রাজশাহী নগরের চৌদ্দপায় এলাকার ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক। দুপুর রোদে সড়কটির পাশেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়াল তৈরি করছেন একদল শ্রমিক। তপ্ত রোদ থেকে বাঁচতে কেউ মাথায় বেঁধেছেন মাথায় গামছা, কেউ পরেছেন ক্যাপ। এর মধ্যে গরমে হাঁসফাঁস করতে করতে মাশরাফি নামের এক তরুণ শ্রমিক জানালেন, ‘আজ তাপমাত্রা এত যে গা পুড়ে যাচ্ছে। মাথায় কিছু না দিলে মনে হয়, চুলে আগুন ধরে গেছে।’

সেখানে আরও কয়েকজন শ্রমিকের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা বলেন, এমন গরমে কাজ করতে তাঁদের বেশ অস্বস্তি বোধ হচ্ছে। নিরুপায় হয়ে বারবার পানি পান করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

শ্রমিকদের যখন এই প্রতিবেদকের কথা হচ্ছিল, তখন ঘড়ির কাঁটা দুপুর ১২টা পেরিয়েছে। ওই সময় রাজশাহীতে তাপমাত্রার পারদ উঠে গেছে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এর আগের দিন গতকাল মঙ্গলবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি ছিল গত দিনে দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। আজ বেলা তিনটার দিকে জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করে রাজশাহী আবহাওয়া অফিস। এটি চলতি মৌসুমের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এর আগে গত ২৮ মার্চ ৩৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬-৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মৃদু তাপপ্রবাহ, ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মাঝারি তাপপ্রবাহ, ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা এর বেশি হলে তাকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়। সেই হিসেবে রাজশাহীতে আজ মাঝারি তাপপ্রবাহ চলছে। রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সহকারী পর্যবেক্ষক তারেক আজিজ বলেন, আজ রাজশাহীতে মাঝারি তাপপ্রবাহ বইছে। এটি অব্যাহত থাকতে পারে।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীতে সর্বশেষ ১৮ এপ্রিল ২ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এর আগে জেলাটিতে চলতি বছরের সর্বোচ্চ ২৩ দশমিক ৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। গত ১৮ এপ্রিল বৃষ্টির পর দুই দিন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ছিল। গত দুই দিন তাপমাত্রা কম থাকলেও গরমের তীব্রতাও ছিল।

নগরের শালবাগান এলাকায় কথা হয় রিকশাচালক মো.

রহমতের সঙ্গে। তিনি রিকশা চালিয়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। তিনি বলেন, রাতে প্রচণ্ড তাপমাত্রার কারণে মাথাব্যথা করেছে। দিনের বেলাতেও প্রচুর তাপমাত্রা। পানি পান করেও স্বস্তি মিলছে না।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র কর ড কর স লস য় স দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না, মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন: সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, 'আমাদের একটা অভ্যাস হয়ে গেছে একটা নেতিবাচক সংবাদ দেখলেই যাচাই-বাছাই না করে শেয়ার করে দেওয়া হয়। অত্যন্ত ভিত্তিহীন সংবাদও আমরা শেয়ার করে দেই।'

সিইসি বলেন, 'দয়া করে সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না। এই মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন। তথ্যটা যেন আগে যাচাই করে তারপরে শেয়ার করেন।'

আজ সোমবার রাজধানীর ভাটারায় আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নে (এজিবি) এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন সিইসি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ভুয়া সংবাদের প্রচার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপপ্রয়োগ রোধে করণীয় সম্পর্কে তিনি এসব কথা বলেন।

থানা আনসার কোম্পানি/প্লাটুন সদস্যদের আনসার মৌলিক প্রশিক্ষণের (৪র্থ ধাপ) সমাপনী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিইসি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো সংবাদ দেখা মাত্রই নাগরিকদের যাচাইবাছাই করতে আহ্বান জানান সিইসি। নিশ্চিত হওয়ার আগে শেয়ার না করতে বলেন তিনি।

জাতীয় নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে আনসার ভিডিপির ভূমিকাকে মূল শক্তি বলে উল্লেখ করেন সিইসি। তিনি বলেন, 'এনারাই অধিক সংখ্যায় নিয়োজিত থাকেন। এবং আমাদের হিসেব করতে গেলে প্রথম এদেরকেই হিসেব করতে হয় যে, কতজন আনসার ভিডিপি সদস্য আমরা মোতায়েন করতে পারব। মূল কাজটা আঞ্জাম (সম্পাদন) দিতে হয় কিন্তু আনসার এবং ভিডিপির সদস্যদের।'

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। নির্বাচনকালীন জনগণের নিরাপত্তা, ভোট কেন্দ্রের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা এবং সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণে আনসার বাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছে বলে জানান তিনি। নির্বাচনে দেশজুড়ে প্রায় ৬ লাখ আনসার ও ভিডিপি সদস্য দায়িত্বপালন করবেন বলেন মহাপরিচালক।

অনুষ্ঠানে মহড়ায় ঢাকা মহানগর আনসারের চারটি জোনের অধীন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৩২০ জন আনসার ও ভিডিপি সদস্য অংশ নেন।  আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নের সদস্যরা টহল, দায়িত্ব বণ্টন ও জরুরি প্রতিক্রিয়া অনুশীলনে অংশ নেন।

মহড়ায় ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জামাদি নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া, ভোটারদের শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে ভোট প্রদানে সহায়তা, জাল ভোট প্রতিরোধ, প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা এবং সেনা, বিজিবি, র‍্যাব ও পুলিশের সঙ্গে দ্রুত সমন্বয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন জোনের অধিনায়ক এবং প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