যশোরে সালিসের নামে নারীর ঘরবাড়ি ভাঙচুর, বিএনপির দুই নেতাকে অব্যাহতি
Published: 19th, April 2025 GMT
যশোরে সালিসের নামে এক নারীর ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও লুটের অভিযোগে বিএনপির দুই নেতাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আজ শনিবার জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অব্যাহতি পাওয়া দুই নেতা হলেন সদর উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও চাঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা এবং চাঁচড়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি আবদুল হালিম। তাদের বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদসহ পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অব্যাহতভাবে সংগঠনের নীতি–আদর্শ পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকায় চাঁচড়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফাকে সদর উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি পদ থেকে এবং আবদুল হালিমকে চাঁচড়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি পদসহ প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো। দলীয় কর্মকাণ্ডে তাঁরা যাতে অংশগ্রহণ করতে না পারেন, সে ব্যাপারে নেতা–কর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
দলীয় সূত্র জানায়, ১৬ এপ্রিল রাতে সদর উপজেলার চাঁচড়া ইউনিয়নে সড়ক নির্মাণ নিয়ে এক সালিসে বসেন গোলাম মোস্তফা ও আবদুল হালিম। এ সময় সদর উপজেলার করিচিয়া গ্রামের মালেকা বেগমের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। ঘটনাটির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ করা হয়। এ ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন ভুক্তভোগী মালেকা বেগম।
ক্ষতিগ্রস্ত মালেকা বেগম বলেন, প্রতিবেশী ফজরের সঙ্গে রাস্তার জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। বিএনপি নেতাদের ডেকে এনে সালিসের নামে তাঁর তিনটি আধা পাকা বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, কেন্দ্রীয় নির্দেশনামতো তাঁরা সভা করে স্থানীয় নেতাদের জানিয়ে দিয়েছেন, কোনো সালিসে কেউ অংশ নেবেন না। জমিজমা বা অন্য কোনো বিষয়ে স্থানীয় পর্যায়ে কোনো বিরোধ থাকলে থানা–পুলিশ বিষয়টি দেখবে। কিন্তু সেই নির্দেশনা উপেক্ষা করে দুই নেতা সালিসে যোগ দিয়ে এক নারীর ঘর ভাঙচুর করেন। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদের স্থায়ীভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
অভিযুক্ত বিএনপি নেতা গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে বাড়িঘর ভাঙচুরের যে অভিযোগ করা হচ্ছে, তা মিথ্যা। মূলত আমরা ১১ জন মিলে এলাকার একটি রাস্তা বের করার উদ্যোগ নিই। ১৫ দিন আগে এ বিষয়ে বিচার সালিস বৈঠকে বসেছিলাম। যাঁরা ওই মহিলার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত, তাঁরাই তাঁর বাড়ি ভাঙচুর করেছেন। এর সঙ্গে আমি ও হালিমের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সদর উপজ ল ব এনপ র স
এছাড়াও পড়ুন:
জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে গণঅধিকার পরিষদ
সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলোর আলোকে জাতীয় ঐক্য গঠনের জন্য জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে গণঅধিকার পরিষদ। আজ সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূরের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এ বৈঠকে অংশ নেয়। শুরুতে বক্তব্য দেন জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াজ।
তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালের কোটাবিরোধী আন্দোলন ছিল ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সূচনা। সেই সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় আজ আমরা একটি অভূতপূর্ব রাজনৈতিক পরিবর্তনের মুখোমুখি। এই পরিবর্তনকে অর্থবহ করতে কেবল সংস্কার কমিশনের সুপারিশ যথেষ্ট নয়, বরং সব রাজনৈতিক দলের সম্মিলিত অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি নতুন বাংলাদেশ গঠন করতে হবে।’
কমিশনের সহসভাপতি বলেন, এই আলোচনা কেবল কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে রাজপথে ও রাজনৈতিক চর্চার মাধ্যমে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে একটি জাতীয় সনদ গঠনের লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে।
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর তার বক্তব্যে বলেন, গত ১৬ বছর ধরে দেশের মানুষ ফ্যাসিবাদী শাসনের চাপে নিপীড়নের শিকার হয়েছে। ভবিষ্যতে কেউ যেন এমন দমন-পীড়ন চালাতে না পারে, সে লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের মাধ্যমে একটি কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালের কোটাবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে লড়াই শুরু হয়েছিল, সেটি আট মাসেরও বেশি সময় ধরে চলেছে। হামলা-মামলা ও গ্রেপ্তার সত্বেও আমরা আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছি। ব্যক্তি দল গোষ্ঠীর চেয়ে জাতীয় স্বার্থ ও রাষ্ট্রের স্বার্থকে আমরা যেন প্রাধান্য দেই এটিই আমাদের চাওয়া।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র ও জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ফারুক হাসান, সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান, কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার ও ইফতেখারুজ্জামান।