Samakal:
2025-07-31@22:00:00 GMT

কৃষিজমিতে বাড়ি, পুকুর খনন

Published: 21st, April 2025 GMT

কৃষিজমিতে বাড়ি, পুকুর খনন

রাজারহাটে অপরিকল্পিতভাবে কৃষিজমিতে বসতবাড়ি নির্মাণ ও পুকুর খনন করা হচ্ছে। এতে গত পাঁচ বছরে উপজেলায় ৩৫১ হেক্টর ফসলি জমি কমেছে। এটি ফসল উৎপাদনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। 
উপজেলা কৃষি ও পরিসংখ্যান দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রাজারহাট উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের ৬৩টি গ্রামে ২০০৮ সালে আবাদি জমির পরিমাণ ছিল ১৪ হাজার ৮৮১ হেক্টর। বর্তমানে সে জমির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৬৬৩ হেক্টরে। গত ৫ বছরে উপজেলায় ফসলি জমি কমেছে ৩৫১ হেক্টর। বেসরকারি হিসাবে, এ পরিমাণ আরও বেশি। জমি কমার কারণ– জনসংখ্যা বৃদ্ধি, যৌথ পরিবার ভেঙে নতুন ঘরবাড়ি তৈরি, অফিস ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান নির্মাণ। এসব তথ্য কৃষি অফিসসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয় বলে জানান উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা এটিএম রিয়াসাদ। এসব তথ্য পাওয়ার পরও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো কেন ব্যবস্থা নেয়না তা নিয়ে প্রশ্ন সচেতন মহলের।    
স্থানীয়রা বলছেন, পৌরসভা বা জেলা শহরে বাড়ি নির্মাণে প্ল্যানসহ অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন হলেও গ্রামাঞ্চলে এ নিয়ম মানছে না কেউ। বিধিনিষেধ পালনে কঠোরতা না থাকায় জমি ভরাট করে প্রতিবছর শত শত বাড়িঘর তৈরি হচ্ছে। দশ বছর আগেও গ্রামাঞ্চলের রাস্তাঘাটের দু’ধারে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ছিল শুধু জমি আর জমি। এখন তা নেই। এমনকি বিল, জলাশয় ও প্লাবনভূমি পর্যন্ত ভরাট করে বাড়িঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। 
গ্রাম ঘুরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার হরিশ্বর তালুক মৌজার দেউলার বিলে ২৫ বছর আগে ৫ শতাধিক একর আবাদি জমি ছিল। কৃষকরা সেখানে ধান, পাটসহ অন্যান্য ফসলের চাষাবাদ করতেন। বর্ষাকালে পানি আর শুকনো মৌসুমে জমির আইল ছাড়া আর কিছুই দেখা যেত না বিলে। এখনকার চিত্র ভিন্ন। দুই সহস্রাধিক ঘরবাড়ি নির্মাণ করে মানুষ বসবাস করছে। যাতায়াতের জন্য তৈরি হয়েছে একাধিক কাঁচা-পাকা রাস্তা। খনন করা হয়েছে পুকুর। প্রতিবছর নতুন নতুন বাড়ি তৈরি হচ্ছে বিলে। একই অবস্থা চাকিরপশার বিল, ইটাকুড়ির দোলা, ঘড়িয়ালডাঙ্গা, জুগিদাহ, উকিলের ছড়া, খাউরিয়ার দোলা, বেদারজাল, জোকমারীর দোলাসহ ছোট-বড় ৩০টি বিল, জলাশয় ও প্লাবনভূমির। বর্ষাকালে এসব বিলে মাছ ও শুষ্ক মৌসুমে ধান চাষ হতো। এখন এগুলো সংকুচিত হয়েছে। চারধারে ভরাট করে মানুষ গড়ে তুলেছে বসতবাড়ি ও হাটবাজার। 
চাকিরপশার ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস ছালাম বলেন, নতুন বসতভিটা স্থাপন বা নির্মাণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়ার বিধান আছে। তবে রাজারহাটে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে খেয়ালখুশিমতো বসতবাড়ি নির্মাণ করায় ফসলি জমি কমে যাচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় এ প্রবণতা বাড়ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুন্নাহার সাথী বলেন, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা শক্তিশালী হলে অর্থনৈতিক অবস্থাও স্থিতিশীল থাকে। তখন বাজার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়। আর খাদ্য উৎপাদনের জন্য প্রয়োজন কৃষিজমি। সেই কৃষিজমিই কমছে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে কৃষিজমির বিকল্প নেই। 
ইউএনও মো.

