মির্জা আজমের সাবেক এপিএস বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত
Published: 24th, April 2025 GMT
কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগে জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবিপ্রবি) শিক্ষক ইলিয়াস উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ নূর হোসেন চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ইলিয়াস উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক হিসেবে কর্মরত। তিনি জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার মোমেনাবাদ গ্রামের বাসিন্দা। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জামালপুর-৩ (মেলান্দহ-মাদারগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মির্জা আজমের সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী (এপিএস) ছিলেন তিনি।
এ–সংক্রান্ত আদেশ কপিতে বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে গত ৫ আগস্ট থেকে ইলিয়াস উদ্দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত আছেন। তিনি অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে এক মাসের জন্য অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার আবেদন করেন। কিন্তু অসুস্থতার কোনো প্রমাণাদি পাঠাননি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিমালা অনুযায়ী তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। এ বিষয়ে তাঁকে ১০ কর্মদিবসের মধ্যে লিখিত বক্তব্য দিতে বলা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার জানান, ইলিয়াস উদ্দিনকে পলাতক হিসেবে চিহ্নিত করে এবং কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
ইলিয়াস উদ্দিনের গ্রামের বাড়ি মাদারগঞ্জ উপজেলার মোমেনাবাদ এলাকা বাসিন্দা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিনি মির্জা আজমের এপিএস থাকার সময় বিপুল অর্থবিত্তের মালিক হন। আর ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে মির্জা আজমের একক কর্তৃত্ব ছিল। তাঁর প্রভাবে যোগ্যতা না থাকার শর্তেও বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক পদে ইলিয়াসের চাকরি হয়েছিল। শুধু তা–ই নয়, ইলিয়াসের স্ত্রী আফসানা আক্তারকেও অ্যাডহক ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকশন কর্মকর্তা পদে নিয়োগ দেন তিনি। আওয়ামী লীগের আমলে এই দম্পতি ঠিকমতো ক্যাম্পাসে আসতেন না। ছুটি ছাড়াই তাঁরা বিদেশ ভ্রমণ করতেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁদের বিরুদ্ধে ন্যূনতম ব্যবস্থা গ্রহণের সাহস পায়নি। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ইলিয়াসের কর্মস্থল মেলান্দহ হলেও অধিকাংশ সময় রাজধানী ঢাকায় নিজ ফ্ল্যাটে থাকতেন।
এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য ইলিয়াসের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হয়। কিন্তু তাঁর মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কারাগারে ‘ফাঁস নিলেন’ জুলাই-আগস্ট হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার সুজন
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলাসহ অন্তত ১৪ মামলার আসামি সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সুজন (৪৫) কারাবন্দি অবস্থায় মারা গেছেন। রোববার সকালে ঢাকার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।
সাইদুর রহমান সুজনের মৃত্যুর বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ মো. ফারুক।
কারা মহাপরিদর্শক সৈয়দ মোতাহের হোসেন জানান, সাইদুর রহমান সুজন সূর্যমুখী ভবনের একটি কক্ষে আরও দুই বন্দির সঙ্গে ছিলেন। রোববার সকালে সুজন নাস্তাও করেছেন। এরপর একজনের হাজিরা থাকায় আদালতে যায় এবং আরেকজন ঘুমাচ্ছিলেন। এই সুযোগে সুজন নিজের ব্যবহৃত গামছা দিয়ে জানালার সঙ্গে গলায় ফাঁস দেন। পরে আমরা দ্রুততম সময়েই তাকে উদ্ধার করে কারা হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তাকে বাঁচানো যায়নি।
গত ২০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ঢাকার উত্তরা থেকে সুজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। সেদিন রাতেই তাকে সাভার থানায় হস্তান্তর করা হয়। বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সুজন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর সাভারের রাজপথে গুলি চালানোর একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। সেই ভিডিওতে সাইদুর রহমান সুজনের হাতে থাকা পিস্তল দিয়ে গুলি করতে দেখা যায়। পটপরিবর্তনের পর তার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ এনে সাভার থানায় অন্তত ১৪টি মামলা করা হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেও বিচার চলতে থাকা সুজন তখন থেকে কারাবন্দি ছিলেন।