একজন ব্যক্তি দুটি সরকারি পদে বহাল, ভিন্ন ঠিকানায় জাতীয় পরিচয়পত্রও দুটি; আর এভাবে মাসের পর মাস দুই প্রতিষ্ঠান থেকে নিচ্ছেন বেতনভাতা—চাঞ্চল্যকর এমন এক ঘটনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার মো. রেজাউল করিম।

রেজাউল বর্তমানে একদিকে মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এসইএসডি প্রকল্পের অধীনে একাডেমিক সুপারভাইজার, অপরদিকে চাঁদট এম বি মদিনাতুল উলুম ফাজিল মাদরাসায় আরবি প্রভাষক হিসেবেও কর্মরত। অভিযোগ রয়েছে, তিনি দুই চাকরি করছেন একসঙ্গে এবং প্রতিমাসে দুটি প্রতিষ্ঠান থেকেই সরকারি সুবিধা তুলেছেন। অথচ এই দুই কর্মস্থলের দূরত্ব ১০০ কিলোমিটারেরও বেশি।

চাঁদট গ্রামের বাসিন্দা রেজাউল করিম ২০১২ সালে সরকারি প্রকল্পে একাডেমিক সুপারভাইজার পদে যোগ দেন, বর্তমানে কর্মস্থল মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা। এরপর ২০২২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি তিনি এনটিআরসির মাধ্যমে খোকসার মাদরাসায় আরবি প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পান। তবে দুটি পদে চাকরির জন্য তিনি ব্যবহার করেছেন দুই ভিন্ন ঠিকানার জাতীয় পরিচয়পত্র—একটি গাজীপুরের, অন্যটি খোকসার।

মাদরাসার একাধিক শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, রেজাউল করিম স্থানীয় রাজনীতির ছত্রছায়ায় মাসের পর মাস অনুপস্থিত থেকেও নিয়মিত বেতন তুলেছেন। ২০২২ থেকে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তার বেতন তোলা রেকর্ড রয়েছে।

মহম্মদপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, রেজাউল করিম মার্চ-২০২৫ পর্যন্ত একাডেমিক সুপারভাইজার হিসেবে নিয়মিত বেতনভাতা নিয়েছেন। বর্তমানে তিনি পাইলস অপারেশনের কারণে ছুটিতে আছেন।

রেজাউল করিম দুই পদে চাকরির বিষয়টি স্বীকার করলেও দাবি করেন, “মাদরাসা থেকে কোনো বেতন নিইনি।” আরো বলেন, “সরকারি প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ এবং নেওয়া বেতন ফেরত দেওয়ার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।”

মাদরাসার অধ্যক্ষ মহম্মদ শহিদুজ্জামান বলেন, “রেজাউল করিম এনটিআরসির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত। তিনি নিয়মিত ক্লাস নেন এবং বেতনভাতা পান।”

মহম্মদপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মুহম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, “তিনি নিয়মিত অফিস করেন, তবে গত এক মাস ধরে ছুটিতে আছেন।”

খোকসা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “মাদরাসাগুলো আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। তবে অভিযোগের বিষয়ে শুনেছি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ব্যবস্থা নিতে পারেন।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রদীপ্ত রায় দ্বিপন বলেন, “এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ না এলেও সত্যতা মিলেছে। মাগুরা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/কাঞ্চন/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন বল ন ম দর স উপজ ল সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

না’গঞ্জে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হতাহতদের আড়াই কোটি টাকার অনুদান ও সঞ্চয়পত্র প্রদান 

জুলাই গণঅভ্যত্থানে আহত ‘সি’ ক্যাটাগরির ২১২ জন জুলাই যোদ্ধাদের মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় প্রদত্ত আর্থিক অনুদানের চেক ও তিন শহীদ পরিবারের সঞ্চয়পত্র প্রদান করা হয়।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ আর্থিক অনুদানের চেক ও  সঞ্চয়পত্র প্রদান করা হয়।

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. জাহিদুল ইসলাম মিঞার সভাপতিত্বে করেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মানিত কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, সিভিল সার্জন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, আহত জুলাই যোদ্ধা ও তাঁদের পরিবার, শহিদ পরিবারের সদস্যগণ, ছাত্র প্রতিনিধি এবং গণমাধ্যমকর্মীরা।

এ সময় ৪ জন শহিদ পরিবারের সদস্যের প্রত্যেককে ১০ লক্ষ টাকা মূল্যমানের সঞ্চয়পত্র প্রদান করা হয়। পাশাপাশি, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ‘সি’ ক্যাটাগরির ২১২ জন যোদ্ধাকে এককালীন ১ লাখ টাকা করে অনুদানের চেক প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বীর সন্তানরা আমাদের জাতীয় ইতিহাসের এক গৌরবময় অধ্যায়। তাঁদের সাহসিকতা, আত্মত্যাগ ও অদম্য চেতনা আমাদের জাতি পুনর্গঠনের অনুপ্রেরণা। আমরা বিশ্বাস করি, এই যোদ্ধাদের সাহসিকতা দিয়েই গড়ে উঠবে একটি নতুন, উদ্ভাসিত বাংলাদেশ।

তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জের উন্নয়ন-অগ্রগতির যাত্রায় আমরা তরুণ সমাজ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, গণমাধ্যমকর্মী ও সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণ কামনা করি। সম্মিলিত প্রচেষ্টাই গড়ে তুলবে একটি সমৃদ্ধ, শান্তিপূর্ণ ও প্রগতিশীল নারায়ণগঞ্জ।

এদিকে এ অনুষ্ঠানটি শুধু অনুদান বিতরণ নয়, বরং জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের সম্মান জানানোর এক অনবদ্য প্রয়াস হয়ে উঠেছিল।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • না’গঞ্জে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হতাহতদের আড়াই কোটি টাকার অনুদান ও সঞ্চয়পত্র প্রদান 
  • জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগের সাবেক ডিজির এনআইডি ব্লক
  • মাদ্রাসা ও কারিগরির শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মচারীরা পাবেন অনুদান, আবেদনের সময় বাড়ল