Prothomalo:
2025-11-03@07:36:30 GMT

লাল ফলে রাঙা হাসি ‘উদাল’গাছে

Published: 24th, April 2025 GMT

তখন ধীরে ধীরে রোদ বাড়ছে। সকালের হালকা রোদে জড়িয়ে আছে মিঠে ভাব। একটা কোমল শান্তি-প্রশান্তি আছে প্রকৃতিতে, শহরের এলোমেলো দালানকোঠার অলিতে-গলিতে। পথের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা গাছে গাছে মৃদু হাওয়ার টোকা, পাতায় শান্ত কোলাহল ফুটছে।

এ রকম শান্ত সময়টিতে একটা জায়গায় চোখ আটকে যায়। সেই ‘তোমার অশোকে কিংশুকে/ অলক্ষ্য রঙ লাগল আমার অকারণের সুখে’.

..রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মনের ভেতর স্তব্ধতা ভেঙে বেজে উঠলেন, গুনগুনিয়ে উঠল কথামালা, সুর। জায়গাটিতে আরও কিছু গাছের ভেতরে একটি গাছে থোকা থোকা আগুনের মৃদু শিখা যেন থমকে আছে, দুলছে। গাছটির ডালে কোনো পাতা নেই। দূর থেকে দেখেও মনে হয় ‘চিনি উহারে’। দেখতে অশোক-কিংশুক মনে হলেও ওটা তা নয়, ওটা অন্য কিছু।

মৌলভীবাজার শহরের কোর্ট রোড থেকে পশ্চিম দিকে একটু ভেতরে, কোদালীছড়ার উত্তর পাশে শরীরভরা থোকা থোকা লালে রঙিন হয়ে আছে গাছটি। দুই পাশে সবুজ আরও কিছু গাছপালা আছে। সেই সবুজের ভেতর গাছটি আলাদা। ওটা আসলে একটি ‘উদাল’গাছ। গাছটি অনেকের কাছেই অচেনা। শহর, গ্রাম কোনোখানেই খুব বেশি চোখে পড়ে না এখন উদাল। আর গাছের ডালে ডালে লাল রঙের যেটুকু উচ্ছ্বাস, তা এই গাছের ফুল নয়। এগুলো উদালগাছের ফল। ফুল অন্য রকম। ফুল কমলা-হলুদে মাখা, ঝুলন্ত মঞ্জরিতে গুচ্ছবদ্ধ থাকে। এখন ফুল নেই, ফুল ঝরে গেছে।

২০১২ সালের বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-৪ অনুযায়ী উদাল প্রজাতি সংরক্ষিত।

ফুল যে ঝরে গেছে, তা দেখা গেছে শহরের আরও দু-একটি গাছে। তার একটি মৌলভীবাজার শহরের মুসলিম কোয়ার্টারে। একটি বাসার গাছে তখন লাল ফল ঝুলছিল। এক সকালবেলা গাছটিতে দেখা গেছে, অনেকগুলো কাঠশালিক ফলের ওপর এসে বসছে, এ–ডাল থেকে ও–ডালে উড়ে যাচ্ছে। দু-একটা বুলবুলিও ছিল। পাখিগুলো কোথা থেকে আসে, আবার হঠাৎ চলে যায়।

শহরের সৈয়ারপুর এলাকার মাঝেরহাটি সড়কে আরও একটি গাছে একইভাবে লাল ফল ঝুলে আছে। কিছু ফল তখনো কাঁচা, দেখতে অনেকটা বাঁকা লোমশ শক্ত শিমের মতো। হয়তো অনেকের চোখে পড়ে গাছগুলো, কেউ হয়তো মুগ্ধতা নিয়ে তাকিয়ে দেখেন। কারও হয়তো চোখ এড়িয়ে যায়। প্রকৃতি এ রকমই, তার আপন খেয়ালে আছে।

উদালের প্রিয় আবাসভূমি হচ্ছে পাহাড়ি এলাকা। সে কারণে উদালের সঙ্গে সাধারণ নাগরিকের খুব একটা চেনা জানা নেই

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শহর র

এছাড়াও পড়ুন:

মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার

প্রায় ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দির ও কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পৃথক আয়োজনে রাস উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে হবে এ উৎসব। রাস উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ায় বসছে ৫ দিনব্যাপী মেলা। 

কলাপাড়ায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে মন্দিরের আঙ্গিনাসহ রাধা ও কৃষ্ণের ১৭ জোড়া প্রতিমা।

মঙ্গলবার পূর্ণিমা তিথিতে রাত ৯টা ২২ মিনিটে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে এ তিথি শেষ হবে। সেদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এর পর মন্দিরের আঙ্গিনায় রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন তারা। তাই, দুই মন্দিরেই ১৭ জোড়া প্রতিমা বানানো হয়েছে। প্যান্ডেল সাজানোর কাজ শেষ। চলছে লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ। 

এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মন্দির প্রাঙ্গণ, কুয়াকাটার মন্দির প্রাঙ্গণ ও সৈকতে অস্থায়ীভাবে বসছে শতাধিক পোশাক, প্রসাধনী, খেলনা ও গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকান। কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী উৎসব হলেও কলাপাড়ায় এ উৎসব চলবে পাঁচ দিন। এসব দোকানে অন্তত ৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন আয়োজকরা। 

কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমের রাস উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেছেন, আজকের মধ্যেই আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের এ উৎসব হলেও এখানে ৫ দিনব্যাপী মেলায় সব ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। আমাদের মন্দির প্রাঙ্গণে অন্তত ৭০টি দোকান বসেছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হবে। 

কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেছেন, আগামীকাল রাতভর মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে। পরদিন সকালে গঙ্গা স্নান হবে। লাখো পুণ্যার্থীর আগমনের আশা করছি আমরা। বুধবারও গঙ্গা স্নান হবে। উৎসব উপলক্ষে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেছেন, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় ১ লাখ পুণ্যার্থী সমাগমের আশা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। 

ঢাকা/ইমরান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