‘ফ্যাসিস্ট বিচারপতি’দের অপসারণ দাবিতে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সমাবেশ
Published: 21st, April 2025 GMT
‘ফ্যাসিস্ট বিচারপতি’দের অপসারণের দাবিতে সমাবেশ করেছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে আজ সোমবার দুপুরে এই সমাবেশ হয়।
‘ফ্যাসিস্ট বিচারপতিদের অপসারণ দাবিতে আইনজীবী সমাবেশ’: জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম, সুপ্রিম কোর্ট—ব্যানারে ওই সমাবেশ হয়।
সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। তিনি বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম, হাইকোর্টের যাঁরা বেগম খালেদা জিয়াকে বাড়ি ছাড়া করেছিলেন, দীর্ঘদিন আটকে রেখে তাঁকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছিলেন, আপনারা এখনো কীভাবে বসে আছেন? আমরা তো চিন্তা করেছিলাম, এই যে ফ্যাসিস্টের দোসররা পালিয়েছে, সেই সঙ্গে আপনারাও চলে যাবেন; কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, আপনারা এখনো যাননি। আপনাদের জন্য আবার আইনজীবী ফোরামকে রাস্তায় দাঁড়াতে হয়েছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিজেরা নিজে থেকে পদত্যাগ করে চলে যান।’
ফোরামের মহাসচিব ও বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, ‘পতিত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা একদিনে ফ্যাসিস্টে পরিণত হননি। রাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গ তাকে ফ্যাসিস্টে পরিণত করতে কাজ করেছে প্রত্যক্ষভাবে। অনেক বিচারপতি নির্লজ্জভাবে দলীয় মতাদর্শকে ধারণ করে শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট রেজিমকে প্রলম্বিত করার জন্য স্বেচ্ছায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অনেক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রায়, তাকে কারাগারে প্রেরণ সব কিছু ছিল শেখ হাসিনার নির্দেশে, কিছু কিছু বিচারক সে কাজটা করেছিলেন।’
ফ্যাসিস্ট হাসিনা ৫ আগস্ট পালাতে বাধ্য হয়েছিলেন উল্লেখ করে কায়সার কামাল বলেন, ‘আজ এপ্রিল মাস শেষের পথে। আমরা আশা করেছিলাম, ধারণা করেছিলাম, সেসব বিচারক—যাঁরা নিজেরাও জানেন শেখ হাসিনার ফ্যাসিজমকে প্রলম্বিত করার জন্য দিনে–রাতে মেধা–মনন দিয়ে পরিশ্রম করেছেন, কোনো কোনো বিচারক স্বাধীনতার মহান ঘোষক শহীদ জিয়াকে তাদের রায়ে ডাকাত বলে সম্বোধন করেছিলেন, আমরা বলেছিলাম বিবেকের তাড়নায় স্বেচ্ছায় এই পবিত্র অঙ্গন থেকে তারা চলে যাবেন। দুঃখনজক হলেও সত্য তারা এখনো বাড়িতে যাননি; বরং কিছু কিছু বিচারক আরও প্রমোশনের আশায় বহাল তবিয়তে আছেন। অনতিবিলম্বে তাদের ব্যাপারে যেন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের আহ্বায়ক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম বদরুদ্দোজা বাদলের সভাপতিত্বে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে অন্যদের মধ্যে ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব চ রপত আইনজ ব কম ট র কর ছ ল
এছাড়াও পড়ুন:
বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষা ২৮ জুন অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীদের সুবিধার জন্য লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির পরামর্শ প্রকাশ করা হচ্ছে। আজ পঞ্চম পর্বে থাকছে বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ বিষয়ে প্রস্তুতির পরামর্শ। পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী রিয়াজুর রহমান।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ মূলত আইনজীবীদের পেশাজীবনের অনুসরণীয় বিধিমালা। এ আইন থেকে আইনজীবী তালিকাভুক্তি লিখিত পরীক্ষায় দুটি প্রশ্ন আসবে। উত্তর দিতে হবে একটি। নম্বর থাকবে ১০।
প্রশ্নপত্রের মানবণ্টন দেখেই বোঝা যাচ্ছে আইনটি কেমন হতে পারে। মূলত বার কাউন্সিলের গঠন, আইনজীবী হওয়ার যোগ্যতা এবং একজন আইনজীবী হিসেবে সমাজের প্রতি, মক্কেলের প্রতি, সহকর্মীদের প্রতি যেসব দায়িত্ব পালন করতে হবে, তা এ আইনে বলা হয়েছে। বাস্তবধর্মী ও পেশাজীবনে অতি চর্চিত একটি আইন হলো বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২। এ আইন থেকে বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনা করলে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব।
যেমন বার কাউন্সিল কীভাবে গঠিত হয়, বার কাউন্সিলের কার্যবালি কী, সদস্যরা কীভাবে নির্বাচিত হন, কতগুলো কমিটি রয়েছে, কমিটির কাজ কী কী—এগুলো পড়তে হবে। অনেকেই আছে বার কাউন্সিল ও বার অ্যাসোশিয়েশনের মধ্যে পার্থক্য বোঝেন না। এটি ভালো করে রপ্ত করতে হবে। এমন প্রশ্ন হরহামেশা পরীক্ষায় আসে।
এ ছাড়া বার ট্রাইব্যুনালের গঠন ও কার্যাবলি, আইনজীবীদের পেশাগত অসদাচরণের জন্য কী কী ধরনের শাস্তি রয়েছে, বার কাউন্সিল কি আইনজীবীদের বিরুদ্ধে সুয়োমোটো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে—বিষয়গুলো কোনোভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না। অনুচ্ছেদ ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩২ এবং বিধি ৪১, ৪১ক ও ৫০–এ এসব বিষয়ে বিস্তারিত বলা আছে। সেগুলো ভালো করে পড়তে হবে। অনুসন্ধান করার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা, একজন আইনজীবী হিসেবে আরেক আইনজীবীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তর জানতে হবে। এসব বিষয় থেকে নিয়মিত প্রশ্ন আসে।
পেশাগত বিধি অংশে রচনামূলক প্রশ্ন আসতে পারে। যেমন পেশাগত বিধি এবং নীতিমালার আলোকে আদালতের প্রতি, মক্কেলের প্রতিসহ আইনজীবীদের প্রতি ও জনসাধারণের প্রতি একজন আইনজীবীর দায়িত্ব ও কর্তব্য পর্যালোচনা করতে বলা হয়। বর্তমান ঢাকা বারসহ বেশ কয়েকটি বার অ্যাসোশিয়েশনে এডহক কমিটি রয়েছে। এডহক বার কাউন্সিলের গঠন ও ফাংশনস সম্পর্কে প্রশ্ন আসতে পারে। এগুলো ভালো করে পড়তে হবে।
অনেক সময়ে আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরসংক্রান্ত মুসাবিদা করতে দেওয়া হয়। তাই এই মুসাবিদা নিয়মিত অনুশীলন করবেন। মনে রাখবেন, মামলার মুসাবিদা ও আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগের মুসাবিদার ধরন কিন্তু এক নয়। তাই যেকোনো ভালো একটি বই থেকে ফরমেটটি দেখে নেবেন এবং অনুশীলন করবেন। একই সঙ্গে বিগত কয়েক বছরের প্রশ্ন সমাধান করবেন। এ আইন থেকে বিগত বছরের প্রশ্ন রিপিটও হয়।
একটি বিষয় মনে রাখবেন, আইনটি সহজ বলে অবহেলা করার সুযোগ নেই। কারণ, কৃতকার্য হওয়ার জন্য এই ১০ নম্বর অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে।