পাস-ফেল দূরের কথা, যে স্কুলের কেউ পরীক্ষাই দিচ্ছে না
Published: 21st, April 2025 GMT
এসএসসি বা সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর সামনে আসে এমন কিছু স্কুল, যেখানে কেউ পাস করেনি; অথবা সবাই পাস করেছে- এমন সব খবর। তবে রেজিস্ট্রেশন করার পরও একটি বিদ্যালয়ের কোনো ছাত্র-ছাত্রী পরীক্ষায় বসেনি- এমন ঘটনার কথা শোনা যায় কমই। আর কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের ধর্মদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয় হলো তেমন একটি প্রতিষ্ঠান, যেখানে ঘটেছে মোটামুটি বিরল এই কাণ্ড; স্কুলটির কেউ পরীক্ষা দিচ্ছে না।
১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত ধর্মদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ২০০২ সালে মাধ্যমিক পর্যায়ে (সেকেন্ডারি) এমপিওভুক্ত হয়। প্রতিবছর এসএসসি পরীক্ষার্থী থাকলেও এবার সেখান থেকে কেউ পরীক্ষা দিচ্ছে না।
চলতি বছর ১৫ শিক্ষার্থীর এসএসসিতে অংশ নেওয়ার কথা ছিল, তবে কেউই পরীক্ষার হলে যায়নি।
আরো পড়ুন:
গণিত পরীক্ষা খারাপ হওয়ায় এসএসসির কেন্দ্র ভাঙচুর
এসএসসির চতুর্থ পরীক্ষার দিনে বহিষ্কার ৭৮
কেন এমন হলো, তা জানতে কথা হয় ধর্মদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুস্তম আলীর সঙ্গে।
তিনি বলেন, “এবার আমাদের বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষার জন্য ১৫ জন ছাত্রী রেজিস্ট্রেশন করেছিল। তবে দুঃখজনক হলেও তারা কেউই পরীক্ষায় অংশ নেয়নি।”
“আমরা অনেক চেষ্টা করেছি তাদের পরীক্ষায় বসানোর জন্য কিন্তু তাতে আমরা সফল হইনি,” যোগ করেন রুস্তম আলী।
রেজিস্ট্রেশন করা সেই ১৫ শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলার জন্য খোঁজ-খবর করা হলে তাদের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা হলে তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২৩ বছরেও বিদ্যালয়টির অবকাঠামো ও শিক্ষার পরিবেশের কোনো উন্নয়ন হয়নি। বিদ্যালয়টি বর্তমানে কার্যত একটি জরাজীর্ণ ভবনে পরিচালিত হচ্ছে। ভাঙাচোরা বেঞ্চ, মানসম্পন্ন শ্রেণিকক্ষের অভাব এবং প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণের সংকটে পড়াশোনার পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের খাতা-কলমে ২০০ শিক্ষার্থী দাবি করলেও শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০০ জনের নিচে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তাদের জন্য রয়েছেন ১০ জন শিক্ষক, যার মধ্যে অনেকেই নিয়মিত উপস্থিত হন না বলে অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলেন, “বৃষ্টি হলে শ্রেণিকক্ষে পানি পড়ে, পাঠদান প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। বেঞ্চ ভাঙা, জানালা-দরজা নেই বললেই চলে। মেঝে মাটির। শিক্ষকেরা নিয়মিত আসেন না।”
কয়েকজন অভিভাবক বলেন, বিদ্যালয়ের প্রতি প্রশাসনের নজরদারি নেই। শিক্ষকদের অনিয়মিত উপস্থিতি ও পাঠদানের দুর্বল মানের কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আগ্রহ হারিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় আরেক অভিভাবক বলেন, “আমরা গরিব মানুষ, ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠাই ভবিষ্যতের আশায়। কিন্তু স্কুলের অবস্থা এমন যে, ওরা আর যেতে চায় না। আমি আমার মেয়েকে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি করিয়েছিলাম, পরে পাশের অন্য স্কুলে নিয়ে গেছি।”
বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা প্রতিবছর জয়পুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করে। এবারের পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার বিষয়ে কেন্দ্র সচিব ও বাগোয়ান কেসিভিএন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিম টম বলেন, “এবার ধর্মদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী আমার কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে না।”
এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার কামাল হোসেন বলেন, “মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা না থাকায় আমি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছি। বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.
