মুনাফা কমলেও রেকর্ড লভ্যাংশের ঘোষণা বাটা শুর
Published: 24th, April 2025 GMT
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক কোম্পানি বাটা শুর মুনাফা কমে গেছে। গত বছরের শেষে কোম্পানিটির মুনাফা কমে দাঁড়িয়েছে ২৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকায়। ২০২৩ সালে যার পরিমাণ ছিল ৪০ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে বাটার মুনাফা সাড়ে ১০ কোটি টাকা বা ২৬ শতাংশ কমে গেছে।
গত মঙ্গলবার কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত বছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়। গতকাল বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) মাধ্যমে আর্থিক প্রতিবেদনের কিছু তথ্য বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়েছে। সেখান থেকে মুনাফা কমে যাওয়ার বিষয়টি জানা যায়। মুনাফা কমলেও গত বছরের জন্য রেকর্ড লভ্যাংশ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে কোম্পানিটি। অন্তর্বর্তীকালীন ও চূড়ান্ত মিলিয়ে বাটা শু গত বছরের জন্য শেয়ারধারীদের ৪৪৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার কথা জানিয়েছে। এর মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন লভ্যাংশ হিসেবে ৩৪০ শতাংশ বা প্রতি শেয়ারের বিপরীতে ৩৪ টাকা লভ্যাংশ এরই মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। আর চূড়ান্ত লভ্যাংশ হিসেবে আরও ১০৫ শতাংশ বা শেয়ারপ্রতি ১০ টাকা ৫০ পয়সা নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে কোম্পানিটি। এই দুই লভ্যাংশ মিলিয়ে গত বছরের জন্য কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে একজন শেয়ারধারী পাবেন ৪৪ টাকা ৫০ পয়সা।
বাটা শুর ঘোষণা অনুযায়ী, গত বছরের জন্য কোম্পানিটি লভ্যাংশ বাবদ ৬০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা বিতরণ করবে। যার মধ্যে সাড়ে ৪৬ কোটি টাকা অন্তর্বর্তীকালীন লভ্যাংশ হিসেবে বিতরণ করা হয়েছে। বাকি প্রায় ১৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা চূড়ান্ত লভ্যাংশ হিসেবে বিতরণ করা হবে। আগামী বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) অনুমোদনের পর এ লভ্যাংশ বিতরণ করা হবে।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের আগে বাটা শু শেয়ারধারীদের সর্বোচ্চ লভ্যাংশ দিয়েছিল ২০২৩ সালে। ওই বছর কোম্পানিটি লভ্যাংশ হিসেবে শেয়ারধারীদের মধ্যে ৪৩৫ শতাংশ বা শেয়ারপ্রতি সাড়ে ৪৩ টাকা নগদ লভ্যাংশ বিতরণ করেছিল। তাতে কোম্পানিটির এ বাবদ খরচ হয়েছিল ৫৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা। গত বছর শেষে লভ্যাংশ বাবদ কোম্পানিটি আগের বছরের চেয়ে দেড় কোটি টাকা বেশি বিতরণ করবে।
মুনাফা কমে যাওয়া ও রেকর্ড লভ্যাংশের বিষয়ে জানতে চাইলে বাটা বাংলাদেশের কোম্পানি সচিব রিয়াজুর রেজা মুহাম্মদ ফয়সাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘উচ্চ খাদ্য মূল্যস্ফীতির কারণে গ্রাহক পর্যায়ে ব্যয় কমে যায়। এ ছাড়া জুলাই আন্দোলনের জেরে জুলাই–সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের বিভিন্ন সময়ে বাটার ৫০ শতাংশ দোকান বন্ধ ছিল। যার প্রভাব ব্যবসায় পড়েছে। অনিশ্চিত সময়ে বিনিয়োগকারীরা আমাদের সঙ্গে ছিলেন। তাই তাঁদের উৎসাহ প্রদানের জন্য মুনাফা কমে যাওয়ার পর রেকর্ড লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। আর এটি সম্ভব হয়েছে কোম্পানির শক্তিশালী আর্থিক অবস্থা ও নগদ প্রবাহের কারণে।’
