ভারতে ওয়াক্ফ সংশোধনী আইন বাতিলের দাবিতে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে সহিংসতার ঘটনায় করা মামলা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। গতকাল সোমবার বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি এন কে সিংহের বেঞ্চ ওই মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এ সময় মামলাকারী আইনজীবীকে কড়া ভাষায় ধমকও দেন বিচারক। একই সঙ্গে আইনটি বাতিলের দাবিতে দেশটিতে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে। গত রোববার তেলেঙ্গানা রাজ্যে বড় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

গত ৮ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে গোটা ভারতে ওয়াক্ফ কার্যকর করা হলে মুর্শিদাবাদে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এতে তিনজন নিহত হয়। মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন জায়গায় বোমাবাজি, বাড়িঘর, দোকানপাটে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। রেলগেটে হামলা-ভাঙচুরসহ যানবাহনে আগুনও দেওয়া হয়। 

পরে ওই সহিংসতার তদন্ত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন আইনজীবী শশাঙ্ক শেখর ঝা। মামলায় তিনি সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে ঘটনার তদন্ত দাবি করেছিলেন। সেই মামলা এখন প্রত্যাহার করার নির্দেশ এলো। মামলাটি নিয়ে গতকাল একাধিক প্রশ্ন তুলেছে সুপ্রিম কোর্ট। কোন তথ্যের ভিত্তিতে মামলাটি করা হয়েছে, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। মামলায় দেওয়া ভুল তথ্য সংশোধন করে নতুন করে মামলার অনুমতি দিয়েছেন বিচারপতিরা। 

আদালত জানিয়েছেন, নাগরিকদের সমস্যা নিয়ে মামলার শুনানিতে আপত্তি নেই। কিন্তু এই মামলাটি শুধু সংবাদমাধ্যমের খবরের ওপর ভিত্তি করে করা হয়েছে। আদালতের বক্তব্য, যাদের ওপর অত্যাচার করা হয়েছে, যারা ঘরছাড়া হয়েছে, তাদের তথ্য মামলায় থাকতে হবে। তা না হলে অভিযোগের আইনি দিক স্পষ্ট হবে না।

এদিকে ওয়াক্ফ সংশোধনী আইনের সব দিক নিয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে গুরুত্ব সহকারে অধ্যয়ন করার আহ্বান জানিয়েছে দ্য হিন্দু। গণমাধ্যমটি তাদের সম্পাদকীয়তে লিখেছে, সরকার কিছু বিতর্কিত বিধানের ওপর জোর দেওয়ায় মুসলমানদের মধ্যে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। আইনে রাজ্যকে ওয়াক্ফ সম্পত্তির নিয়ন্ত্রণ গ্রহণের একতরফা ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এসব বিতর্কিত বিষয় সরকারকে বিবেচনা করার পরামর্শ দিয়েছে তারা। 

অন্যদিকে তেলাঙ্গানা রাজ্য সরকারের উপদেষ্টা মোহাম্মদ আলী শাব্বির গত রোববার নিজামবাদ শহরে আইনটি বাতিল দাবিতে সমাবেশে নেতৃত্ব দেন। তিনি মোদি সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, ওয়াক্ফ আইন সংশোধনের মাধ্যমে সরকার মুসলিমদের ধর্মীয় সম্পদ ও প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম সলম ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

কিউআর কোডসহ অনলাইন যাচাই ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ নিতে কমিটি গঠনের নির্দেশ

আমদানি করা পণ্যের ক্ষেত্রে কিউআর কোডসহ অনলাইন কেন্দ্রীয়ভাবে যাচাইয়ে যথাযথ পদ্ধতি প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ নিতে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। কমিটিকে তিন মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার রুলসহ এ আদেশ দেন।

‘বংশাল থেকে জনসন, সানসিল্কসহ দামি ব্র্যান্ডের নকল পণ্য জব্দ’ শিরোনামে ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রথম আলোর অনলাইনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ‘ঢাকার চারপাশে প্রকাশ্যেই বানানো হচ্ছে বিদেশি পণ্য’ শিরোনামে ২ এপ্রিল আরেকটি দৈনিকের অনলাইনে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

এ দুটিসহ এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মনিরুল ইসলাম মিয়াসহ ১০ আইনজীবী ২০ এপ্রিল রিটটি করেন।

