জাতীয় নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস যে সময়সীমার কথা বলেছেন, তা আরও নির্দিষ্ট হওয়া দরকার বলে মনে করছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, ডিসেম্বরের পরে যদি নির্বাচন নিতে হয়, তাহলে কী কারণে, সেটি ব্যাখ্যা করতে হবে।

আজ রোববার সকালে জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে গণসংহতি আন্দোলনের বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে দুপুরে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন জোনায়েদ সাকি।

জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘অন্য উপদেষ্টারাও বলেছেন এই টাইমলাইনের বাইরে তাঁরা যাচ্ছেন না। আমরা যেটা বলেছি, এই টাইমলাইন আরও নির্দিষ্ট হওয়া দরকার এবং আলোচনার মধ্য দিয়ে হওয়া দরকার। ফলে অংশীদারিদের সঙ্গে তাঁরা বসবেন আশা করি এবং বসে ঠিক করবেন কবে নির্বাচন হবে। ডিসেম্বরের পরে যদি নির্বাচন নিতে হয়, তাহলে কী কারণে নিচ্ছে, সেটি ব্যাখ্যা করতে হবে।’

জোনায়েদ সাকি বলেন, সংস্কার পরিষদ কিংবা সংস্কার সভা করতে হবে জনগণের ম্যান্ডেট (মতামত) নেওয়ার জন্য। এখন অনেকে বলছেন সংবিধান এবং সংবিধান সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নির্বাচনের আগে না পরে হবে; আগে করার সুযোগ নেই। এটা জনগণের ম্যান্ডেড এবং একটা সংসদ ছাড়া আপনি সংবিধান বদলাতে পারবেন না। সংবিধান এবং সংবিধান সংশ্লিষ্টের বাইরে অন্যান্য প্রশাসনিক যে বিষয়গুলো আছে, সেগুলো অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাহী আদেশে করতে পারে। পরবর্তী সংসদ এবং সরকার সেগুলোকে জাস্টিফাই (ন্যায্যতা) করবে।

সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের বিষয়ে জোনায়েদ সাকি বলেন, আস্থা ভোট ও বাজেট—এ দুই বিষয় বাদে সব বিষয়ে যাতে সংসদ সদস্যরা স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারেন, সেই সুযোগ রেখে ৭০ অনুচ্ছেদ সংস্কারের কথা আমরা বলেছি। আমরা মনে করি, এটি ক্ষমতাকাঠামোর ভারসাম্য এবং সংসদকে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বিভিন্ন বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের এবং বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে আলাপ–আলোচনা করা হবে।

সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধনের কথা বলা হয়েছে উল্লেখ করে গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল বলেন, এখন কোনো কাজই রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি ছাড়া করতে পারেন না। আমরা চাই, এই জায়গা থেকে সরে গিয়ে রাষ্ট্রপতিকে নির্দিষ্ট করে বেশ কিছু নিয়োগের ক্ষমতা প্রদান করা হোক, তাঁকে অনেকগুলো কাজের ক্ষমতা প্রদান করা হোক। এ বিষয়গুলো এখনো আলাপ–আলোচনার ভেতরে আছে। সামগ্রিকভাবে আইন, নির্বাহী ও বিচার বিভাগে একটা ভারসাম্য তৈরির ব্যবস্থা যাতে সংবিধানে থাকে সে দাবি জানানো হয়েছে।

গণসংহতি আন্দোলন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ১৩৮টি প্রস্তাবে একমত, ১১টি প্রস্তাবে দ্বিমত, ১৩টি প্রস্তাবে আংশিক একমত এবং ৪টি বিষয়ে কোনো মতামত দেয়নি।

অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বে আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ইফতেখারুজ্জামান, সাবেক বিচারপতি এমদাদুল হক ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার।

বৈঠকে গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, রাজনৈতিক পরিষদ সদস্য দেওয়ান আবদুর রশিদ, তাসলিমা আখতার, হাসান মারুফ রুমি, মনির উদ্দিন পাপ্পু, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, জুলহাসনাইন বাবু, শ্যামলী সরকার, ইমরাদ জুলকারনাইন, তরিকুল সুজন, মুরাদ মোর্শেদসহ কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা।সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, জুলহাসনাইন বাবু প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ঐকমত য সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

আলী রীয়াজের সঙ্গে ইন্টারন্যাশনাল আইডিইএ পরিচালকের বৈঠক

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের সাথে ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ইলেক্টোরাল অ্যাসিস্ট্যান্সের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলভিত্তিক কর্মসূচির পরিচালক লীনা রিখিলা তামাংয়ের সাথে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীর সংসদ ভবনে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ইন্টারন্যাশনাল আইডিইএ এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার গ্রেইস প্রিয়েটো উপস্থিত ছিলেন।

কমিশনের পক্ষে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, “সংস্কার সংক্রান্ত ৫টি কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ সম্পর্কে  রাজনৈতিক দলগুলোর সুনির্দিষ্ট  মতামত জানতে ইতোমধ্যে সুপারিশমালা স্প্রেডশিট আকারে তাদের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৩৫টি রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে আমরা মতামত পেয়েছি এবং তার ভিত্তিতে ২০টি দলের সাথে প্রাথমিকভাবে আলোচনা করেছে কমিশন। আগামী দিনগুলোতেও এ আলোচনা অব্যাহত থাকবে।”

আরো পড়ুন:

জ্বালানি উপদেষ্টার পিএসকে বদ‌লি

পুলিশ সপ্তাহ শুরু মঙ্গলবার, নির্বাচনী নির্দেশনা পাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

তিনি বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনার মাধ্যমে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে এমন একটি জাতীয় সনদ তৈরি করতে চায় কমিশন, যা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের পথরেখা তৈরি করবে।”

বৈঠকে ইন্টারন্যাশনাল আইডিইএর পরিচালক লীনা রিখিলা তামাং কমিশনের কাজে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

ঢাকা/এএএম/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অনির্বাচিত সরকারের করিডোর দেওয়ার এখতিয়ার নেই: বিএনপি
  • অনির্বাচিত সরকারের করিডোর দেওয়ার এখতিয়ার নেই
  • ‘মানবিক করিডর’ প্রতিষ্ঠার আগে জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করতে হবে: চরমোনাই পীর
  • এই প্রথম সকলে মিলে রাষ্ট্র বিনির্মাণের সুযোগ তৈরি হয়েছে: আলী রীয়াজ
  • প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক
  • মানবিক করিডরের সিদ্ধান্ত হলেও শর্ত নিয়ে চলছে আলোচনা
  • ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক
  • প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার অগ্রগতি পর্যালোচনা
  • প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক অনুষ্ঠিত
  • আলী রীয়াজের সঙ্গে ইন্টারন্যাশনাল আইডিইএ পরিচালকের বৈঠক