ভারতনিয়ন্ত্রতি কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটক হত্যাকাণ্ডের পর যুদ্ধ যুদ্ধ আবহে সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকার দাবি তুলতে উদ্যোগী হচ্ছে বিরোধী মহল। কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেসসহ অন্যান্য বিরোধী দলের নেতারা এ বিষয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা শুরু করেছেন। দুই–তিন দিনের মধ্যে সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকতে আনুষ্ঠানিক উদ্যোগ নিতে পারেন বিরোধী নেতারা।

বিরোধী নেতারা ওই দাবি আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে চিঠি দেওয়ার কথা বিবেচনা করছেন। কংগ্রেস একটা চিঠির খসড়া তৈরি করেছে। সেই খসড়া নিয়ে অন্য নেতাদের সঙ্গে আলোচনাও শুরু হয়েছে।

শীর্ষ বিরোধী নেতারা চাইছেন, মে মাসের গোড়াতেই ওই অধিবেশন ডাকা হোক। যদিও সরকারের মনোভাব এখনো তাঁদের অজানা। লাদাখের গলওয়ানে চীনা আগ্রাসনের পর প্রবল দাবি সত্ত্বেও সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়নি। শুধু তা–ই নয়, পাঁচ বছর কেটে গেলেও গলওয়ান নিয়ে সংসদে কোনো আলোচনার অনুমতি দেওয়া হয়নি। সংসদের প্রতিরক্ষা–সংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা গলওয়ানে গিয়ে সরেজমিনে পরিস্থিতি বিচার করার সিদ্ধান্ত নিলেও সরকার অনুমতি দেয়নি। এবারেও বিশেষ অধিবেশন ডাকার দাবি মানতে সরকার সম্মত হবে কি না, এ বিষয়ে তাই সংশয় থেকে যাচ্ছে।

তা সত্ত্বেও বিরোধীরা পেহেলগাম প্রশ্নে জোটবদ্ধ হচ্ছে। একদা কংগ্রেস নেতা বর্তমানে সমাজবাদী পার্টি–সমর্থিত রাজ্যসভার স্বতন্ত্র সদস্য আইনজীবী কপিল সিব্বাল প্রথম এ বিষয়ে উদ্যোগী হন। তাঁর প্রস্তাব নিয়ে কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস ও বাম নেতারা নিজেদের মধ্যে কথা বলেছেন। বিরোধীরা মনে করছেন, বিশেষ অধিবেশন ডাকা হলে অনেক বিষয়েই আলোচনা করা যাবে। বিশেষ করে সরকারের গাফিলতি।

পেহেলগাম হত্যাকাণ্ডের পর সরকার এক সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছিল। যদিও সেই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উপস্থিত ছিলেন না। সেদিন তিনি ছিলেন বিহারে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজনাথ সিং, অমিত শাহ, এস জয়শঙ্কর, নির্মলা সীতারামণ, কিরেণ রিজিজুরা। ওই বৈঠকের চরিত্রও ছিল সংসদীয়। সংসদে যাদের অন্তত ৫ জন সদস্য আছে, সেই দলগুলোকে ডাকা হয়েছিল। সেই বৈঠকে সব বিরোধী নেতা পরিস্থিতির মোকাবিলায় সরকারের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছিলেন। সেখানেই দাবি উঠেছিল, সর্বার্থে সর্বদলীয় এক বৈঠক ডাকা হোক, যাতে প্রধানমন্ত্রীসহ সব দলের শীর্ষ নেতা উপস্থিত থাকতে পারেন। সরকার যদিও এখনো সেই বিষয়ে মনস্থির করেনি।

বিরোধী নেতারা মনে করছেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সরকারের পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়ানোর বার্তা ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে। বোঝানো হয়েছে, সরকার যা উপযুক্ত মনে করবে, তাতে বিরোধীদের সমর্থন থাকবে। কিন্তু তারই পাশাপাশি এটাও জরুরি, কাদের গাফিলতিতে এত বড় ঘটনা ঘটে গেল, তা চিহ্নিত করা। নিরাপত্তা নিয়ে সরকারের বিচ্যুতিগুলো দেখিয়ে দেওয়া। সরকারের দায়বদ্ধতা নির্ধারণ করা।

বিরোধী নেতাদের মতে, প্রধানমন্ত্রী মোদিকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা যায়নি। সর্বদলীয় বৈঠক তিনি এড়িয়ে গেছেন। সংসদীয় বিশেষ বৈঠক ডাকা হলে তিনি জবাবদিহিতে বাধ্য থাকবেন। তাঁর ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ব্যর্থতা চিহ্নিত করা যাবে। এই ব্যর্থতার কথা কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী সর্বদলীয় বৈঠকে তুলেছিলেন। সরকারও গাফিলতি মেনে নিয়েছিল। কিন্তু তা হয়েছিল নিভৃতে। সংসদের অধিবেশন হলে দেশের মানুষ জানতে পারবেন। রেকর্ডও থাকবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র র

এছাড়াও পড়ুন:

