ভারতে আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িত সন্দেহভাজন নীরব মোদির সহযোগী চোকসি বেলজিয়ামে গ্রেপ্তার
Published: 14th, April 2025 GMT
ভারতের পলাতক জুয়েলারি ব্যবসায়ী মেহুল চোকসি বেলজিয়ামে গ্রেপ্তার হয়েছেন। ভারতের অন্যতম বড় ব্যাংক জালিয়াতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার তথ্য প্রকাশ্যে আসার সাত বছর পর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হলো। আজ সোমবার তাঁর আইনজীবী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, তিনি মুক্তি পেতে আদালতে আপিল করবেন।
ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) একটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, ভারত সরকার চোকসিকে গ্রেপ্তারের আগেই তাঁকে প্রত্যর্পণের জন্য বেলজিয়াম সরকারের কাছে অনুরোধ পাঠিয়েছিল।
সম্পদের দিক থেকে ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যাংক হচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক (পিএনবি)। ২০১৮ সালে এই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, মুম্বাইয়ের একটি শাখা থেকে প্রতারণার মাধ্যমে চোকসি ১৮০ কোটি মার্কিন ডলার হাতিয়ে নিয়েছেন বলে তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে।
ব্যাংকটি ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার কাছে একটি ফৌজদারি অভিযোগ জমা দিয়েছে। অভিযোগে ধনকুবের জুয়েলারি ব্যবসায়ী নীরব মোদি এবং তাঁর চাচা ও গীতাঞ্জলি জেমসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেহুল চোকসিসহ বেশ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে বলা হয়, তাঁরা পিএনবির সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।
ভারতের কেন্দ্রীয় পুলিশ চোকসি, নীরব মোদি এবং অন্যান্যের বিরুদ্ধে প্রতারণামূলক লেনদেনের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেছে। এসব লেনদেনে পিএনবির বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এই দুই হীরা কারবারি তাঁদের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ২০১৮ সালে চোকসি এক চিঠিতে বলেন, আগাম একটি ধারণা নিয়ে সংস্থাগুলো তদন্ত করছে এবং এর মাধ্যমে তারা বিচারপ্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করছে।
চোকসির আইনজীবী বিজয় আগরওয়াল আজ সোমবার রয়টার্সকে বলেন, তাঁর মক্কেল ক্যানসারের চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাঁর পালিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি নেই—এই কারণ দেখিয়ে তাঁর মুক্তির জন্য আপিল করা হবে। তিনিও আরও বলেন, চোকসি বেলজিয়ামে কোনো অপরাধ করেননি।
নীরব মোদির বিরুদ্ধে পিএনবির মামলার বিস্তারিত প্রকাশ্যে আসার আগেই তিনি ২০১৮ সালের ভারত থেকে পালিয়ে যান। তিনিও ২০১৯ সালে যুক্তরাজ্যে গ্রেপ্তার হন এবং এখনো তিনি সেখানে আটক আছেন। যদিও এর মধ্যে তিনি একবার প্রত্যর্পণের আপিলে হেরেছেন।
মোদি বেলজিয়ামের হীরা প্রক্রিয়করণ কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত আন্তওয়ার্পেনে বড় হয়েছেন। অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনা প্রকাশ্যে আসার আগে থেকেই চোকসি নিয়মিত ওই শহরে যাতায়াত করতেন।
মুম্বাইয়ের হীরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, চোকসির আশ্রয় নেওয়ার আদর্শ জায়গা হতে পারত আন্তওয়ার্পেন। কারণ, তিনি সেখানে অনেককে চেনেন এবং সেখানে যাঁরা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, এমন অনেকের সঙ্গেও তাঁর সম্পর্ক রয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন রব ম দ ব যবস প এনব
এছাড়াও পড়ুন:
হতাহতের ছবি-ভিডিও সরাতে ও ছড়িয়ে পড়া বন্ধে পদক্ষেপ চেয়ে রিট, আদেশ ৩ আগস্ট
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় নিহত–আহতদের ছবি ও ভিডিও সরাতে এবং সেগুলো ছড়িয়ে পড়া বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে রিট হয়েছে। এ রিটের ওপর আদেশের জন্য ৩ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।
আজ বৃহস্পতিবার শুনানি নিয়ে বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আদেশের এই দিন ধার্য করেন।
ওই ঘটনায় নিহত–আহতদের ছবি–ভিডিও সরাতে এবং সেগুলো ছড়িয়ে পড়া বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তাসমিয়াহ নুহিয়া আহমেদ ২৯ জুলাই রিটটি করেন। আদালতে রিটের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. গোলাম রহমান ভূঁইয়া।
উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান ২১ জুলাই বিধ্বস্ত হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৩০ জুলাই পর্যন্ত হিসাবে, ওই ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ৩৪।
পরে আইনজীবী তাসমিয়াহ নুহিয়া আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ওই দুর্ঘটনায় আহত–নিহতদের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ ও ডিজিটাল মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেগুলোতে শিশুদের প্রায় পোশাকহীন, অগ্নিদগ্ধ ও আহত অবস্থায় দেখা যায়। এসব ছবি–ভিডিও শিশুদের পরিবারের পাশাপাশি সাধারণ নাগরিকদের ট্রমাটাইজ (মানসিকভাবে আঘাত) করে দিচ্ছে। আন্তর্জাতিক নীতিমালা অনুযায়ী এ ধরনের দুর্ঘটনায় আহত–নিহতদের ছবি–ভিডিও প্রকাশে সংবেদনশীল হওয়ার বিষয়ে বলা হয়েছে। ভবিষ্যতে এসব ছবি ব্যবহারে আরও সতর্কতা প্রয়োজন। তাই হতাহতদের ছবি–ভিডিও সরাতে এবং সেগুলো আর যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, সে জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়।