বৃষ্টিতে বাড়ল কক্সবাজারের লবণচাষিদের লোকসানের বোঝা
Published: 19th, April 2025 GMT
লবণের দাম নিয়ে এমনিতেই হতাশ কক্সবাজার জেলার লবণচাষিরা। তার ওপর বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে উৎপাদনও বন্ধ হয়ে গেছে। নষ্ট হয়েছে মাঠের লবণ। এতে লবণচাষিদের লোকসানের বোঝা আরও বাড়ল।
লবণচাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি মণ লবণ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। কিন্তু এ পরিমাণ লবণ উৎপাদনে চাষিদের খরচ হচ্ছে ২৮০ টাকার বেশি। এতে কেজিপ্রতি তিন টাকা লোকসান দিতে হচ্ছে চাষিদের।
চাষিদের অভিযোগ, লবণ মিলমালিক ও ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে লবণের দাম কমিয়ে ১৬০ টাকা নির্ধারণ করেছেন। অথচ খুচরা বাজারে প্রতি কেজি প্যাকেটজাত পরিশোধিত লবণ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। এর ফলে এই শিল্পের লাভ পুরোটাই যাচ্ছে মিলমালিক ও ব্যবসায়ীদের পকেটে।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে কক্সবাজার সদর, কুতুবদিয়া, মহেশখালী, পেকুয়া, চকরিয়া, ঈদগাঁও, টেকনাফ ও চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় ৬৮ হাজার ৫০৫ একর জমিতে লবণের চাষ হচ্ছে। গত শুক্রবার পর্যন্ত গত ৫ মাসে লবণ উৎপাদিত হয়েছে ১৮ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন। চলতি মৌসুমে লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৬ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন। দেশে লবণের বার্ষিক চাহিদা ২৬ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন।
তবে আজ শনিবার ভোর থেকে ভারী বর্ষণ শুরু হওয়ায় লবণ উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। জেলার একমাত্র টেকনাফে লবণ উৎপাদন চালু থাকলেও বৃষ্টির কারণে সেখানেও উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছেন চাষিরা। এর আগের দুদিনের বৃষ্টিতে মহেশখালী, কুতুবদিয়া, পেকুয়া, চকরিয়া, ঈদগাঁও, কক্সবাজার সদর ও বাঁশখালীতে লবণ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।
আজ সকাল থেকে ৬৮ হাজার ৫০৫ একরের শতভাগ মাঠে লবণ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে জানিয়ে বিসিক কক্সবাজার লবণশিল্প উন্নয়ন প্রকল্পের মাঠ পরিদর্শক মো.
আজ দুপুরে কুতুবদিয়ার উত্তর ধুরুং ইউনিয়নের কৈলারপাড়ায় গিয়ে দেখা গেছে, সেখানকার ৫০০-৬০০ একরের লবণমাঠ বৃষ্টির পানিতে ডুবে আছে। উৎপাদিত লবণ শতাধিক গর্তে সংরক্ষণ করা হলেও বেশ কিছু জায়গায় লবণের স্তূপ পড়ে আছে। তাতে পলিথিন মুড়িয়ে রাখা হয়েছে।
কৈলারপাড়ার লবণচাষি আবদুল করিম (৫০) বলেন, বৃষ্টিতে তাঁর পাঁচ কানি মাঠের লবণ উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। বৃষ্টির পানিতে ভিজে সাত-আট মণ লবণ নষ্ট হয়েছে। হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হওয়ায় উৎপাদিত লবণ সংরক্ষণ করতে পারেননি তিনি।
একই অবস্থা দেখা গেছে কক্সবাজার সদর, পেকুয়া, চকরিয়া, মহেশখালী, ঈদগাঁও ও টেকনাফ উপজেলায়। বৃষ্টির কারণে ৬০ হাজার একরের বেশি মাঠে লবণ উৎপাদন বন্ধ আছে।
কক্সবাজার লবণচাষি ও ব্যবসায়ী সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক মো. মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, এমনিতেই দাম নিয়ে চাষিরা হতাশ। তার ওপর দুর্যোগে লবণ নষ্ট হচ্ছে। সরকার চাইলে লবণের ন্যায্যমূল্য পেতে পারেন চাষিরা।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ জ র ম ট র ক টন লবণ উৎপ দ লবণ ব ক র উৎপ দ ত র লবণ লবণ র
এছাড়াও পড়ুন:
কুমিল্লায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৩৫ কিলোমিটারজুটে যানজট
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার নিমশার থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কিলোমিটারজুড়ে যানজট দেখা দিয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও চালকেরা। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি কাভার্ড ভ্যান উল্টে যাওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার ভোর থেকে এ যানজট দেখা দেয়।
হাইওয়ে পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার ভোরে মহাসড়কে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার নূরীতলা এলাকায় একটি কাভার্ড ভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। ফেনী থেকে রেকার এনে কাভার্ড ভ্যানটি উদ্ধারের কাজ শুরু করে পুলিশ।
সকাল সাড়ে ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মহাসড়কে যানজট দেখা গেছে।
ঢাকাগামী রয়েল পরিবহনের চালক রমিজ উদ্দিন বলেন, সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা করে বুড়িচংয়ের নিমশার বাজারে যানজটে এক ঘণ্টা বসে থাকতে হয়েছে। ৫ মিনিট গাড়ি চললে ২০ মিনিট বসে থাকতে হয়। এভাবে ১০টা ৪০ মিনিটে চান্দিনায় পৌঁছেছি। এ সময়ে ঢাকার কাছাকাছি থাকার কথা ছিল।
নিমশার বাজারে আটকে থাকা প্রাইভেট কারের যাত্রী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ভোর থেকে যানজট অথচ সড়কে হাইওয়ে পুলিশ দেখছি না।
ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রুহুল আমিন বলেন, মহাসড়কের নূরীতলা এলাকায় উল্টে কাভার্ড ভ্যানটি আড়াআড়িভাবে পড়ে ছিল। পরে ঢাকামুখী লেনের বেশ কিছু গাড়ি উল্টো পথে ঢোকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ফেনী থেকে ক্রেন এনে গাড়িটি উদ্ধার করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।
হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিওনের পুলিশ সুপার অতিরিক্ত ডিআইজি মো. খাইরুল আলম সমকালকে বলেন, দুর্ঘটনার কারণেই যানজট দেখা দিয়েছে। দুর্ঘটনা কবলিত কাভার্ড ভ্যানটি উদ্ধার করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক হচ্ছে।