পাবলিক লাইব্রেরি ভবনে কমিউনিটি সেন্টার
Published: 25th, April 2025 GMT
পাবলিক লাইব্রেরির জন্য নির্মাণ করা হয় ভবন। তবে পাবলিক লাইব্রেরি না করে করা হয়েছে কমিউনিটি সেন্টার। জেলা পরিষদসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন-নিবেদন করেও ভবনটিতে পাবলিক লাইব্রেরি করা সম্ভব হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
শিবপুর উপজেলা সদর কলেজ গেট এলাকায় পাবলিক লাইব্রেরির জন্য ভবনটি নির্মাণ করা হয়। ২০০৬ সালের ২৪ মার্চ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী আবদুল মান্নান ভূঁইয়া। একই বছর নির্মাণকাজ সম্পন্ন করে নরসিংদী জেলা পরিষদের বাস্তবায়নে মেসার্স রহমান কনস্ট্রাকশন। অথচ দীর্ঘ ১৮ বছরেও পাবলিক লাইব্রেরিটি চালু করতে পারেনি নরসিংদী জেলা পরিষদ।
পাবলিক লাইব্রেরি চালু করতে না পারলেও চালু করেছে কমিউনিটি সেন্টার। ভবনটি নির্মাণের ৫ বছর পর থেকে কমিউনিটি সেন্টার হিসেবে ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। পাবলিক লাইব্রেরি চালুর দাবিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য, ইউএনও, জেলা পরিষদে আবেদন করলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
সরেজমিন দেখা গেছে, ভবনের মূল ফটকের ভেতর থেকে তালা লাগানো। ভবনের সামনের সিঁড়িতে বসা নাঈম নামে একজন বলেন, ভেতরে কাইয়ুম নামে কেয়ারটেকার আছে। ডাক দিলে বের হয়ে আসবে। কাইয়ুম ভাই বলে কয়েকটি ডাক দেওয়ার পর ভেতর থেকে বের হয়ে আসেন তিনি। গেট না খুলে পরিচয় জানতে চান। সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পর তালা খুলে ভেতরে নিয়ে যান এবং পুরো ভবন ঘুরে দেখান।
দেখা গেছে, ভবনটির বিভিন্ন স্থানে পলেস্তারা উঠে যাচ্ছে। ভবনের এক কক্ষে ভাঙাচোরা আসবাব পড়ে রয়েছে। নরসিংদী জেলা পরিষদের নিয়োগ করা কাইয়ুম মিয়া কেয়ারটেকার হিসেবে ভবনের একটি কক্ষে থাকেন ও ভবন দেখাশোনা করেন। ভবনের সামনে রয়েছে একটি নোংরা ডোবা। সেখান থেকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ।
কেয়ারটেকার কাইয়ুম মিয়া জানান, ভবনের কেয়ারটেকার হিসেবে তিন বছর ধরে এখানে থাকেন তিনি। ভবনটি কমিউনিটি সেন্টার হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। কমিনিউনিটি সেন্টার হিসেবে তেমন ভাড়াও হয় না। মাসেও হয় না।
শিবপুর উপজেলা সাহিত্য পরিষদের সভাপতি নূরুল ইসলাম নূরচানের ভাষ্য, মননশীলতার কেন্দ্র এভাবে বন্ধ থাকতে পারে না। নির্মাণের পর লাইব্রেরি চালু না করায় এলাকার তরুণ সমাজ অধঃপতনের দিকে ধাবিত হচ্ছে। দ্রুত লাইব্রেরি চালুর দাবি তাঁর।
উপজেলা গীতিনাট্য সংসদ সভাপতি কাদির কিবরিয়া বলেন, শিবপুরে মননশীল চর্চার কোনো জায়গা নেই। মননশীল ও মুক্তবুদ্ধি চর্চার জন্য নির্মিত পাবলিক লাইব্রেরিটি চালু করতে দাবি জানালেও অদৃশ্য কারণে বাস্তবায়ন হচ্ছে না।
শিবপুর উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি নূর উদ্দিন মো.
শিবপুরের ইউএনও মোছা. ফারজানা ইয়াসমিনের ভাষ্য, পাবলিক লাইব্রেরির জন্য নির্মিত ভবনটি সংস্কার করতে হবে। এ জন্য জেলা পরিষদের কাছে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
নরসিংদী জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আ. ওহাব রাশেদ জানান, লাইব্রেরিটিকে একটি মালটিপারপাস অর্থাৎ লাইব্রেরি থেকে আরও উন্নত করার জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে দ্রুত চালু করা হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র র জন য ভবন র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে শ্রমিক নিহত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে আবারও এক শ্রমিক নিহতের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাত আটটার দিকে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত।
নিহত মো. রাকিব (২৪) বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য নির্মাণাধীন বহুতল ভবনে কাজ করতেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে।
এর আগে চলতি বছরের ১ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন লাইব্রেরি ভবনের চারতলা থেকে পড়ে মো. আরিফুল নামের এক শ্রমিক নিহত হয়েছিলেন। এর তিন মাসের মাথায় আবারও এক শ্রমিকের মৃত্যু হলো।
ভবনটির নির্মাণকাজের সঙ্গে যুক্ত কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য নির্মাণাধীন ওই ভবনের ৯ম তলায় আস্তরের কাজ করছিলেন রাকিব। শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে দিকে ভবনের জানালা দিয়ে তিনি ময়লা-আবর্জনা ফেলতে গিয়ে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে ভবনের কর্মচারীরা উদ্ধার করে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে নিয়ে যান। রাত আটটার দিকে তিনি সেখানে মারা যান।
ভবনটিতে সাইট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, ভবনের ৯ম তলায় আস্তরের কাজ চলছিল। রাকিব ভবনের জানালা দিয়ে ময়লা ফেলতে গিয়ে পড়ে যান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত এই বহুতল ভবনটির কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আমিন ট্রেডার্স। এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আজিজ প্রথম আলোকে বলেন, ভবনের মধ্যে কাজ চলছিল। ভবনটির বাইরের কাজ শেষ তাই ‘সেফটি নেট’ খুলে ফেলা হয়েছে।
মো. আজিজ জানান, রাকিবের মরদেহ তাঁর গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভবনটিতে কর্মরত ফোরম্যানের তত্ত্বাবধানে তাঁর মরদেহ বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক নাসিরউদ্দিন বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক একটি ঘটনা। আমরা বারবার তাদেরকে যথাযথ সেফটি (নিরাপত্তা) নিশ্চিত করে তারপর কাজ করতে বলি। কিন্তু অনেক সময় এসব কর্মচারীরা মানে না। এ বিষয়ে প্রকল্প অফিস ও প্রশাসন থেকে বারবার তাদের তাগাদা দেওয়া হয়। এরপরও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেল।’