কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগে জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবিপ্রবি) শিক্ষক ইলিয়াস উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ নূর হোসেন চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ইলিয়াস উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক হিসেবে কর্মরত। তিনি জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার মোমেনাবাদ গ্রামের বাসিন্দা। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জামালপুর-৩ (মেলান্দহ-মাদারগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মির্জা আজমের সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী (এপিএস) ছিলেন তিনি।

এ–সংক্রান্ত আদেশ কপিতে বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে গত ৫ আগস্ট থেকে ইলিয়াস উদ্দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত আছেন। তিনি অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে এক মাসের জন্য অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার আবেদন করেন। কিন্তু অসুস্থতার কোনো প্রমাণাদি পাঠাননি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিমালা অনুযায়ী তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। এ বিষয়ে তাঁকে ১০ কর্মদিবসের মধ্যে লিখিত বক্তব্য দিতে বলা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার জানান, ইলিয়াস উদ্দিনকে পলাতক হিসেবে চিহ্নিত করে এবং কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

ইলিয়াস উদ্দিনের গ্রামের বাড়ি মাদারগঞ্জ উপজেলার মোমেনাবাদ এলাকা বাসিন্দা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিনি মির্জা আজমের এপিএস থাকার সময় বিপুল অর্থবিত্তের মালিক হন। আর ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে মির্জা আজমের একক কর্তৃত্ব ছিল। তাঁর প্রভাবে যোগ্যতা না থাকার শর্তেও বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক পদে ইলিয়াসের চাকরি হয়েছিল। শুধু তা–ই নয়, ইলিয়াসের স্ত্রী আফসানা আক্তারকেও অ্যাডহক ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকশন কর্মকর্তা পদে নিয়োগ দেন তিনি। আওয়ামী লীগের আমলে এই দম্পতি ঠিকমতো ক্যাম্পাসে আসতেন না। ছুটি ছাড়াই তাঁরা বিদেশ ভ্রমণ করতেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁদের বিরুদ্ধে ন্যূনতম ব্যবস্থা গ্রহণের সাহস পায়নি। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ইলিয়াসের কর্মস্থল মেলান্দহ হলেও অধিকাংশ সময় রাজধানী ঢাকায় নিজ ফ্ল্যাটে থাকতেন।

এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য ইলিয়াসের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হয়। কিন্তু তাঁর মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বরখ স ত আজম র

এছাড়াও পড়ুন:

মাগুরায় শিশু ধর্ষণ-হত্যা মামলায় সাক্ষ্য ৩ চিকিৎসকের

মাগুরায় আট বছরের শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় চতুর্থ দিনের মতো সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল বুধবার জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসানের আদালতে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।

এ দিন শিশুকে চিকিৎসা প্রদানকারী তিন চিকিৎসক সাক্ষ্য দেন। তারা হলেন– মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালের ডা. সোহাস হালদার, নাকিবা সুলতানা এবং ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের  ডা. ইসরাত জাহান। তারা সবাই শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছিল মর্মে সাক্ষ্য প্রদান করেন।  

এর আগে সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে মামলার ৪ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। বাদীপক্ষের আইনজীবী ও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি মনিরুল ইসলাম মুকুল জানান, বিগত চার কার্যদিবস একটানা সাক্ষ্য গ্রহণ চলেছে। এ নিয়ে মোট ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। মামলায় মোট ৩৭ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হবে। আগামী রোববার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাদে অন্য সব সাক্ষী সাক্ষ্য দেবেন। বুধবার আসামিপক্ষের আইনজীবী স্বাধীনভাবে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। তিনি আদালতে আসামিরা নির্দোষ বলে যুক্তি উপস্থাপন করেন। আসামিরাও নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন। 

বেড়াতে এসে ৬ মার্চ রাতে মাগুরা সদরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুর হিটু শেখের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয় ৮ বছরের শিশুটি। এই ধর্ষণের ঘটনা দেশজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি করে। মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ঘুরে ঢাকা সিএমএইচে তাকে ভর্তি করা হয়েছিল। ১৩ মার্চ শিশুটি সেখানে মারা যায়। এ ঘটনায় শিশুটির মা আয়েশা আক্তার বড় মেয়ের শ্বশুর হিটু শেখসহ চারজনকে আসামি করে মাগুরা সদর থানায় মামলা করেন। রিমান্ডে হিটু শেখ ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