অপহরণের ৩৪ দিন পর সাতক্ষীরা থেকে যশোরের ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৪
Published: 27th, April 2025 GMT
অপহরণের ৩৪ দিন পর যশোরের ব্যবসায়ী রেজাউল ইসলামের লাশ সাতক্ষীরা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ রোববার সন্ধ্যায় সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার দক্ষিণ একসরা গ্রামের একটি বাগান থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তারের পর তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত রেজাউল যশোর শহরের শংকরপুর ইসহাক সড়কের বাসিন্দা। তিনি কাপড় ও পোশাক তৈরির ব্যবসা করতেন। গ্রেপ্তার চারজন হলেন রিপন হাওলাদার (২৮), সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার তালতলা বাজার এলাকার সবুজ (৩৮), সবুজের শ্বশুর একই উপজেলার দক্ষিণ একসরা গ্রামের খোকন মোল্লা (৫২) ও সবুজের স্ত্রী প্রিয়াংকা বেগম (৩৫)।
যশোর কোতোয়ালি থানা-পুলিশের একটি দল লাশ নিয়ে সাতক্ষীরা থেকে যশোরের উদ্দেশে সন্ধ্যায় রওনা দিয়েছে। কাল সোমবার লাশের ময়নাতদন্ত ও আসামিদের আদালতে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রেজাউল অপহরণের মামলায় পুলিশ এজাহারভুক্ত আসামি সবুজকে গত শনিবার চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে। এরপর তাঁর সহযোগী রিপনকে বেনাপোল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আজ সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার দক্ষিণ একসরা গ্রামে অভিযান চালিয়ে সবুজের শ্বশুরবাড়ির পাশে এক বাগানে পুঁতে রাখা রেজাউলের লাশ উদ্ধার করা হয়।
জানতে চাইলে যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত বলেন, কী কারণে রেজাউলকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়েছে, এখনই বলা যাচ্ছে না। নিহত রেজাউল অপহরণের কয়েক দিন আগে নিজের জমি বিক্রি করেন। এরপর তিনি নিখোঁজ হন। পরে তাঁর লাশ উদ্ধার হয়। অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সঙ্গে রেজাউলের ব্যবসায়িক লেনদেন ছিল। জমি বিক্রির টাকা ও ব্যবসার লেনদেনের কারণে অপহরণের পর হত্যা করতে পারে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, সবুজ ও রিপন যশোর শহরেই রেজাউলকে হত্যা করেন। পরে তাঁর লাশ বস্তাবন্দী করে ইজিবাইকে কিছু দূর নিয়ে যান। সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্সে ও পরে বাসে করে সাতক্ষীরায় নিয়ে যায়। এরপর সবুজ লাশটি তাঁর শ্বশুরবাড়ির পাশে একটি বাগানে পুঁতে রাখেন। কয়েক দিন পর বিষয়টি জানতে পারেন সবুজের শ্বশুর খোকন মোল্লা। তিনি লাশটি উত্তোলন করে পাশের আরেকটি বাগানে পুনরায় পুঁতে রাখেন। পুলিশের অভিযানে আজ সন্ধ্যার দিকে ওই বাগান থেকেই রেজাউলের লাশ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ব্যবসায়ী রেজাউল ইসলাম শহরের শংকরপুর এলাকায় কামরুল ইসলামের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। পাশের ঘর নিয়ে থাকতেন রিপন হাওলাদার ও সবুজ। পাশাপাশি থাকার সুবাদে তাঁদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে রেজাউল ব্যবসার জন্য পৈতৃক সূত্রে পাওয়া বাড়িসহ দুই শতক জমি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। এরপর সবুজ ও রিপনের সহায়তায় জমিসহ বাড়িটি ২১ লাখ টাকায় বিক্রি করেন। ওই টাকা হস্তান্তরের কথা বলে ২২ মার্চ রাতে রেজাউলকে মুঠোফোনে ডেকে নেন সবুজ ও রিপন। এর পর থেকে রেজাউল আর বাড়ি ফেরেননি। এ ঘটনায় তাঁর পরিবার জিডি করে। খোঁজ না পেয়ে এক সপ্তাহ পর অপহরণ ও গুমের অভিযোগ এনে সবুজ, রিপনসহ অজ্ঞাত দুই থেকে তিনজনের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়।
ওসি আবুল হাসনাত জানান, পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অপহরণকারীদের শনাক্ত করে। এরপর অভিযান চালিয়ে চট্টগ্রাম থেকে সবুজকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তাঁরা রেজাউলকে অপহরণ ও হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অপহরণ র ব যবস য় উপজ ল র র ব যবস র জ উলক র জ উল সব জ র
এছাড়াও পড়ুন:
ভাড়া বাসায় একা থাকতেন বৃদ্ধা, তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার
চুয়াডাঙ্গা শহরের দক্ষিণ কবরস্থান পাড়ায় বাসা থেকে গুলশান আরা চমন (৬৫) নামে বৃদ্ধার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করছে পুলিশ। তিনি ঝিনাইদহের শৈলকুপার উপজেলার দামুদহ গ্রামের মৃত আবুক কাশেমের স্ত্রী।
আজ সোমবার ( ১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
আরো পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জে ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানের লাশ উদ্ধার
গাজীপুরে নৌকা ভ্রমণে গিয়ে নিখোঁজ, নদীতে মিলল লাশ
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালেদুর রহমান জানান, শয়ন কক্ষের মেঝে থেকে গুলশান আরা চমনের লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘরের ভেতর থেকে দরজা লাগনো ছিল। চমন হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
বাড়ির মালিকের স্ত্রী রেহেনা খাতুন বলেন, ‘‘দীর্ঘ সাত বছর বাসা ভাড়া নিয়ে চমন একাই বসবাস করছিলেন। তিন মাস আগে তিনি স্ট্রোক করলে তাকে উদ্ধার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর তাকে পরামর্শ দেওয়া, ঘরের দরজা খোলা রেখে ঘুমাতে। যেন প্রয়োজনে সাহায্য করতে যায়। কিন্তু উনি দরজা দিয়ে ঘুমাতেন।’’
বাসা থেকে দুর্গন্ধ বের হতে থাকলে তিনি পুলিশে খবর দেন।
গুলশান আরা চমনের ছোট বোন খুশি বলেন, ‘‘গত বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) চমনকে সঙ্গে নিয়ে বাজার করে তাকে বাড়ি রেখে যাই। এরপর তার সঙ্গে আর যোগাযোগ হয়নি।’’
ঢাকা/মামুন/বকুল