নিখোঁজের ৯ দিন পর পাওয়া গেল শিশুর অর্ধগলিত লাশ
Published: 26th, April 2025 GMT
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলায় নিখোঁজ হওয়ার ৯ দিন পর একটি পুকুর পাড়ের ঝোপ থেকে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী কাফি খন্দকারের (৮) অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার উপজেলার সহলাপাড়া গ্রামে ভিতরগাড়ী পুকুর পাড়ে শিশুটির লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
পুলিশ বলছে, শিশু কাফিকে চার থেকে পাঁচ দিন আগে অন্যত্র হত্যা করা হয়েছে। আগের দিন রাতে কোনো এক সময় লাশ পুকুর পাড়ে ফেলে যায়। নিহত শিশু কাফি উপজেলার আলমপুর ইউনিয়নের সহলাপাড়া গ্রামের ইকবাল হোসেনের ছেলে। সে স্থানীয় নসিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক তিনজন হলো– সহলাপাড়া গ্রামের ফরিদ খন্দকার (৬৫), বাবু খন্দকার (৫৫) ও মহিদুল ইসলাম প্রামাণিক (৪৫)। গত ১৮ এপ্রিল বাড়ির বাইরে খুলিয়ানে খেলাধুলা করতে গিয়ে নিখোঁজ হয় শিশুটি। খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান না পেয়ে পরদিন থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন (জিডি) পরিবারের সদস্যরা।
শুরু থেকে পরিবারের দাবি ছিল, কাফিকে অপহরণ করা হয়েছে। পুলিশ ঠিকমতো কাজ করছে না বলেও অভিযোগ তোলা হয়। যদিও পুলিশ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
পুলিশ ও পরিবারের সদস্যরা জানান, ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রতিবেশীরা শিশুটিকে খেলাধুলা করতে দেখেছেন। এর কিছুক্ষণ পর সে নিখোঁজ হয়। পরে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়, রাতে এলাকায় মাইকিংও করা হয়েছিল। ৯ দিন পর শনিবার দুপুরে গ্রামের লোকজন পুকুর পাড়ের ঝোপ থেকে গন্ধ পেয়ে লাশ দেখে পুলিশে খবর দেন। এ সময় পরিবারের একমাত্র সন্তানের লাশ দেখে স্বজনের আহাজারিতে এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।
নিহত শিশুর বাবা ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আমার একমাত্র সন্তান নিখোঁজের পর থেকে পুলিশকে বলেছি, তাকে অপহরণ করা হয়েছে। কিন্তু তারা গুরুত্ব দেয়নি। তাদের অনীহার কারণে অপহরণকারীরা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। শুধু পুলিশ নয়, জিডির কপি নিয়ে পাগলের মতো র্যা ব, সেনাবাহিনী ও ডিবিকেও জানিয়েছি। ৯ দিন ধরে আমার বাড়ির চুলায় আগুন জ্বলেনি। আমি এখন কী নিয়ে বাঁচব? ছেলে হত্যার বিচার চাই।’
শিশুটির মা উম্মে কুলসুম আহাজারির এক পর্যায়ে মাটিতে গড়াগড়ি দেওয়া শুরু করেন। তিনি বলছিলেন, ‘আমার বুকের ধনকে এনে দাও। আমি ওকে ছাড়া এক মুহূর্তও বেঁচে থাকতে পারি না।’ স্থানীয় বাসিন্দা হাবিবা খাতুনের ভাষ্য, ৯ দিন পরিবারটি উদ্বেগে সময় কাটিয়েছে। ছেলেটি নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে বাবা-মা পাগলপ্রায়। কাফির লাশ উদ্ধার হবে– এটি কেউ মানতে পারছেন না।
এ বিষয়ে ক্ষেতলাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপেন্দ্র সিংহ বলেন, ‘শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়েছি। ঘটনাস্থল থেকে অর্ধগলিত অবস্থায় লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। আটক তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পর ব র র ৯ দ ন পর র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
পুলিশের ওপর হামলা করে আটক ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নিল জনতা, গ্রেপ্তার ৩
ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলায় পুলিশের ওপর হামলা করে আটক এক ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। গ্রেপ্তার করা হয়েছে দুই নারীসহ তিনজনকে। গতকাল সোমবার রাতে উপজেলার মহামায়া ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তিরা হলেন ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) তানভীর মেহেদী, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) খোকন হোসেন ও রিংকু বড়ুয়া, কনস্টেবল জাহাঙ্গীর হোসেন ও মুজিবুর রহমান। তাঁদের ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। গ্রেপ্তার তিনজন হলেন জয়নাল আবদীন (২০), রুজিনা আক্তার (৩২) ও মোসাম্মৎ রূপধন (৪৮)। তাঁরা জয়নগর গ্রামেরই বাসিন্দা।
পুলিশ জানায়, রাতে ওই এলাকায় মোহাম্মদ আলমগীর নামের এক মাদক কারবারিকে ধরতে তারা অভিযান চালায়। আলমগীরকে আটক করা হলে স্থানীয় প্রায় অর্ধশত বাসিন্দা জড়ো হয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালান। একপর্যায়ে তাঁকে ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেন।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মর্ম সিংহ ত্রিপুরা বলেন, এ ঘটনায় আহত এসআই তানভীর মেহেদী বাদী হয়ে ছাগলনাইয়া থানায় মামলা করেছেন। সেই মামলায় গ্রেপ্তার তিনজনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।