জুতা উৎপাদনকারী বৈশ্বিক কোম্পানি বাটা শু ১৯৮৫ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। সেই হিসাবে এটি শেয়ারবাজারে প্রায় ৪০ বছরের পুরোনো একটি কোম্পানি। বাটা শুর মূলধন ১৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকা, যা ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের ১ কোটি ৩৬ লাখ ৮০ হাজার শেয়ারে বিভাজিত। গত ডিসেম্বরের শেষে কোম্পানিটির ৯৫ লাখ ৭৬ হাজার বা ৭০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে উদ্যোক্তাদের হাতে। ২৬ লাখ ৬৩ হাজার বা প্রায় সাড়ে ১৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে। ব্যক্তিশ্রেণির সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ১২ লাখ ৬৩ হাজার বা সোয়া ৯ শতাংশ শেয়ার। আর বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ১ লাখ ৭৭ হাজার বা সোয়া ১ শতাংশের বেশি শেয়ার।
শেয়ারধারণসংক্রান্ত তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের জন্য বাটা শুর লভ্যাংশ বাবদ বিতরণ করা ৬০ কোটি ৮৭ লাখ টাকার মধ্যে উদ্যোক্তারা পাবেন ৪২ কোটি ৬১ লাখ টাকা, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা পাবেন ১১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা, ব্যক্তিশ্রেণির সাধারণ বিনিয়োগকারীরা পাবেন ৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা পাবেন ৭৯ লাখ টাকা।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
২০২৬ এশিয়ান গেমসেও থাকছে ক্রিকেট
যথারীতি ২০২৬ সালের এশিয়ান গেমসেও জায়গা করে নিয়েছে ক্রিকেট ইভেন্ট। জাপানের আয়চি-নাগোয়া অঞ্চলে ২০২৬ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত অনুষ্ঠিতব্য এই গেমসে ক্রিকেটকে আনুষ্ঠানিকভাবে অন্তর্ভুক্ত করেছে অলিম্পিক কাউন্সিল অব এশিয়া (ওসিএ)। আয়চি প্রিফেকচারে ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে। তবে এখনো ভেন্যু চূড়ান্ত হয়নি।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) নাগোয়া সিটি হলের ৪১তম (আইনগক) বোর্ড সভায় ক্রিকেট ও মিক্সড মার্শাল আর্টসকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন দেওয়া হয় বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে ওসিএ।
এশিয়ান গেমসে এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত হলো। এর আগে ২০১০ সালে চীনের গুয়াংজু ও ২০১৪ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচিওনে অনুষ্ঠিত হয়েছিল ক্রিকেট ইভেন্ট। যদিও সেগুলো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়নি। তবে ২০২৩ সালে চীনের হাংজুতে ক্রিকেট ফেরার পর সেই আসরের ম্যাচগুলোকে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
আরো পড়ুন:
সাকিবের আগে মিরাজের অসাধারণ ডাবল
মিরাজের জোড়া আঘাতে ব্যাকফুটে জিম্বাবুয়ে
২০২৩ সালের আসরে পুরুষ বিভাগে সোনা জেতে ভারত, রৌপ্য আফগানিস্তান ও ব্রোঞ্জ পায় বাংলাদেশ। নারী বিভাগেও ভারত ও বাংলাদেশ যথাক্রমে সোনা ও ব্রোঞ্জ জেতে। আর রৌপ্য পায় শ্রীলঙ্কা। এছাড়াও দুই বিভাগে অংশ নেয় পাকিস্তান, নেপাল, মালদ্বীপ, মঙ্গোলিয়া, হংকং, জাপান, কম্বোডিয়া, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ইন্দোনেশিয়া।
অন্যদিকে, ২০২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকেও পুরুষ ও নারী উভয় বিভাগের জন্য টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যেখানে ছয়টি দল অংশ নেবে। তবে এখনো সেই প্রতিযোগিতার জন্য বাছাই প্রক্রিয়া কেমন হবে তা স্পষ্ট করা হয়নি।
ঢাকা/আমিনুল