রিটে আমদানি করা পণ্যের ক্ষেত্রে কিউআর কোডসহ অনলাইনে কেন্দ্রীয় যাচাই ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং ভোক্তার অধিকার সুরক্ষা, জনস্বাস্থ্য ও রাজস্ব হারানো রোধে অনুমোদিত আমদানিকারকদের অন্তর্ভুক্ত করে একটি জাতীয় ডেটাবেজ তৈরিতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা চ্যালেঞ্জ করা হয়।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অন্যতম রিট আবেদনকারী আইনজীবী মো. মনিরুল ইসলাম মিয়া, রাগীব কবির ও আরফান সুলতানা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান ও শফিকুর রহমান এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।

রুলে গণমাধ্যমে আসা বিভিন্ন প্রতিবেদনের আলোকে আমদানি করা পণ্যের ক্ষেত্রে কিউআর কোডসহ অনলাইনে কেন্দ্রীয় যাচাই ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং ভোক্তার অধিকার সুরক্ষা, জনস্বাস্থ্য ও রাজস্ব হারোনো রোধে অনুমোদিত আমদানিকারকদের অন্তর্ভুক্ত করে একটি জাতীয় ডেটাবেজ করতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না—তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

আমদানি করা পণ্যের ক্ষেত্রে কিউআর কোডসহ অনলাইনে কেন্দ্রীয় যাচাই ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং ভোক্তার অধিকার সুরক্ষা, জনস্বাস্থ্য ও রাজস্ব হারোনো প্রতিরোধে অনুমোদিত আমদানিকারকদের অন্তর্ভুক্ত করে একটি জাতীয় ডেটাবেজ তৈরি করতে কমিটি গঠন করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না—রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।

বাণিজ্যসচিব, অর্থসচিব, আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তরের প্রধান নিয়ন্ত্রক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান, বিএসটিআই ও ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক—এই সাত বিবাদীকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

হাইকোর্ট সাত বিবাদীকে ওই কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান আইনজীবী মো. মনিরুল ইসলাম মিয়া। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, কমিটিকে তিন মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। বাজারে প্রচুর অনুমোদিত ও নকল পণ্য বিক্রি হচ্ছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি; বিশেষত শিশুস্বাস্থ্য সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এতে করে সরকারও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে।

রিট আবেদনকারী আরও বলেন, এসব কারণে কিউআর কোডসহ কেন্দ্রীয় অনলাইন যাচাই ব্যবস্থা চালু এবং অনুমোদিত আমদানিকারকদের অন্তর্ভুক্ত করে জাতীয় ডেটাবেজ তৈরির নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়।

রিট আবেদনকারী আইনজীবীরা হলেন—মো. মনিরুল ইসলাম মিয়া, মো. রোকনুজ্জামান, রাগিব কবির, আবু শাহেদ, রেহেমিন চৌধুরী, আরফান সুলতানা, মো. সাইফুল ইসলাম, হাসান ইসহাক ভূঁইয়া, মো. আরিফ চৌধুরী ও উম্মে আইমান জেনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাগুরায় শিশু ধর্ষণ-হত্যা মামলায় সাক্ষ্য ৩ চিকিৎসকের
  • শ্রম আদালতে ঝুলছে ২২ হাজার মামলা
  • মাওলানা রইস হত্যার বিচার দাবি জানিয়ে ১০২ নাগরিকের বিবৃতি
  • বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও কিশোর গ্যাংয়ের মামলায় আসামিপক্ষে সরকারি আইনজীবীদের না দাঁড়ানোর নির্দেশ
  • চিন্ময় দাসের জামিন স্থগিতের আদেশ প্রত্যাহার, রোববার ফের শুনানি
  • চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন, শুনানি হতে পারে রোববার
  • আনিসুল-সালমান-মামুন রিমান্ডে, নতুন মামলায় গ্রেপ্তার আতিক
  • তদন্ত ছাড়া সরকারি কর্মচারীকে আট দিনে চাকরিচ্যুত করা যাবে
  • আবারও নিরপরাধ দাবি হিটু শেখের, ভিন্ন কথা সাক্ষীদের
  • কিউআর কোডসহ অনলাইন যাচাই ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ নিতে কমিটি গঠনের নির্দেশ