোট–বড় ১৩টি হরিণ রাখা। সব কটি হরিণ পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। চলাচল ও আচার-আচরণে স্বভাবগত চাঞ্চল্য নেই। হরিণের খাঁচার ওপরে পৃথক খাঁচায় ছয়টি বানর রয়েছে, কিন্তু বাঁদরামি নেই তাদের। সব কটি বানর শ্রান্ত-ক্লান্ত।
আশপাশের দোকানিরা জানান, আগে চিত্রা হরিণ, অজগরসহ আরও কয়েক প্রজাতির বন্য প্রাণী ছিল। এখন চিত্রা হরিণ নেই, শুধু খাঁচাটি রয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে মায়া হরিণ ছিল ১৬টি। গত মাসে তিনটি মারা যাওয়ায় এখন রয়েছে ১৩টি। সেখান থেকেও রোগাক্রান্ত হরিণ তিনটি যেকোনো সময় মারা যেতে পারে। অজগরেরও মৃত্যু হয়েছে।
পর্যটনকেন্দ্রটি পরিচালনা করে জেলা প্রশাসন। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক মিনি চিড়িয়াখানার প্রাণীগুলো বন বিভাগে হস্তান্তরের জন্য জেলা প্রশাসককে একটি চিঠি লেখেন। চিঠিতে বলা হয়, মিনি চিড়িয়াখানায় রাখা পাঁচ প্রজাতির ২৬টি প্রাণী বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে তফসিলভুক্ত। লাইসেন্স বা পারমিট ছাড়া তফসিলভুক্ত বন্য প্রাণী দখলে রাখা, শিকার ও বেচাকেনা আইনের পরিপন্থী এবং তাদের জব্দকরণের বিধান আছে।
বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, এসব বন্য প্রাণী হস্তান্তরের জন্য চিঠিটি একবার নয়, আগেও কয়েকবার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু জেলা প্রশাসন প্রাণীগুলো হস্তান্তরে রাজি হচ্ছিল না। যেভাবে রাখা হয়েছে, তা কোনোমতেই বন্য প্রাণীর বেঁচে থাকার পরিবেশ নয়। এ জন্য প্রাণীগুলো অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
পায়ের লোম উঠে গেছে পঙ্গু ভালুকটির.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বন য প র ণ
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে পাথরবাহী ট্রাক্টরচাপায় পর্যটক নিহত, আহত ৫
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রে যাওয়ার পথে পাথরবাহী ট্রাক্টরচাপায় জিয়াউল হক (৬৫) নামে এক পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৫ জন।
শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে সিলেট-ভোলাগঞ্জ মহাসড়কের ভোলাগঞ্জ পয়েন্টে এই দুর্ঘটনা ঘটে। আহতদের উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে, একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আরো পড়ুন:
চট্টগ্রামে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গেল পুলিশবাহী বাস, আহত ২০
খাগড়াছড়িতে ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সিলেট থেকে পাঁচজন পর্যটক নিয়ে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা সাদাপাথর পর্যটন কেন্দ্রে যাচ্ছিল। ভোলাগঞ্জ পয়েন্টে আসলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পাথরবাহী ট্রাক্টর অটোরিকশাকে চাপা দেয়। এতে অটোরিকশার চালকসহ ৬ জন আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জিয়াউল হককে মৃত ঘোষণা করেন। পরে আহতদের সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি রতন শেখ বলেন, ‘‘ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রে যাওয়ার পথে পাথরবাহী ট্রাক্টরচাপায় এক পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।’’
ঢাকা/নূর/রাজীব