গাজীপুরে হত্যা মামলায় দীপু মনি ও পলক আদালতে, ফাঁসির দাবিতে স্লোগান ও ডিম নিক্ষেপ
Published: 22nd, April 2025 GMT
গাজীপুরে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে হত্যার অভিযোগে করা তিনটি মামলায় সাবেক মন্ত্রী দীপু মনি ও কামরুল ইসলাম, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদসহ (পলক) ছয়জনকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার গাজীপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩–এ হাজির করা হলে বিচারক ওমর হায়দার এসব মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এদিকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আসামিদের কারাগারে নেওয়ার সময় জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতা-কর্মীরা আদালত চত্বরে ফাঁসির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। এ সময় আসামিদের উদ্দেশ্য করে ডিম নিক্ষেপ করা হয়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, অভ্যুত্থানের সময় গাজীপুরের গাছা এলাকায় ছয়জন নিহত হন। এ ঘটনায় গাছা থানায় আলাদা তিনটি হত্যা মামলা করা হয়। এসব মামলার আসামি সাবেক মন্ত্রী দীপু মনি, সাধন চন্দ্র মজুমদার, কামরুল ইসলাম ও প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান ও ব্যাংক কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম। আজ সকালে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে দীপু মনি, সাধন চন্দ্র মজুমদার, জুনায়েদ আহমেদকে এবং কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কামরুল ইসলাম, জিয়াউল আহসান ও নজরুল ইসলামকে দুটি পুলিশ প্রিজন ভ্যানে আদালতে হাজির করা হয়। সংক্ষিপ্ত শুনানি শেষে বিচারক ওই মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গাছা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তিনটি মামলার শুনানির দিন আজ ধার্য করা হয়েছিল। সকালে ছয়জনকে কারাগার থেকে গাজীপুর আনা হয়েছিল। বেলা সোয়া ১১টার দিকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদাল-৩–এ শুনানি শেষে আবার তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আদালত চত্বরে শ্লোগান ও ডিম ছুড়ে মারার বিষয়ে জানতে চাইলে আদালত পুলিশের পরিদর্শক আহসান উল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আমি আদালতের এজলাসের ভিতরে ছিলাম। ডিম ছোড়ার বিষয়টি বলতে পারব না। তবে আইনজীবীরা বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিয়েছেন। শুনতে পেরেছি।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পটিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র বাবুল কারাগারে
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার মামলায় পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও পটিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র আইয়ুব বাবুলকে (৫৯) কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হলে তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করেন। পরে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ নুরুল ইসলাম জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আইয়ুব বাবুল পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের মহল্লা বাড়ির মৃত আমিনুর রহমানের ছেলে।
জানা যায়, গত বছরের ৪ আগস্ট দুপুরে পটিয়া পৌরসদর এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রদের ওপর হামলা চালায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন।
এ ঘটনায় গত বছরের ১৯ আগস্ট দুপুরে পটিয়া আল জামিয়া আল ইসলামিয়া জমিরিয়া কাসেমুল উলুমের (পটিয়া মাদরাসা) ছাত্র মো. নুরুল হাসান ৭৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় ২৫০-৩০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই মামলায় আইয়ুব বাবুল এজাহারনামীয় আসামি। এছাড়াও বিএনপি অফিসে হামলা ভাঙচুর ও লুটপাট, বিস্ফোরক ও হত্যাচেষ্টাসহ আরও তিনটি মামলার তিনি এজাহারনামীয় আসামি ছিলেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুর রশিদ সমকালকে বলেন, ‘পটিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র আইয়ুব বাবুল হাইকোর্ট থেকে ৮ সপ্তাহের অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে ছিলেন। মঙ্গলবার নিম্ন আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে বিচারক তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।’
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আইয়ুব বাবুল বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা একাধিক মামলার আসামি।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পটিয়া পৌরসভা নির্বাচনে পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. আইয়ুব বাবুল নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রথম বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ভোট পেয়েছিলেন ১৪ হাজার ৮৩৬টি। অন্যদিকে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপির প্রার্থী নুরুল ইসলাম সওদাগর পেয়েছিলেন ১ হাজার ৪৯৪ ভোট।