ঢাকা/কাঞ্চন/রাসেল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব দ য লয়ট পর ক ষ য় পর ক ষ র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারি পলিটেকনিকে ভর্তি: ২০২৩, ২০২৪ ও ২০২৫ সালে এসএসসি উত্তীর্ণদের সুযোগ
বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে চার বছর মেয়াদি বিভিন্ন ডিপ্লোমা শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রমের সময়সূচি ঘোষণা করেছে। এ কার্যক্রমের আওতায় সরকারি ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউটগুলোতে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং, ডিপ্লোমা ইন মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং, ডিপ্লোমা ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং, ডিপ্লোমা ইন অ্যাগ্রিকালচার, ডিপ্লোমা ইন ফিশারিজ, ডিপ্লোমা ইন ফরেস্ট্রি, ডিপ্লোমা ইন লাইভস্টক এবং ডিপ্লোমা ইন ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট শিক্ষাক্রমে ভর্তিতে শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।
এ–সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন ২০২৩, ২০২৪ ও ২০২৫ সালে এসএসসি বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা। আবেদনের এ প্রক্রিয়া শুরু হবে আগামীকাল বুধবার (৩০ জুলাই) থেকে। আবেদনপ্রক্রিয়া চলবে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত। আবেদনকারী শিক্ষার্থীরা ২১ থেকে ২৮ আগস্ট পর্যন্ত অনলাইনে প্রবেশপত্র ডাউনলোড করতে পারবেন। ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২৯ আগস্ট (শুক্রবার) সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত।
আরও পড়ুননটর ডেম কলেজ: একাদশে ভর্তিতে যোগ্যতার শর্ত প্রকাশ, ও লেভেল শিক্ষার্থীদের আবেদন নয়, আসন ৩২৯০টি২৬ জুলাই ২০২৫ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হবে আগামী ৪ সেপ্টেম্বরে। একই দিনে শুরু হবে প্রথম পর্যায়ের নিশ্চয়ন কার্যক্রম, যা চলবে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এরপর ৯ সেপ্টেম্বর প্রথম পর্যায়ের মাইগ্রেশন ও অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে দ্বিতীয় পর্যায়ের ফলাফল প্রকাশ করা হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ের নিশ্চয়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে।
১১ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হবে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের নিশ্চয়নপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা। তালিকাভুক্ত শিক্ষার্থীদের সরাসরি ভর্তি কার্যক্রম চলবে ১৪ ও ১৫ সেপ্টেম্বরে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।
আরও পড়ুনপ্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব প্রধান শিক্ষকের বেতন গ্রেড এক ধাপ বাড়ছে১৫ ঘণ্টা আগেপরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীরা ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর পছন্দক্রম পরিবর্তনের সুযোগ পাবেন। শূন্য আসনের ভিত্তিতে ২৪ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হবে তৃতীয় পর্যায়ের ফলাফল। তৃতীয় পর্যায়ের ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে ২৫ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এবং ভর্তি কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে শেষ হবে ২৯ সেপ্টেম্বর।
ভর্তিসংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য ও নির্দেশিকা পাওয়া যাবে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর, টেকনিক্যাল এডুকেশন অধিদপ্তর এবং বিটিইবির ওয়েবসাইটে
আরও পড়ুনঅষ্টম শ্রেণিতে আবারও বৃত্তি পরীক্ষা ফিরছে, আছে প্রশ্নও২৮ জুলাই ২০২৫