আল ইমরান ফসলি জমিতে বসতবাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকের আর ইউনিয়নের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের অনুমতি নিতে হয়। যদি কেউ এ বিষয়ে অনুমতি না নেন, তাহলে সেটি বেআইনি হবে। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস থ বসতব ড় উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

রংপুরে হামলার ঘটনায় পাঁচজন গ্রেপ্তার: পুলিশ

রংপুরের গঙ্গাচড়ার আলদাদপুর বালাপাড়া গ্রামে ধর্ম অবমাননাকে কেন্দ্র করে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বসতবাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

আজ বুধবার সকালে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগ থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ কথা জানানো হয়।

আরও পড়ুনরংপুরে হামলার দুই দিন পরও মামলা হয়নি, প্রশাসনের উদ্যোগে বসতবাড়ি মেরামত২২ ঘণ্টা আগে

পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় গঙ্গাচড়া মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন একজন ভুক্তভোগী। মামলায় অজ্ঞাতনামা ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। পরে যৌথ অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আলদাদপুর গ্রামটি হিন্দু অধ্যুষিত। এটি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের সীমানা লাগোয়া। গঙ্গাচড়া থানা সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার গ্রামটির এক কিশোর ফেসবুকে মহানবী হজরত মুহাম্মদকে (সা.) নিয়ে অবমাননাকর লেখা ও ছবি পোস্ট করেছে, এমন অভিযোগ পায় পুলিশ। পরে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে আটক করে শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে থানায় আনা হয়। সাইবার সুরক্ষা আইনে মামলা করে পরদিন রোববার দুপুরে ওই কিশোরকে আদালতের মাধ্যমে সম্মিলিত শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

আরও পড়ুনগঙ্গাচড়ায় হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা মানবাধিকারের লঙ্ঘন, বিচার দাবি১৪ ঘণ্টা আগে

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই কিশোরকে থানায় নেওয়ার পর তার বিচারের দাবিতে মিছিলসহ উত্তেজিত লোকজন শনিবার তার বাড়ির সামনে যায়। রাত ১০টার দিকে দ্বিতীয়বার আরেকটি মিছিল এসে কিশোরের এক স্বজনের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করে। পরে রাতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

আরও পড়ুন২২টির মধ্যে ১৯টি পরিবার বর্তমানে নিজেদের বাড়িতে আছে: জেলা প্রশাসক২৯ জুলাই ২০২৫

স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, রোববার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে উত্তেজিত জনতা আবারও বাড়িঘরে হামলা শুরু করলে পুলিশ তাঁদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর করা হয়। এতে পুলিশের একজন কনস্টেবল গুরুতর আহত হন। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

গঙ্গাচড়া উপজেলা প্রশাসনের হিসাবে, এ ঘটনায় ১৫টি বসতঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে।

আরও পড়ুনরংপুরে হামলার শিকার পরিবারগুলো আতঙ্কে, বাড়ির মালামাল সরিয়ে নিচ্ছে২৮ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রংপুরে হামলার ঘটনায় পাঁচজন গ্রেপ্তার: পুলিশ
  • রংপুরে হামলার দুই দিন পরও মামলা হয়নি, প্রশাসনের উদ্যোগে বসতবাড়ি মেরামত