বিএনপি-আওয়ামী লীগ এ দেশে সুশাসন দিতে পারেনি: মজিবুর রহমান
Published: 26th, April 2025 GMT
গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে দেশের স্বার্থে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, এবি পার্টি, গণতন্ত্র মঞ্চ ও বিভিন্ন ইসলামি দল এবং সব রাজনৈতিক পক্ষের ঐকমত্য জরুরি। ঐকমত্যের ভিত্তিতে ফ্যাসিস্টদের বিচার, রাষ্ট্র সংস্কার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি এবং একটি অবাধ–সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে না পারলে জুলাই অভ্যুত্থানের স্বপ্ন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু।
আজ শনিবার রাতে ফেনীর একটি রেস্তোরাঁয় গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী প্রত্যাশা, প্রেক্ষাপট ও সংস্কারবিষয়ক এক নাগরিক সভা ও মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এবি পাটির চেয়ারম্যান বলেন, বিএনপি-আওয়ামী লীগ এ দেশে সুশাসন দিতে পারেনি। একদল শেখ মুজিব আর আরেক দল জিয়াউর রহমান নিয়ে পড়ে আছে। এ দেশে মডেল মসজিদ নির্মাণেও দুর্নীতি হয়েছে। দেশ থেকে কোটি কোটি টাকা পাচার হয়েছে, লুটপাট হয়েছে। ঐকমত্যের ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা করলে এ দেশে সুশাসন ফিরে আসবে।
মুজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে, যারা জনগণের অধিকার কেড়ে নেয়, জনগণ ঐক্যবদ্ধ হলে তারা একসময় পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। আজ ফেনীসহ দেশের প্রায় সব জেলার আওয়ামী লীগের বড় নেতারা আত্মগোপনে চলে গেছেন। পাড়ায়–মহল্লায় আওয়ামী লীগের যেসব নেতা আছেন, তাঁদের মাথা নিচু হয়ে আছে অথচ কিছুদিন আগেও তাঁদের দাপটে মানুষ কথা বলতে পারেনি।
মুজিবুর রহমান মঞ্জু আরও বলেন, আওয়ামী লীগ বারবার ভুল করে এবং ক্ষমা চায়, কিন্তু সুযোগ পেলেই তারা আবার বাকশাল ও ফ্যাসিবাদ কায়েম করে। এ জন্য আওয়ামী লীগের বিচার দ্রুত করতে হবে।
ফেনীতে বিএনপি-জামায়াত, হেফাজত, এবি পার্টিসহ বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মঞ্জু বলেন, ‘সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে যেকোনো সময় পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। আমরা বিশৃঙ্খলা চাই না, আমরা চাই ন্যায়সংগত বিচার ও খুনি লুটেরাদের শাস্তি।’
সংস্কার ও নির্বাচন প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর বিভেদ খুবই দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, দেশের স্বার্থে অধ্যপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য জরুরি।
ফেনী প্রসঙ্গে এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘ফেনীতে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ ও চীনের অর্থায়নে আধুনিক হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার জোর দাবি জানাই আমরা। দলমত–নির্বিশেষে এটা ফেনীর জনগণের প্রাণের দাবি। বিগত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সীমান্তবর্তী বল্লামুখা বাঁধ পুনর্নির্মাণ করতে হবে। ফেনী ও চট্টগ্রামের মিরসরাই সীমান্ত অংশ নিয়ে একটি ক্যান্টনমেন্ট স্থাপন প্রয়োজন। ফেনীর এ দাবি পূরণে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলার তিনটি সংসদীয় আসন থেকে এবি পার্টি অংশগ্রহণ করবে।’
ফেনী জেলা এবি পার্টির সদস্যসচিব ফজলুল হকের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা আহ্বায়ক আহসান উল্লাহ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান লে.
এর আগে বিকেলে ফেনী শহরের মিজান রোডে দলের নতুন কার্যালয় উদ্বোধন ও দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে এক রাজনৈতিক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে মজিবুর রহমান মঞ্জু প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন ত ক ঐকমত য ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
পঞ্চগড় সীমান্ত দিয়ে ৭ জনকে ঠেলে দিয়েছে বিএসএফ
পঞ্চগড় সদর উপজেলার একটি সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে ৭ জনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তাদেরকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
শুক্রবার (১৩ জুন) সকালে নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটলিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শেখ মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এদিন সকালে উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের গোলাবাড়ি এলাকার সীমান্ত পিলার ৭৪৩ এর ১ নম্বর সাব পিলার সংলগ্ন এলাকা থেকে তাদের আটক করে বিজিবির টহল দল। এই সীমান্ত এলাকাটি নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটলিয়নের আওতাধীন।
জানা গেছে, শুক্রবার ভোর রাতে তাদেরকে পুশ-ইন করে ভারতের বালাচান ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা। আটক ৭ জনই বাংলাদেশের নাগরিক। এদের মধ্যে ২ জন পুরুষ, ৩ জন নারী ও ২ জন শিশু রয়েছে। তাদেরকে সদর থানায় হস্তান্তরের আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
আটককৃতরা হলেন- নড়াইলের কালিয়া উপজেলার জামরিল গ্রামের আফসার শেখের ছেলে অরিফুল ইসলাম (৩১), আরিফুল শেখের ছেলে ইমরান (১১) ও রায়হান শেখ (৭), একই গ্রামের মজিবুর রহমান মোল্লার মেয়ে রহিমা বেগম (৩০), সিদ্দিক মোল্লার মেয়ে খাদিজা বেগম (৩৬), একই উপজেলার বিস্টুপুর এলাকার আইনাল বিশ্বাসের ছেলে আল মামুন বিশ্বাস (৩০) এবং যশোরের অভয়নগর উপজেলার জয়েরা এলাকার তাহাজ্জুত খানের মেয়ে নাজমিন আক্তার (৪০)।
বিজিবি জানায়, আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তারা জানিয়েছে, দীর্ঘদিন যাবত ভারতের অভ্যন্তরে অবৈধভাবে অবস্থান করে কাজ করছিলো তারা। সম্প্রতি তাদেরকে আটক করে ভারতীয় পুলিশ। পরবর্তীতে বালাচান বিএসএফ ক্যাম্প কর্তৃক তাদেরকে গেইট দিয়ে বের করে বাংলাদেশে পুশ-ইন করে। ঘটনার পরপরই বিজিবির টহল দল অভিযান ৭ বাংলাদেশিকে আটক করে। তাদেকে পঞ্চগড় সদর থানায় হস্তান্তর করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটলিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ বদরুদ্দোজা বলেন, আমাদের টহল দল সীমান্ত এলাকা থেকে পুশ-ইনকৃত ৭ জন বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করেছে। তাদের প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে এবং আইনি প্রক্রিয়া শেষে থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ হিল জামান জানান, বিজিবি তাদের থানায় হস্তান্তর করলে আমরা পরবর্তীতে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
ঢাকা/নাঈম/টিপু