৬০ টন পণ্য নিয়ে সিলেট থেকে স্পেন গেল প্রথম কার্গো ফ্লাইট
Published: 27th, April 2025 GMT
দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর প্রথমবারের মতো সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কার্গো ফ্লাইট চলাচল শুরু হয়েছে। রোববার রাত ৮টা ৫ মিনিটে মালামাল নিয়ে স্পেনের উদ্দেশে উড়াল দেয় মেক্সিকান কার্গো এয়ারলাইন মাস এয়ার এবং গ্যালিস্টেয়ার-এর যৌথ মালিকানার একটি এয়ারবাস। সপ্তাহে এভাবে দুটি ফ্লাইট পরিচালনা হবে বলে জানিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
ঢাকার পর সিলেটে থেকে এ ফ্লাইট শুরু হওয়ায় খুশি রপ্তানিকারকসহ সিলেটের ব্যবসায়ীরা। প্রথম ফ্লাইটে রপ্তানি হওয়া পণ্যের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন কোম্পানির গার্মেন্টস সামগ্রী।
রোববার সিলেট থেকে কার্গো ফ্লাইটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাণিজ্য এবং বেসামরিক বিমান ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন রপ্তানিতে নতুন সম্ভাবনার সুযোগ সৃষ্টির কথা জানিয়ে বলেন, ‘আমরা সকলে মিলে একত্রে কাজ করছি বলে এটা সম্ভব হয়েছে। সিলেটের জন্য আজ ঐতিহাসিক দিন। ঢাকার বাইরে সিলেট থেকে স্বাধীনতার পর এটি প্রথম কার্গো ফ্লাইট। আমরা আমাদের সক্ষমতা কাজে লাগিয়েছি। ভবিষ্যতে যাতে এ ফ্লাইট অব্যাহত থাকে সেজন্য সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।’
ওসমানী বিমানবন্দরে বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী, মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরীন জাহান। স্বাগত বক্তব্য দেন ওসমানী বিমানবন্দরের পরিচালক হাফিজ আহমেদ প্রমুখ। এর আগে উপদেষ্টা কার্গো কমপ্লেক্স ঘুরে দেখেন।
রোববার বিকেল পৌনে ৫টায় ওসমানী বিমানবন্দরে পৌঁছায় কার্গো ৩৩০ ফ্লাইট। এটি অবতরণের পর শুরু হয় পণ্য লোডের কার্যক্রম। সন্ধ্যা পর্যন্ত ৬০ টন মালামাল লোড করা হয়। লোড হ্যান্ডেলিংয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করে বাংলাদেশ এয়ারলাইস কর্তৃপক্ষ। আর নিরাপত্তা দেয় বেবিচক কর্মীরা। প্রথম ফ্লাইটে ঢাকার এমজিএইচ গ্রুপ ও অরিজিন সলিউশন্সসহ আরেকটি কোম্পানির গার্মেনসট পণ্য রপ্তানি করা হয়।। এর আগে শনিবার ট্রাকযোগে ওসমানী বিমানবন্দরে পণ্য পৌঁছায় মালামালগুলো। সন্ধ্যায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে রাত ৮টা ৫ মিনিটের সময় ফ্লাইটটি ওসমানী বিমানবন্দ ছাড়ে। ওই সময় বিভিন্ন এয়ারলইন্স কর্মকর্তা, ঢাকার রপ্তানিকারকসহ সিলেটের সুধিজনরা উপস্থিত ছিলেন।
আগে সিলেট থেকে যাত্রীবাহী বিমানে কিছু পণ্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হতো। রোববার থেকে শুরু হলো কার্গো ফ্লাইট। কার্গো ফ্লাইটের মালামাল রাখার জন্য ২০২২ সালে ১০০ টন ক্ষমতা সম্পন্ন এক্সপোর্ট কার্গো কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হয় এই বিমানবন্দরে। ওই বছর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও লাভ করে। কার্গো ফ্লাইট পরিচালনার সুবিধার্থে এক্সপোর্ট কার্গো কমপ্লেক্সে অত্যাধুনিক এক্সপ্লোসিভ ডিটেকশন সিস্টেম (ইডিএস), ডুয়েল ভিউ স্ক্যানিং মেশিন ও এক্সপ্লোসিভ ট্রেস ডিটেকশন মেশিন স্থাপন করা হয়েছে।
সিলেটের আমদানি-রপ্তানিকারক মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক র গ ফ ল ইট ব ম নবন দ ফ ল ইট ওসম ন প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ
গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।
ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে।
আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন।
ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।
ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”
প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।
মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”
তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”
মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।
গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