আওয়ামী লীগের বিচার ও দলটির রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ, সংস্কার এবং গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। যারা আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে ফেরাতে চায়, সমাবেশ থেকে তাদের প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছেন দলটির নেতারা।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর খামারবাড়ি এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেন এনসিপির নেতা–কর্মীরা। এনসিপির বৃহত্তর তেজগাঁও ও শেরেবাংলা নগর জোন এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। কর্মসূচির শুরুতে খামারবাড়ি এলাকায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়।

এ সময় আওয়ামী লীগের বিচার, নতুন সংবিধান প্রণয়ন এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা পূরণে কাজ করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান আদিব। তিনি বলেন, ‘এই অভ্যুত্থানের শহীদেরা আপনাদের ক্ষমতায় বসিয়েছে, তাঁদের কথা শুনুন।’

সমাবেশে এনসিপির সংগঠক মুনতাসির মাহমুদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ছাত্র হত্যাকারী সংগঠন, তারা ৫ মে আলেমদের হত্যাকারী সংগঠন, তারা দেশপ্রেমিক সৈনিকদের হত্যাকারী সংগঠন—আমরা তাদের ফিরতে দেব না।’

এ সময় রক্তের বিনিময়ে পাওয়া স্বাধীনতার পর এখনো বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি চলছে অভিযোগ করে মুনতাসির মাহমুদ বলেন, ‘এখনো ফার্মগেট এলাকায় চাঁদাবাজি চলছে। আমরা চাঁদাবাজদের এ কাজ করতে দেব না। এ ছাড়া যারা আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনতে চায়, আমরা তাদের প্রতিহত করব।’

এনসিপির সংগঠক এস এম শোয়াইব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আবার বাংলাদেশ নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাদের অবিলম্বে বিচারের আওতায় এনে শহীদদের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে শহীদদের রক্তের ওপর গঠিত সরকার উল্লেখ করে শোয়াইব বলেন, ‘আপনাদের দায়িত্ব হচ্ছে গণহত্যার বিচার করা, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা। কিন্তু এখন আমরা শুনতে পাচ্ছি, বাংলাদেশে নাকি আওয়ামী লীগকে মিছিল করার জন্য রাস্তা ভাড়া দেওয়া হচ্ছে।’

এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো.

আতাউল্লার সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য আরও বক্তব্য দেন যুগ্ম সদস্যসচিব সালেহ উদ্দিন সিফাত, মো. আলাউদ্দিন, মো. নিজামউদ্দিন ও আকরাম হুসেইন, সংগঠক ইমরান ইমন, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক সাইফুল্লাহ হায়দার, তেজগাঁও থানার আহ্বায়ক মো. ইরান প্রমুখ।

সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল ফার্মগেট এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। এ সময় ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’, ‘গণহত্যার বিচার চাই, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চাই’, ‘শেখ হাসিনার বিচার চাই, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চাই’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এনস প র এল ক য় স গঠক আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনার সঙ্গে আসামি ৮ প্রাক্তন ভিসিসহ ২০১ জন

ঢাকার সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার এক ছাত্রকে ‘হত্যাচেষ্টা’র অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানাসহ ২০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য, শিক্ষক, সাংবাদিক, অভিনেতা-অভিনেত্রীদেরও আসামি করা হয়েছে। 

ঢাকা মহানগর হাকিম মনিরুল ইসলাম বুধবার অভিযোগটি আমলে নিয়ে শাহবাগ থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। গত ২০ মার্চ সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার ছাত্র সাইফুদ্দিন মোহাম্মদ এমদাদের পক্ষে ছাত্রদলের সাবেক নেতা এম এ হাশেম রাজু আদালতে এ মামলার আবেদন করেন। 

মামলায় অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন– শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সালমান এফ রহমান, আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ প্রমুখ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্যসহ কয়েকজন শিক্ষক আছেন আসামির তালিকায়। তারা হলেন– ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আখতারুজ্জামান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. হারুন-অর-রশিদ, ঢাবি শিক্ষক অধ্যাপক মেসবাহ কামাল ও অধ্যাপক আবু জাফর মো. শফিউল আলম ভূঁইয়া, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য মুহম্মদ জাফর ইকবাল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য আনোয়ার হোসেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য মীজানুর রহমান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য আবদুল মান্নান, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য এম অহিদুজ্জামান, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ড. অনুপম সেন, সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান, নঈম নিজাম, শ্যামল দত্ত, মোজাম্মেল বাবু, আলমগীর হোসেন, আবেদ খান প্রমুখ।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে– ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গত ৪ আগস্ট সকালে মামলার বাদী এম এ হাশেম রাজুর নেতৃত্বে একটি মিছিল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে পরীবাগে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনের মোড়ে এসে পৌঁছায়। তখন ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী পথরোধ করে ছাত্র-জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষণ, হাতবোমা, পেট্রোল বোমা ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। এ গুলিতে আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সাইফুদ্দিন মোহাম্মদ এমদাদের ডান চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। 

এদিকে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে আব্দুন নূর নামে এক সাংবাদিক নিহতের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাসহ ১৬২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। নিহতের বাবা হাফেজ আবুল বাশার গত মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম এম মিজবাউর রহমানের আদালতে এ মামলা করেন। 

মামলায় অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন– সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, হাছান মাহমুদ, সালমান এফ রহমান প্রমুখ। 

মামলার বাদী আবুল বাশার বলেন, আব্দুন নূর ময়মনসিংহের গফরগাঁও এলাকায় অভিযান নিউজ নামে পত্রিকার রিপোর্টার ছিল। আন্দোলনের সময় ১ আগস্ট সে ঢাকায় আসে এবং যাত্রাবাড়ীতে ৫ আগস্ট গুলিতে মারা যায়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