রাজউকের বোর্ডে আমলা থাকলে চলবে না, বিশেষজ্ঞ রাখতে হবে: উপদেষ্টা রিজওয়ানা
Published: 23rd, April 2025 GMT
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে জনবান্ধব ও যুগোপযোগী করতে টাউন ইমপ্রুভমেন্ট অ্যাক্ট ও বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন অ্যাক্ট নতুন করে প্রণয়ন করতে হবে। অল্প পরিবর্তনে কাজ হবে না। সময় ও বাস্তবতার চাহিদায় প্রয়োজনীয় কিছু রেখে নতুন করে প্রণয়ন করতে হবে। রাজউকের বোর্ডে কেবল আমলা থাকলে চলবে না। বোর্ডে শহর পরিকল্পনায় দক্ষ বিশেষজ্ঞ রাখতে হবে। ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করে কাজ করতে হবে।
আজ বুধবার বিকেলে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, রাজউক চেয়ারম্যানের রেসিডেনশিয়াল ভবনকে কমার্শিয়াল করার ক্ষমতা রহিত হওয়া উচিত। মহাপরিকল্পনার বাইরে না গিয়েই বোর্ড এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
তিনি বলেন, ঢাকা শহরের জন্য একটি নতুন ভিশন দরকার। সেই ভিশনে সিভিল সোসাইটি, রাজউক ও সাধারণ মানুষের মতামত প্রতিফলিত হওয়া উচিত। জনগণের সেবা বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে, যাতে ঢাকার ওপর চাপ কমে। রাজউক কি ডেভেলপার না রেগুলেটর—তা পরিষ্কারভাবে নির্ধারণ করতে হবে। রাজউককে আর হাউজিং করতে দেওয়া যাবে না। গৃহহীনদের জন্য ঘরের ব্যবস্থা হতে পারে, ধনীদের জন্য নয়।
তিনি বলেন, গোটা এলাকাভিত্তিক মাস্টারপ্ল্যান করতে হবে। বেসরকারি হাউজিং নিয়ন্ত্রণের প্রয়াস আগে ছিল না, এখন তা জরুরি। রাজউককে রাজনৈতিক চাপে রাখা যাবে না।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, পূর্বাচলের জমি ধ্বংসের সমালোচনা করে বলেন, মন্ত্রী-এমপিদের জন্য হাউজিং করার যৌক্তিকতা নেই। রাজউককে জাতীয় ও নির্মিত ঐতিহ্য রক্ষায় কাজ করতে হবে। নগরবাসীর জীবনমান উন্নয়ন রাজউকের দায়িত্ব। রাজউকের ভবনটিও আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, প্রতিটি প্রকল্পের এক্সিট প্ল্যান থাকতে হবে। রাজউক ও এস্টেট ডিপার্টমেন্টকে জনসেবামুখী হতে হবে। সেবা ডিজিটালাইজ করতে হবে। অভিযোগ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা কার্যকর করতে হবে। সুপারভিশন আউটসোর্স করতে হবে। বাইরের বিশেষজ্ঞ দিয়ে অডিট করাতে হবে।
উপদেষ্টা বলেন, তোতাইল বিলের মতো জলাশয় পুনঃখনন করতে হবে। হাউজিং প্রকল্প শেষ হওয়ার পরও মনিটরিং চালু রাখতে হবে। রাস্তার পাশে গাছ লাগাতে হবে। এলাকা না বাড়িয়ে সুপারভিশন বাড়াতে হবে। সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাকে তাদের কাজ করতে দিতে হবে।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, মন্ত্রণালয়ের সচিব মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পর ব শ উপদ ষ ট র জউক র জউক র উপদ ষ ট র জন য পর ব শ মন ত র ন করত জ করত
এছাড়াও পড়ুন:
লন্ডন বৈঠকে বিচার ও সংস্কারের বিষয়টি নির্বাচনের মতো গুরুত্ব না পাওয়া অত্যন্ত হতাশাজনক: এনসিপি
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি বলে মনে করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বিষয়টিকে ‘অত্যন্ত হতাশাজনক’ বলেছে দলটি।
আজ শুক্রবার রাতে এনসিপির এক বিবৃতিতে এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহউদ্দিন সিফাত বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন।
এনসিপির বিবৃতিতে বলা হয়, রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা হিসেবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের আলোচনাকে ইতিবাচকভাবে দেখছে এনসিপি। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে লন্ডনে অনুষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার বৈঠকটি ‘সংসদ নির্বাচন’ বিষয়ে দলটিকে আস্থায় আনতে সফল হয়েছে সরকার। জাতীয় ঐক্য, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং রাষ্ট্র সংস্কারের প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি। কিন্তু বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে নাগরিকদের প্রধান দাবি তথা বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি। এটা অত্যন্ত হতাশাজনক বলে মনে করে এনসিপি।
নির্বাচন প্রশ্নে সরকার কেবল একটি রাজনৈতিক দলের অবস্থান ও দাবিকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে বলে বারবার প্রতীয়মান হচ্ছে—এ কথা উল্লেখ করে এনসিপি আরও বলেছে, জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, জুলাই সনদ কার্যকর করা এবং বিচারের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন গণ-অভ্যুত্থানকে স্রেফ একটি ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে পরিণত করবে এবং রাষ্ট্র বিনির্মাণের জন–আকাঙ্ক্ষাকে অবদমিত করবে।
জনগণের দাবি তথা জুলাই সনদ রচনা ও কার্যকর করার আগে নির্বাচনের কোনো তারিখ ঘোষিত হলে তা জনগণ মেনে নেবে না বলে উল্লেখ করেছে এনসিপি। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কাজেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সংস্কারের বিষয়গুলোর ব্যাপারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা ও জুলাই সনদ রচনা এবং কার্যকর করেই আসন্ন জুলাইকে যথাযথ মর্যাদায় স্মরণ করার উদ্যোগ নিতে সরকারকে জোর দাবি জানাচ্ছে এনসিপি।’
জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়নে জুলাই সনদ কার্যকর করা ও বিচারের রোডম্যাপ ঘোষণার পরই নির্বাচন সংক্রান্ত আলোচনা চূড়ান্ত হওয়া উচিত বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে এনসিপি।