বাড়ির সামনেই বিএনপি নেতাকে কোপাল দুর্বৃত্তরা
Published: 14th, April 2025 GMT
পালাগানের আসর থেকে ফেরার সময় চাঁদপুরের মতলব উত্তরে বাড়ির সামনে দুর্বৃত্তের হামলার শিকার হয়েছেন এক বিএনপি নেতা। শনিবার মধ্যরাতে উপজেলার এখলাছপুরে এ ঘটনা ঘটে। চাইনিজ কুড়ালের কোপে আহত হয়েছেন একই ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন বেপারী (৫২)। তিনি আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঘটনার সময় কবির বেপারীর সঙ্গে ছিলেন প্রতিবেশী হেলাল প্রধানের ছেলে রাজীব প্রধান। রাজীবের ভাষ্য, ‘আমি আর কবির কাকা একসঙ্গে গজরা এলাকায় বৈশাখী পালাগানের অনুষ্ঠানে যাই। বাড়ি ফিরতে রাত আড়াইটার মতো বেজে যায়। বাড়িতে ঢোকার সময় ১৫-২০ জন লোক চায়নিজ কুড়াল দিয়ে কবির কাকাকে এলোপাতাড়ি কোপায়। রড আর লাঠি দিয়াও পিটিয়েছে।’
তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। হামলাকারীদের প্রত্যেককেই চেনেন দাবি করে রাজীব বলেন, ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেনের নেতৃত্বে এই হামলা হয়েছে।
এলাকাবাসী এ সময় মুখোশধারী এক হামলাকারীকে আটক করে। মুখোশ খোলার পর ওই ব্যক্তিকে পশ্চিম এখলাছপুরের আর্শাদ বেপারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রতিবেশী বলেন, হামলাকারীদের হাতে ধারালো অস্ত্র থাকায় তারা এগিয়ে যেতে সাহস পাননি।
কবির হোসেন বেপারীর স্ত্রী বিউটি আক্তারের ভাষ্য, ‘আমার স্বামীর ডাক চিৎকারে গিয়া দেহি, বিল্লাল প্রধান আর রাসেল মল্লিকে তাঁরে মারতাছে। স্বামীরে বাঁচাইতে ওগো হাতে-পায়ে ধরলে রাসেল মল্লিক আমার ওপরেও হাত তোলে। বাকি সবাই দৌড়াইয়া পালাইয়া যায়। ওরা আমার স্বামীরে জানে মাইরা ফালাইতে চাইছিল।’
এদিকে এ হামলার প্রতিবাদে স্থানীয় জনগণ রোববার দুপুরে এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানায়। মতলব উত্তর থানার ওসি রবিউল হক বলেন, সংবাদ পেয়ে রাতেই তিনি ঘটনাস্থলে যান। জড়িত একজন আটক আছে। স্থানীয় একটি পুকুর দখলকে কেন্দ্র করে হামলার হয়েছে বলে তাঁর ধারণা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম রধর
এছাড়াও পড়ুন:
বাবা মারা গেছেন ৭ দিন আগে, আজ বাসচাপায় প্রাণ গেল ছেলেরও
মাত্র সাত দিন আগে বাবা মারা গেছেন। আজ দুর্ঘটনায় মারা গেলেন ছেলে। চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় ঢাকাগামী যাত্রীবাহী বাসের চাপায় মোটরসাইকেলচালক মো. মুরাদ (৩৫) ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন।
আজ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার বরদিয়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত মুরাদ লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার মধুপুর গ্রামের বাসিন্দা সদ্যপ্রয়াত মো. শাহজাহানের ছেলে। তিনি ঢাকার উচ্চ আদালতে কর্মচারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে ঢাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।
পরিবার, পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঈদের ছুটিতে মুরাদের স্ত্রী ও সন্তানেরা গ্রামের বাড়িতে আসেন। মুরাদ তখন ঢাকায় ছিলেন। ছুটি শেষে আজ সকালে মোটরসাইকেল চালিয়ে স্ত্রী-সন্তানদের আনতে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন তিনি। দুপুর ১২টার দিকে বরদিয়া এলাকায় পৌঁছালে চাঁদপুর থেকে ঢাকাগামী ‘জৈনপুর এক্সপ্রেস’ নামের একটি যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে তাঁর মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় মুরাদ বাসের নিচে চাপা পড়েন। মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ থেঁতলে যায়। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত মুরাদের চাচাতো ভাই মোবারক হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রায় এক সপ্তাহ আগে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর (মুরাদ) বাবা মারা যান। সপ্তাহ না যেতেই আজ দুর্ঘটনায় মারা গেল মুরাদ। এত অল্প সময়ের মধ্যে পরিবারের দুজন সদস্যের মৃত্যু মেনে নেওয়া কঠিন। এ ঘটনায় পুরো পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্ত্রী-সন্তানদের আর ঢাকায় নেওয়া হলো না তাঁর। এর আগেই সব শেষ।’
মুরাদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালেহ আহাম্মদ প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাস্থল থেকে ওই বাসটি আটক করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ বা মামলা হয়নি। নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়েছে।