উচ্চ আদালতে আগামী এক মাসের মধ্যে মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার আপিল শুনানি শেষ করে রায় ঘোষণার দাবি জানিয়েছে এক্স-ফোর্সেস অ্যাসোসিয়েশন। একই সঙ্গে রায় ঘোষণার সাত কার্যদিবসের মধ্যে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করারও আহ্বান জানিয়েছে এ সংগঠনটি।
গতকাল শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে নিজের কার্যক্রম ঠিক করতে হুঁশিয়ার করেছেন সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক সদস্যরা। সংগঠনটির আহ্বায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম প্রশংসিত হচ্ছে। একটা জায়গায় বেশ দুর্বলতা পরিলক্ষিত হচ্ছে, সেটা আইন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের। তাঁকে সাবধান করতে চাই– দেশের জনগণ যেমন হাসিনাকে টেনে নামাইছে, আপনার গদিও কিন্তু ঠিক থাকবে না। আপনার কার্যক্রম ঠিক করেন। আপনি দেশের বিপক্ষে কাজ করবেন, সেটা কিন্তু হবে না।
লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সদস্য সচিব লেফটেন্যান্ট (অব.) সাইফুল্লাহ খান সাইফ বলেন, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারের টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর পুলিশ চেকপোস্টে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান। এ ঘটনায় নিহতের বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে মামলা করলে র্যাব তদন্ত শেষে ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
তিনি জানান, মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ড ছাড়াও স্থানীয়ভাবে অভিযোগ রয়েছে, প্রদীপ কুমার দাশ তাঁর কর্মকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে টেকনাফে এক ভয়ভীতির রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় তিনি তথাকথিত ‘ক্রসফায়ারে’ অন্তত ১৪৫ জনকে হত্যা করেছেন ও ক্রসফায়ার বাণিজ্যের মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছিলেন।
২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মো. ইসমাইল মামলার রায় দেন। রায়ে পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলী এবং টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে মৃত্যুদণ্ড, ছয়জনকে যাবজ্জীবন এবং সাতজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। বর্তমানে এই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি হাইকোর্টে চলমান রয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
‘নির্বাচন কমিশন সার্ভিস’ গঠনে কার্যকর পদক্ষেপসহ ৫ সুপারিশ
‘নির্বাচন কমিশন সচিবালয় (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫’ দ্রুত জারি করে ‘নির্বাচন কমিশন সার্ভিস’ গঠনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণসহ ৫ দফা সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন। একই সঙ্গে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব প্রদানের আহ্বান জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব সুপারিশ তুলে ধরেন সংগঠনটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ মনির হোসেন।
আরো পড়ুন:
ফেব্রুয়ারিতেই মহোৎসবে জাতীয় নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা
বেড়ায় রবিবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল, সড়ক ও নৌপথ অবরোধের ঘোষণা
অ্যাসোসিয়েশনের সুপারিশগুলো হলো
১. নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী দ্রুততম সময়ে ‘নির্বাচন কমিশন সচিবালয় (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫’ জারি করে ‘নির্বাচন কমিশন সার্ভিস’ গঠন এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের মাধ্যমে নির্বাচন পরিচালনা।
২. প্রস্তাবিত অর্গানোগ্রাম অনুমোদন, নতুন পদসৃজন, আপগ্রেডেশন এবং প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সরবরাহ নিশ্চিতকরণ।
৩. জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন-২০২৩ বাতিল করে জাতীয় পরিচয়পত্র কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের কাছে হস্তান্তর।
৪. আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করতে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর নির্বাচন ভবনে সব কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে ‘নির্বাচন কর্মকর্তা সম্মেলন-২০২৫’ আয়োজন।
৫. নির্বাচন কর্মকর্তা সম্মেলন-২০২৫ আয়োজনে প্রস্তুতিমূলক বিভিন্ন কমিটি গঠন।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ করতে নির্বাচন কমিশন আরো কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে।
ঢাকা/আসাদ/সাইফ