ভারতের যোগগুরু বাবা রামদেব দিল্লির একটি আদালতকে বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বী অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের পানীয় নিয়ে তিনি যে বিতর্কিত বিজ্ঞাপন তৈরি করেছেন, তা তিনি সরিয়ে নেবেন। আদালত রামদেবের ওই বিজ্ঞাপনকে ‘ন্যায়সংগত নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন।

সম্প্রতি রামদেব তাঁর কোম্পানি পতঞ্জলির একটি মিষ্টি পানীয়র প্রচারের জন্য একটি ভিডিও তৈরি করেছেন। ওই ভিডিওতে তিনি কোনো প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ না করে দাবি করেন, কয়েকটি ব্র্যান্ড তাদের লভ্যাংশ দিয়ে মসজিদ ও মাদ্রাসা নির্মাণ করে।

তবে রামদেবের ভিডিওর বক্তব্য থেকে বোঝা যাচ্ছিল, তিনি রুহ আফজার কথাই বলছেন। হামদর্দ ল্যাবরেটরিজের তৈরি জনপ্রিয় মিষ্টি পানীয় রুহ আফজা শত বছরের বেশি সময় ধরে তৈরি হয়ে আসছে। হামদর্দ ল্যাবরেটরিজ একটি ইসলামিক দাতব্য সংস্থা।

রামদেবের ওই ভিডিও অনলাইনে ভাইরাল হলে এ নিয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়। ওই বিজ্ঞাপন সরিয়ে নিতে হামদর্দ একটি মামলা করে।

রুহ আফজা অ্যালকোহলবিহীন একটি মিষ্টি পানীয়, এটিকে শরবত বলা হয়। রুহ আফজা ফলের সিরাপ আকারে বাজারজাত করা হয়। ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে এই পানীয়টি বেশ জনপ্রিয়।

১৯০৬ সালে হামদর্দ প্রথম রুহ আফজা বাজারে আনে। সাধারণত দুধ বা পানিতে এই সিরাপ মিশিয়ে শরবত তৈরি করা হয়। মুসলিমদের মধ্যে রুহ আফজার শরবত দারুণ জনপ্রিয়। বিশেষ করে ইফতারিতে রুহ আফজা খাওয়ার প্রচলন থাকায় পবিত্র রমজান মাসে এই পানীয়র বিক্রি বহুগুণ বেড়ে যায়।

রামদেব তাঁর ভিডিওতে ‘শরবত জিহাদ’ শব্দ দুটি ব্যবহার করেছেন।

গতকাল মঙ্গলবার দিল্লি হাইকোর্টের একজন বিচারক রামদেবের ওই মন্তব্যকে ‘অসমর্থনযোগ্য’ বলে বর্ণনা করেছেন।

আইনবিষয়ক ওয়েবসাইট ‘লাইভ ল’-তে থাকা তথ্য অনুযায়ী বিচারপতি অমিত বানসাল বলেন, ‘এটা আদালতের বিবেককে নাড়া দিয়েছে।’

আদালত রামদেবকে পাঁচ দিনের মধ্যে একটি হলফনামা দাখিল করতেও বলেছেন। যে হলফনামায় বলতে হবে, তিনি ভবিষ্যতে আর কখনো এমন কোনো বিবৃতি, বিজ্ঞাপন অথবা বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেবেন না।

এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১ মে।

হামদর্দের আইনজীবী মুকুল রোহাতগি বলেন, রামদেবের এই বক্তব্য কোনো পণ্যের সমালোচনা করার চেয়েও বেশি কিছু এবং এমন বক্তব্য ‘সাম্প্রদায়িক বিভাজনকে’ তুলে ধরে। তিনি রামদেবের মন্তব্যকে ‘বিদ্বেষমূলক বক্তব্য’ বলে উল্লেখ করেন।

রামদেব ও পতঞ্জলির আইনজীবী রাজীব নায়ার বলেন, তাঁর মক্কেল কোনো ধর্মের বিপক্ষে নন এবং ওই বিজ্ঞাপন সরিয়ে নেওয়া হবে।

আরও পড়ুনপতঞ্জলি নিয়ে ভালোই বিপদে পড়েছেন ভারতের যোগগুরু বাবা রামদেব১১ মে ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র মদ ব র হ মদর দ র হ আফজ কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

আনিসুল-সালমান-মামুন রিমান্ডে, নতুন মামলায় গ্রেপ্তার আতিক

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পৃথক হত্যা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, পুলিশের সাবেক আইজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। ঢাকার উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামসহ পাঁচ জনকে নতুন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জামসেদ আলম শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা তাদের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড এবং গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। আদালত আসামিদের উপস্থিতিতে রিমান্ড ও গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে শুনানির জন্য ২৯ এপ্রিল ধার্য করেন। এদিন শুনানিকালে তাদের আদালতে হাজির করা হয়। প্রথমে রিমান্ডের বিষয়ে শুনানি হয়।

ভাটারা থানার মনির হোসেন হত্যা মামলায় সালমান এফ রহমানের পাঁচ দিন, বাড্ডা থানার আব্দুল জব্বার হত্যা মামলায় আনিসুল হকের তিন দিন এবং যাত্রাবাড়ীতে মো. রাসেল হত্যা মামলায় চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের পক্ষে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে শুনানি করেন। সালমান এফ রহমান এবং আনিসুল হকের পক্ষে আইনজীবীরা শুনানি করেননি।

শুনানি শেষে আদালত সালমান এফ রহমানের তিন দিন, আনিসুর হকের দুই দিন এবং চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন আদালত।

এদিকে, আদালত সূত্রে জানা গেছে, কদমতলী থানার এক মামলায় চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, আনিসুল হক, সালমান এফ রহমানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। 

যাত্রাবাড়ী থানার চার মামলায় সালমান এফ রহমানকে, একই থানার ছয় মামলায় আনিসুল হককর, যাত্রাবাড়ী থানার পাঁচ মামলায় মামুনকে, বাড্ডা থানার এক মামলায় আতিকুল ইসলাম ও নিয়াজ মোর্শেদ ওরফে নিয়াজ মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তবে নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারকে আদালতে হাজির করা হলেও তদন্তকারী কর্মকর্তা উপস্থিত না হওয়ায় তার বিষয়ে শুনানি হয়নি।

এর আগেও কয়েক দফা তাদের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ। গত ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে আওয়ামী লীগ ও শরিক দলের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার হচ্ছেন।

ঢাকা/এম/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাগুরায় শিশু ধর্ষণ-হত্যা মামলায় সাক্ষ্য ৩ চিকিৎসকের
  • শ্রম আদালতে ঝুলছে ২২ হাজার মামলা
  • মাওলানা রইস হত্যার বিচার দাবি জানিয়ে ১০২ নাগরিকের বিবৃতি
  • বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও কিশোর গ্যাংয়ের মামলায় আসামিপক্ষে সরকারি আইনজীবীদের না দাঁড়ানোর নির্দেশ
  • চিন্ময় দাসের জামিন স্থগিতের আদেশ প্রত্যাহার, রোববার ফের শুনানি
  • চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন, শুনানি হতে পারে রোববার
  • আনিসুল-সালমান-মামুন রিমান্ডে, নতুন মামলায় গ্রেপ্তার আতিক
  • গরমে পেট ঠান্ডা রাখতে উপকারী ছাতুর নানা পানীয়
  • জুলাই আন্দোলনে হামলা মামলার আসামিও হলেন বাদী
  • অতিরিক্ত গরমে পেট ঠান্ডা রাখবেন যেভাবে