পেহেলগাম নিয়ে ভারতের সংসদে বিশেষ অধিবেশনের দাবি বিরোধীদের

ভারতনিয়ন্ত্রতি কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটক হত্যাকাণ্ডের পর যুদ্ধ যুদ্ধ আবহে সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকার দাবি তুলতে উদ্যোগী হচ্ছে বিরোধী মহল। কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেসসহ অন্যান্য বিরোধী দলের নেতারা এ বিষয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা শুরু করেছেন। দুই–তিন দিনের মধ্যে সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকতে আনুষ্ঠানিক উদ্যোগ নিতে পারেন বিরোধী নেতারা।

বিরোধী নেতারা ওই দাবি আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে চিঠি দেওয়ার কথা বিবেচনা করছেন। কংগ্রেস একটা চিঠির খসড়া তৈরি করেছে। সেই খসড়া নিয়ে অন্য নেতাদের সঙ্গে আলোচনাও শুরু হয়েছে।

শীর্ষ বিরোধী নেতারা চাইছেন, মে মাসের গোড়াতেই ওই অধিবেশন ডাকা হোক। যদিও সরকারের মনোভাব এখনো তাঁদের অজানা। লাদাখের গলওয়ানে চীনা আগ্রাসনের পর প্রবল দাবি সত্ত্বেও সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়নি। শুধু তা–ই নয়, পাঁচ বছর কেটে গেলেও গলওয়ান নিয়ে সংসদে কোনো আলোচনার অনুমতি দেওয়া হয়নি। সংসদের প্রতিরক্ষা–সংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা গলওয়ানে গিয়ে সরেজমিনে পরিস্থিতি বিচার করার সিদ্ধান্ত নিলেও সরকার অনুমতি দেয়নি। এবারেও বিশেষ অধিবেশন ডাকার দাবি মানতে সরকার সম্মত হবে কি না, এ বিষয়ে তাই সংশয় থেকে যাচ্ছে।

তা সত্ত্বেও বিরোধীরা পেহেলগাম প্রশ্নে জোটবদ্ধ হচ্ছে। একদা কংগ্রেস নেতা বর্তমানে সমাজবাদী পার্টি–সমর্থিত রাজ্যসভার স্বতন্ত্র সদস্য আইনজীবী কপিল সিব্বাল প্রথম এ বিষয়ে উদ্যোগী হন। তাঁর প্রস্তাব নিয়ে কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস ও বাম নেতারা নিজেদের মধ্যে কথা বলেছেন। বিরোধীরা মনে করছেন, বিশেষ অধিবেশন ডাকা হলে অনেক বিষয়েই আলোচনা করা যাবে। বিশেষ করে সরকারের গাফিলতি।

পেহেলগাম হত্যাকাণ্ডের পর সরকার এক সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছিল। যদিও সেই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উপস্থিত ছিলেন না। সেদিন তিনি ছিলেন বিহারে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজনাথ সিং, অমিত শাহ, এস জয়শঙ্কর, নির্মলা সীতারামণ, কিরেণ রিজিজুরা। ওই বৈঠকের চরিত্রও ছিল সংসদীয়। সংসদে যাদের অন্তত ৫ জন সদস্য আছে, সেই দলগুলোকে ডাকা হয়েছিল। সেই বৈঠকে সব বিরোধী নেতা পরিস্থিতির মোকাবিলায় সরকারের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছিলেন। সেখানেই দাবি উঠেছিল, সর্বার্থে সর্বদলীয় এক বৈঠক ডাকা হোক, যাতে প্রধানমন্ত্রীসহ সব দলের শীর্ষ নেতা উপস্থিত থাকতে পারেন। সরকার যদিও এখনো সেই বিষয়ে মনস্থির করেনি।

বিরোধী নেতারা মনে করছেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সরকারের পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়ানোর বার্তা ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে। বোঝানো হয়েছে, সরকার যা উপযুক্ত মনে করবে, তাতে বিরোধীদের সমর্থন থাকবে। কিন্তু তারই পাশাপাশি এটাও জরুরি, কাদের গাফিলতিতে এত বড় ঘটনা ঘটে গেল, তা চিহ্নিত করা। নিরাপত্তা নিয়ে সরকারের বিচ্যুতিগুলো দেখিয়ে দেওয়া। সরকারের দায়বদ্ধতা নির্ধারণ করা।

বিরোধী নেতাদের মতে, প্রধানমন্ত্রী মোদিকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা যায়নি। সর্বদলীয় বৈঠক তিনি এড়িয়ে গেছেন। সংসদীয় বিশেষ বৈঠক ডাকা হলে তিনি জবাবদিহিতে বাধ্য থাকবেন। তাঁর ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ব্যর্থতা চিহ্নিত করা যাবে। এই ব্যর্থতার কথা কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী সর্বদলীয় বৈঠকে তুলেছিলেন। সরকারও গাফিলতি মেনে নিয়েছিল। কিন্তু তা হয়েছিল নিভৃতে। সংসদের অধিবেশন হলে দেশের মানুষ জানতে পারবেন। রেকর্ডও থাকবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