সিদ্ধিরগঞ্জে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভুল রিপোর্টে শিশুর জীবন বিপন্ন
Published: 18th, April 2025 GMT
সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাংরোড ফজর আলী গার্ডেন সিটি ভবনে এস আলম ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে মাইমুনা সুলতানা নামে ৪ বছরের এক শিশুর রক্তের ইনফেকশন পরিমাণ নির্ণয় পরীক্ষার ভুল রিপোর্ট তৈরি করার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। ফলে শিশুটির জীন বিপন্ন হওয়ার পথে।
জানা গেছে, সিদ্ধিরগঞ্জ মিজমিজি পাইনাদী এলাকার বাসিন্দা মো.
তখন ডাক্তার ফিরোজ আলম শিশুটিকে হেমাটোলজি ও সেরোলজি পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন। পরে শিশুটিকে নিয়ে তার পিতা এস. আলম ডিজিটাল ডায়গনস্টিক সেন্টারে গিয়ে পরীক্ষা করান।
সেরোলজি পরীক্ষায় শিশুটির সি-রিঅ্যাকটিভ প্রোটিন(সিআরপি) পরীক্ষার রিপোর্টে রক্তের পেণ্টামেরিক প্রোটিন ৫০ দশমিক ২ এম.জি/এল পরিমাণ দেখানো হয়।
রিপোর্টে এম.ফিল সি প্যাথলজি ডাক্তার মো. শাহাদাত হোসেন ও ডিপ্লোমা ইন ল্যাবরেটরি মেডিসিন ও ল্যাব টেকনোলজিস্ট ডাক্তার সাকিল পারভেজের স্বাক্ষর রয়েছে।
সে রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে হাতুড়ে ডাক্তার ফিরোজ আলম শিশুটিকে ইনজেকশন ও ওষুধ দেন। এতে শিশুটির শারীরিক অবস্থা চরম অবনতি হয়।
শিশুর পিতা শফিকুল বলেন, মেয়ের অবস্থা খারাপ হলে আমি অন্য একজন ডাক্তারের কাছে গিয়ে পরীক্ষার রিপোর্ট দেখাই। তখন এ রিপোর্ট দেখে ওই ডাক্তার অবাক হয়ে বলেন, মানুষের রক্তে ইনফেকশনের পরিমান কখনো ৫০ দশমিক ২ এম.জি/এল হতে পারে না।
তাই তিনি আবার পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেন। তখন আমি ১৭ এপ্রিল মেয়েকে সাইনবোর্ড প্রো-অ্যাকটিভ হাসপাতালে নিয়ে আবার পরীক্ষা করাই।
সেখানে পরীক্ষা রিপোর্টে রক্তের পেণ্টামেরিক প্রোটিন পরিমাণ আসে ১৫ দশমিক ১ এমজি/এল। তখন আমি প্রো-অ্যাকটিভ হাসপাতালের রিপোর্টে স্বাক্ষরকারী ডাক্তার মো. মামুন অর রশিদ ও রেহানা আক্তার সোনিয়াকে এস. আলম ডায়গনস্টিক সেন্টারের রিপোর্ট দেখালে তারাও অবাক হয়ে বলেন এটা অসম্ভব। রিপোর্টটি সঠিক হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এস.আলম ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক একাডেমিক শিক্ষাগত ল্যাব টেকনোলজিস্ট ডাক্তার, ডিপ্লোমা প্রাপ্ত নার্স ও রোগী দেখার জন্য নিয়মিত এমবিবিএস ডাক্তার নেই।
প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত কর্মকর্তারা নিজেরাই মনগড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষা রিপোর্ট তৈরি তাদের সঙ্গে চুক্তিভিত্তিক নামি-দামি সরকারি বিভিন্ন হাসপাতালের এমবিবিএস ডাক্তার ও ল্যাব টেকনোলজিস্ট ডাক্তারের সিল স্বাক্ষর দিয়ে রোগীদের হাতে ধরিয়ে দেয়। তাদের এ ভুল রিপোর্টে চিকিৎসা করে রোগীদের জীবন বিপন্ন হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক শহিদুল ইসলাম বলেন, একদিন আগে পরের রিপোর্ট কিছু ব্যবধান হতেই পারে। তাই বলে ৩৫ পার্সেন্ট প্রশ্ন করলে তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে এড়িয়ে গিয়ে ল্যাব টেকনোলজিস্ট ডাক্তার সাকিল পারভেজের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।
ডাক্তার সাকিল পারভেজ বলেন, আমাদের রিপোর্ট ভুল নয়। আমাদের রিপোর্টের দুদিন পর ওই রিপোর্ট করা হয়েছে। দুদিন ওষুধ সেবন করায় শিশুটির রক্তের প্রোটিন পরিমাণ কমে গেছে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ গনস ট ক স ন ট র ড য় গনস ট ক পর ক ষ পর ম ণ আলম ড
এছাড়াও পড়ুন:
বরিশালের উজিরপুরে ‘ভুয়া’ চিকিৎসককে কারাদণ্ড
বরিশালের উজিরপুরে রেজাউল করীম নামে এক ‘ভুয়া’ চিকিৎসককে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাইনুল ইসলাম খান তাকে এ দণ্ডাদেশ দেন।
কয়েক বছর ধরে উপজেলার পশ্চিম সাতলা বাজারে ‘মায়ের দোয়া ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান চালিয়ে আসছেন তিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিজেকে এমবিবিএস চিকিৎসক পরিচয় দিতেন রেজাউল করিম। ‘ভুয়া’ এই পরিচয় ব্যবহার করে উজিরপুর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম পশ্চিম সাতলায় ডায়গনস্টিক সেন্টার খুলেন তিনি। যেখানে সার্জারিসহ জটিল সব রোগের চিকিৎসা দেওয়া হতো। চিকিৎসার নামে গ্রামের সাধারণ রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিতেন বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
উজিরপুর থানার ওসি আব্দুস সালাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মঙ্গলবার দুপুরে রেজাউল করীমকে কারাদণ্ড প্রদান করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বিকেলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
তিনি জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার দুপুরে ওই ডায়গনস্টিক সেন্টারে অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাইনুল ইসলাম খান। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে একটি সনদপত্র দেখান রেজাউল। যা ‘চার্টার অব অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল অব ইন্ডো অ্যালোপ্যাথি অ্যান্ড কমপ্লিমেন্টারি মেডিসিন’ নামে ভারতীয় একটি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের। আদতে ওই সনদের কোনো বৈধতা নেই। ভুয়া চিকিৎসক হওয়ায় রেজাউলকে আটক করা হয় এবং ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।