বজ্রপাত কেড়ে নিল ৭ প্রাণ, ঝড়বৃষ্টি হবে আরও
Published: 16th, April 2025 GMT
বৈশাখের সূর্যের তেজ টের পাওয়া যাচ্ছিল বুধবার সকাল থেকেই। রোদের তীব্রতা এমন যে, চোখ মেলে রাখাও দায়। পরিস্থিতি বদলায় দুপুর পেরোতেই। মেঘের আড়ালে ঢাকা পড়ে সূর্য। তারপর নামে ঝুম বৃষ্টি। কোথাও কোথাও হয়েছে বজ্রসহ ঝড়বৃষ্টি। ছয় জেলায় বজ্রপাতে মারা গেছেন সাতজন। এর মধ্যে রয়েছেন গাজীপুরের কালিগঞ্জ, নরসিংদীর রায়পুরা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীগরের তিন কৃষক; কুমিল্লার দেবিদ্বারের গৃহবধূ, হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে ধানকাটার দুই শ্রমিক এবং ময়মনসিংহের নান্দাইলের এক তরুণী।
গাজীপুরের কালীগঞ্জে বজ্রপাতে মারা যাওয়া কৃষকের নাম শুক্কুর আলীর (৫০)। বাড়ি কালীগঞ্জ পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড বড়নগর এলাকায়। উপজেলার তুমলিয়ার ইউনিয়নের টেক মানিকপুরের উত্তরপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানান, শুক্কুর ধান কাটার জন্য দুপুরে বাড়ি থেকে বের হয়ে মাঠে যান। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার রাজামেহার ইউনিয়নের মরিচা গ্রামের নোয়াপাড়ায় বিকেলে বজ্রপাতে মারা যান গৃহবধূ আলেয়া বেগম (৪০)। তিনি কৃষক নজরুল ইসলামের স্ত্রী। বাড়ির পাশে জমিতে পরিবারের সদস্যদের সাথে ধান মারাইয়ের কাজ করার সময় আলেয়ার মৃত্যু হয়।
হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জের শিবপাশা গ্রামের হাওরে বিকেলে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে মারা যাওয়া দুজন হলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের মনিরুল ইসলাম ও কপিল উদ্দিন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীগরের নাটঘর ইউনিয়নের কুড়িঘর গ্রামের বিলে বিকেলে বজ্রপাতে মারা যান কৃষক আব্দুল আওয়াল (৫০)। বিলে ধান কাটতে গিয়ে তিনি বজ্রপাতে আহত হন।
ময়মনসিংহের নান্দাইলের মাদারীনগর গ্রামে দুপুরে বজ্রপাতে প্রাণ হারানো কিশোরীর নাম হাসনা আক্তার। তার বাবার নাম নুরুল হক। জমিতে ধান কাটতে থাকা বাবার কাছে চট পৌছে দেওয়ার সময় বজ্রপাতে মারা যায় হাসনা।
নরসিংদীর রায়পুরার পলাশতলী ইউনিয়নের নূরপুর গ্রামে দুপুরে বজ্রপাতে কৃষক ইব্রাহিম হোসেনের মৃত্যু হয়। বাড়ির পাশে মাঠে ধান কাটার সময় তিনি মারা যান।
এদিকে বৃষ্টিতে স্বস্তি পেলেও রাজধানীবাসী পড়েন যানজটের ভোগান্তিতে। বৃষ্টিতে রাস্তায় পানি জমে যাওয়ায় হেটে চলতেও বেগ পেতে হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, এমন বৃষ্টি টানা তিনদিন হতে পারে। তবে কোথাও আবার হতে পারে কালবৈশাখী, শিলাবৃষ্টি এবং বজ্রপাত। সামনে তীব্র গরম পড়বে বলেও তারা জানায়।
আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম বলেন, এ সময়ে বৃষ্টি হলে গরম কমে। চলতি মাসের শেষের দিকে আবহাওয়া আবার গরম হতে পারে বলেও সতর্ক করেন তিনি।
আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, বৃষ্টি হবে, থেমে যাবে, আবার হবে- এমনই চলবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র সময়
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেম ছিল না তবু কেন মধুবালাকে বিয়ে করেছিলেন কিশোর কুমার
