পালাগানের আসর থেকে ফেরার সময় চাঁদপুরের মতলব উত্তরে বাড়ির সামনে দুর্বৃত্তের হামলার শিকার হয়েছেন এক বিএনপি নেতা। শনিবার মধ্যরাতে উপজেলার এখলাছপুরে এ ঘটনা ঘটে। চাইনিজ কুড়ালের কোপে আহত হয়েছেন একই ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন বেপারী (৫২)। তিনি আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। 

ঘটনার সময় কবির বেপারীর সঙ্গে ছিলেন প্রতিবেশী হেলাল প্রধানের ছেলে রাজীব প্রধান। রাজীবের ভাষ্য, ‘আমি আর কবির কাকা একসঙ্গে গজরা এলাকায় বৈশাখী পালাগানের অনুষ্ঠানে যাই। বাড়ি ফিরতে রাত আড়াইটার মতো বেজে যায়। বাড়িতে ঢোকার সময় ১৫-২০ জন লোক চায়নিজ কুড়াল দিয়ে কবির কাকাকে এলোপাতাড়ি কোপায়। রড আর লাঠি দিয়াও পিটিয়েছে।’

তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। হামলাকারীদের প্রত্যেককেই চেনেন দাবি করে রাজীব বলেন, ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেনের নেতৃত্বে এই হামলা হয়েছে।

এলাকাবাসী এ সময় মুখোশধারী এক হামলাকারীকে আটক করে। মুখোশ খোলার পর ওই ব্যক্তিকে পশ্চিম এখলাছপুরের আর্শাদ বেপারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রতিবেশী বলেন, হামলাকারীদের হাতে ধারালো অস্ত্র থাকায় তারা এগিয়ে যেতে সাহস পাননি।

কবির হোসেন বেপারীর স্ত্রী বিউটি আক্তারের ভাষ্য, ‘আমার স্বামীর ডাক চিৎকারে গিয়া দেহি, বিল্লাল প্রধান আর রাসেল মল্লিকে তাঁরে মারতাছে। স্বামীরে বাঁচাইতে ওগো হাতে-পায়ে ধরলে রাসেল মল্লিক আমার ওপরেও হাত তোলে। বাকি সবাই দৌড়াইয়া পালাইয়া যায়। ওরা আমার স্বামীরে জানে মাইরা ফালাইতে চাইছিল।’
এদিকে এ হামলার প্রতিবাদে স্থানীয় জনগণ রোববার দুপুরে এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানায়। মতলব উত্তর থানার ওসি রবিউল হক বলেন, সংবাদ পেয়ে রাতেই তিনি ঘটনাস্থলে যান। জড়িত একজন আটক আছে। স্থানীয় একটি পুকুর দখলকে কেন্দ্র করে হামলার হয়েছে বলে তাঁর ধারণা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম রধর

এছাড়াও পড়ুন:

ঋণের কিস্তি পরিশোধ নিয়ে বিরোধ, চাচার মারধরে ভাতিজার মৃত্যুর অভিযোগ

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ব্রাহ্মণচক গ্রামে চাচার কিল–ঘুষি ও মারধরে ভাতিজার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ বুধবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত মাইনউদ্দিন সরকার (৪৫) উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণচক গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ওই গ্রামের রুহুল আমিন সরকারের ছেলে। তিনি পেশায় বিদ্যুৎমিস্ত্রি ছিলেন। অভিযুক্ত মো. ফারুক (৫০) তাঁর চাচা। ঘটনার পর পুলিশ ফারুকের স্ত্রী মাফিয়া বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।

পুলিশ ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) থেকে যৌথভাবে নেওয়া ঋণের কিস্তি পরিশোধ করা নিয়ে চাচা–ভাতিজার মধ্যে বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটে।

একই সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় একটি এনজিও থেকে কয়েক মাস আগে ফারুক ও মাইনউদ্দিন যৌথভাবে এক লাখ টাকা ঋণ নেন। ঋণের কিস্তি সমানভাবে পরিশোধের সিদ্ধান্ত হয়। চলতি মাসের কিস্তির ১৫ হাজার টাকা ফারুকের মাধ্যমে জমা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মাইনউদ্দিন নিজেই ওই টাকা জমা দেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়েছিল। আগেও তাঁদের মধ্যে নানা বিষয় নিয়ে বিরোধ ছিল। আজ সকালে কিস্তি পরিশোধ নিয়ে দুজনের মধ্যে আবারও কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ফারুক ভাতিজা মাইনউদ্দিনের মাথা, মুখ ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে কিল–ঘুষি মারেন। এতে মাইনউদ্দিন মাটিতে লুটিয়ে পড়ে অচেতন হয়ে যান। আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে ফারুক পালিয়ে যান।

পরে গুরুতর আহত অবস্থায় মাইনউদ্দিনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। সকাল ১০টার দিকে পুলিশ তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

নিহত মাইনউদ্দিনের চাচাতো ভাই মোহাম্মদ লিয়াকত হোসেন বলেন, মো. ফারুকের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা আছে। তিনি নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। ঋণের কিস্তির টাকা পরিশোধ ও পূর্বশত্রুতার জেরে পরিকল্পিতভাবে কিল–ঘুষি মেরে ও মারধর করে তাঁর চাচাতো ভাইকে খুন করেন ফারুক।

অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্যের জন্য ফারুকের মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে, তা বন্ধ পাওয়া যায়।

মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল হক বলেন, ওই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তির স্ত্রী মাফিয়া বেগমকে আটক করা হয়েছে। এটি হত্যাকাণ্ড বলেই প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। ঋণের কিস্তির টাকা পরিশোধ বা জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটকের চেষ্টা চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঋণের কিস্তি পরিশোধ নিয়ে বিরোধ, চাচার মারধরে ভাতিজার মৃত্যুর অভিযোগ