রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার উদ্দেশ্য জাতীয় সনদ তৈরি করা: আলী রীয়াজ
Published: 26th, April 2025 GMT
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ অন্তর্বর্তী সরকারের নয়। এটা বাংলাদেশের গণমানুষের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষার ফলাফল। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চলমান আলোচনার উদ্দেশ্য থাকবে একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা।
আজ শনিবার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সংস্কার প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের শুরুতে আলী রীয়াজ এ কথা বলেন।
চব্বিশের আন্দোলনে দেশ কতটা স্বাধীন হয়েছে, সেটা সময় বলে দেবে উল্লেখ করে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, ৫৪ বছরে দেশের মানুষের ব্যাপক হতাশা তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে মানুষ বঞ্চনার প্রতিবাদ জানিয়েছে। জামায়াতে ইসলামী দুর্নীতিমুক্ত ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে চায়।
সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, চব্বিশের আন্দোলনের যারা এখনো হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে, তাদের পুনর্বাসনে অন্তর্বর্তী সরকার আরও বেশি দায়িত্বশীল হতে পারত। সরকারের আরও অনেক কিছুই করার ছিল।
সংস্কারের জন্য গঠিত পাঁচটি কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার অংশ হিসেবে আজ শনিবার জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
আরও পড়ুনপ্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা ছিল বলেই ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল: আলী রীয়াজ২৪ এপ্রিল ২০২৫অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বে আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ইফতেখারুজ্জামান, সাবেক বিচারপতি এমদাদুল হক এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ তাঁর শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা একটা সাম্যের বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ পেয়েছি। তাই আমাদের আলোচনার উদ্দেশ্য থাকবে একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা।’
আরও পড়ুনআওতার মধ্যে থাকা প্রয়োজনীয় সংস্কার ইসি নিজেই করবে: সিইসি২৪ এপ্রিল ২০২৫সংস্কারের উদ্যোগ শুধু রাজনৈতিক দলগুলোর স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নয় উল্লেখ করে আলী রীয়াজ বলেন, ‘বাংলাদেশের গণমানুষ সংস্কারের এই গুরুদায়িত্ব রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যমসহ প্রতিটি দায়িত্বশীল পক্ষকে অর্পণ করেছে। আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করতে চাই। যেখানে কোনো মানুষকে দ্বিতীয়বার বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, খুনের শিকার হতে হবে না।’
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহেরের নেতৃত্বে আলোচনায় অংশ নেন রাজনৈতিক দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, জামায়াতের আইনজীবী শিশির মোহাম্মদ মনির। প্যানেল সদস্য হিসেবে আছেন মহিউদ্দিন সরকার।
আরও পড়ুনসংস্কার কি কোনো নির্দিষ্ট দলের এজেন্ডার বিষয়২৪ এপ্রিল ২০২৫আরও পড়ুনস্বল্প সময়ের মধ্যে ‘জাতীয় সনদ’ তৈরি করতে চায় ঐকমত্য কমিশন১০ মার্চ ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ ত য় সনদ ম হ ম মদ ইসল ম সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে ঐকমত্য না হলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই: এবি পার্টি
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে অংশ নিয়ে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক হয়। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এবি পার্টির চেয়ারম্যান এ কথা বলেন।
ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে মজিবুর রহমান বলেছেন, ‘সংবিধান পরিবর্তন, সংস্কার, সংশোধন, নতুন করে লেখা বা বাতিলের চূড়ান্ত ক্ষমতা জনগণের। আমরা ঐক্যবদ্ধ মতামতের ভিত্তিতে জুলাই সনদ তৈরি করেছি, হয়তো কয়েকটি বিষয়ে কারও কারও “নোট অব ডিসেন্ট” (দ্বিমত) আছে। কিন্তু চূড়ান্ত কোনটা হবে, তা নির্ধারণের মূল ক্ষমতা জনগণের।’
কমিশনের আজকের প্রস্তাবে জুলাই ঘোষণাপত্রের ২২ নম্বর অনুচ্ছেদকে রেফারেন্স আকারে উল্লেখ করায় কোনো কোনো রাজনৈতিক দল ও নেতা জুলাই ঘোষণাপত্রের বৈধতা নিয়ে মন্তব্য করেন। এ বিষয়ে এবি পার্টির চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে যাঁরা আজ প্রশ্ন তুলছেন, কাল তাঁরা সংসদে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করবেন এবং এই সনদকে প্রশ্নবিদ্ধ করবেন না, তার নিশ্চয়তা কী?
এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সানী আবদুল হক বলেন, সংবিধানে এটা নেই, ওটা নেই বলে সংবিধান সংস্কার করা যাবে না—এই ধারণা অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাপরিপন্থী। রাজনৈতিক দলগুলো যদি জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতির প্রশ্নে নিজেদের অবস্থান থেকে নমনীয় না হয়, তবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পুরো প্রচেষ্টা মুখ থুবড়ে পড়বে।
আশঙ্কা প্রকাশ করে এবি পার্টির এই নেতা বলেন, এমন পরিস্থিতি জাতিকে এক গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দেবে। সুতরাং জাতীয় স্বার্থে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি; অন্যথায় গণভোট ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
আরও পড়ুনবর্ধিত মেয়াদের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন: আলী রীয়াজ৪ ঘণ্টা আগে