দিলীপ কুমারের সঙ্গে বিচ্ছেদের কিছুদিন পরই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন অভিনেত্রী মধুবালা। তবে তখন তিনি ছিলেন অসুস্থ। কিশোর কুমার জানিয়েছিলেন, ভালোবাসা থেকে নয়, বরং কথা রাখতেই তিনি এ বিয়ে করেছিলেন।
মধুবালা ও দিলীপ কুমারের প্রেম নিয়ে একসময় মুখর ছিল মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। কিন্তু অভিনেত্রীর বাবার বাধার কারণে সে সম্পর্কে ফাটল ধরে এবং দুজনের বিচ্ছেদ ঘটে। কিছুদিন পরেই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন মধুবালা। তাঁদের এই বিয়ে অনেককে চমকে দিয়েছিল। কারণ, তাঁদের প্রেমের কথা তখনো গোপন ছিল। তবে মধুবালার শরীর তখন ভালো যাচ্ছিল না। বলা হয়, দীর্ঘ রোগভোগের সময় কিশোর কুমার তাঁকে মায়ের বাড়িতে রেখেই চলে যান।
দ্য ইলাস্ট্রেটেড উইকলি অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেছিলেন, ‘বিয়ের আগেই জানতাম, ও খুব অসুস্থ। কিন্তু কথা তো দিয়েছিলাম। তাই সে কথা রেখেই ওকে ঘরে এনেছিলাম স্ত্রী হিসেবে। জানতাম, ওর জন্মগত হৃদ্রোগ আছে। তবু ৯ বছর ধরে সেবা করেছি। চোখের সামনেই ওকে মরতে দেখেছি। কেউ বুঝবে না এর যন্ত্রণা, না ভুগলে। ও অসম্ভব সুন্দরী ছিল। আর কত যন্ত্রণায় মারা গেছে, সেটা চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। হতাশায় চিৎকার করত, কান্নাকাটি করত। এত প্রাণোচ্ছল মানুষ নয়টা বছর বিছানায় শুয়ে থাকবে—এ কল্পনাই করা যায় না। ডাক্তার বলেছিল, ওকে হাসিখুশি রাখতে হবে। আমি তা–ই করেছি—ওর শেষনিশ্বাস পর্যন্ত। কখনো হেসেছি, কখনো কেঁদেছি ওর সঙ্গে।’
তবে কিশোর কুমারের এই বক্তব্য নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। কারণ, পরে ফিল্মফেয়ার সাময়িকীতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একেবারে ভিন্ন কথা বলেন তিনি। সেই সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেন, ‘মধুবালার সঙ্গে আমি প্রেমে পড়িনি কখনো। বরং ওর প্রেমিক ছিল আমার বন্ধু দিলীপ কুমার। আমি তো শুধু ওদের বার্তা পৌঁছে দিতাম। বিয়ের প্রস্তাবটা দিয়েছিল মধুবালাই। এমনকি, যখন আমার প্রথম স্ত্রী রুমা তখনো আমার সঙ্গে ছিল, তখনো মধু বলত, “ওকে কখনো ছেড়ো না, না হলে আমি তোমার হয়ে যাব।”’
আরও পড়ুনকিশোর কুমার কি সত্যিই ঘরে কঙ্কাল আর মাথার খুলি নিয়ে ঘুমাতেন২৭ মে ২০২৫মধুবালার পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, চিকিৎসকেরা তখন বলেছিলেন, অভিনেত্রীর পক্ষে শারীরিক সম্পর্ক কিংবা সন্তানধারণ কোনো কিছুই সম্ভব নয়। সেই বাস্তবতা হয়তো প্রভাব ফেলেছিল কিশোরের সিদ্ধান্তে। এক ঘনিষ্ঠজন বলেন, ‘আমরা বলছি না কিশোরদা ভুল করেছিলেন। ডাক্তার তো স্পষ্ট বলেছিল—শারীরিক সম্পর্ক বা সন্তান কোনোটাই সম্ভব নয়। তবে একজন নারীর তো মানসিক সঙ্গীও দরকার হয়।’
ওই ঘনিষ্ঠজন আরও জানান, কিশোর কুমার তিন মাসে একবার আসতেন মাত্র। বলতেন, ‘আমি এলে তুমি কাঁদবে, আর এতে তোমার হৃদ্যন্ত্রের ক্ষতি হবে। তুমি বিষণ্ন হয়ে পড়বে।’ সে সময় মধু অনেক ছোট ছিলেন, ঈর্ষাও ছিল স্বাভাবিক। হয়তো এ দূরত্বই ধীরে ধীরে তাঁকে শেষ করে দিয়েছিল।
১৯৬৯ সালে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান বলিউড অভিনেত্রী মধুবালা