প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, ‘বাংলাদেশের বিচার বিভাগ অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে পরিবেশ রক্ষার জন্য বিভিন্ন স্থায়ী আইনগত উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।’ বিশেষত, বিপজ্জনক শিল্পগুলির ক্ষেত্রে- যেমন, জাহাজ ভাঙা শিল্পে পরিবেশগত মান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশের উচ্চ আদালতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রায় প্রদানের কথা তিনি উল্লেখ করেন।

সোমবার আবুধাবির নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটিতে অনুষ্ঠিত ‘ক্লাইমেট জাস্টিস অ্যান্ড দ্য কন্সটিটিউশন: ফিফ্লেকশনস ফ্রম দ্য গ্লোবাল সাউথ’ শীর্ষক এক বিশেষ অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদানকালে এ কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে আবুধাবির নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটিসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত ছাত্র, শিক্ষক, আইনজ্ঞ, আইনজীবীসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি আইন বিভাগের অধ্যাপক পাবলস এলেফথেরিয়াডিস। অনুষ্ঠানটিতে মূলত বাংলাদেশের মতো পরিবেশগত ঝুঁকির শিকার উন্নয়নশীল দেশগুলির দৃষ্টিকোণ থেকে সংবিধান, মানবাধিকার এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মধ্যকার সম্পর্ককে বিশ্লেষণ করা হয়।

প্রধান বিচারপতি তার ভাষণে বলেন, ‘জলবায়ু সংকট কেবল একটি পরিবেশগত জরুরি অবস্থা নয়, বরং এটি একটি ন্যায়বিচার সংশ্লিষ্ট সংকটও বটে।’ তিনি উল্লেখ করেন, ইতিহাস পর্যালোচনায় উন্নত দেশগুলো কার্বন নিঃসরণে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখলেও আজ জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ প্রভাবের মুখে পড়েছে তুলনামূলকভাবে কম কার্বন নিঃসরণকারী উন্নয়নশীল দেশগুলো। তিনি তার বক্তৃতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পরিচালিত প্রথম পর্যায়ের প্রাথমিক পরিবেশ ন্যায়বিচার আন্দোলন থেকে শুরু করে কোচাবাম্বার সংক্রান্ত জলবায়ু ন্যায়বিচার এর ধারাবাহিক বিকাশের ইতিহাস তুলে ধরেন।

প্রধান বিচারপতি তার ভাষণে নিজের দেওয়া রায়সহ কিছু গুারুত্বপূর্ণ রায় উল্লেখ করে দেখান যে, কীভাবে পরিবেশগত অধিকারগুলোকে মৌলিক অধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ নেতত্ব দিয়েছে। তিনি দক্ষিণ এশিয়া ও অন্যান্য দেশগুলি বিশেষ করে আর্জেন্টিনা, ভিয়েতনাম, দক্ষিণ আফ্রিকার সংবিধানিক দৃষ্টিকোণ থেকে বাংলাদেশের প্রবর্তিত নীতির তুলনা করেন।

সৈয়দ রেফাত আহমেদ তার বক্তব্যে বিশ্বব্যাপী জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় প্যারিস চুক্তির কার্যকারিতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর সহায়তায় শক্তিশালী আর্থিক ও আইনি কাঠামো গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার কথা বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেন। 

তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মানুষের বাস্তুচ্যুতি, ক্ষতি ও ক্ষতিপূরণ বিষয়ে আলোচনা করেন এবং পরিবেশ বিপর্যয়ের জন্য দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে একটি বৈশ্বিক নৈতিক মানদণ্ড গঠনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন এবং  প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে বাস্তুচ্যুত জনগণের জীবন, আশ্রয় ও জীবিকা সুরক্ষিত রাখতে সক্ষম এমন আইনগত কাঠামো প্রবর্তনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন পর ব শ জলব য়

এছাড়াও পড়ুন:

ধর্ষণের শিকার শিশুটির চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন বিএনপি নেতা অমিত

যশোরের চৌগাছায় ধর্ষণের শিকার ৭ বছরের সেই শিশুর চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। একই সঙ্গে শিশুটির আইনি সুবিচার পেতে জেলার জাতীয়তাবাদী আইনজীবীদের নির্দেশনা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার যশোর জেনারেল হাসপাতালে শিশুটিকে দেখতে গিয়ে তিনি এই ঘোষণা দেন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শিশুটির চিকিৎসার ব্যাপারে তিনি কথা বলেন।

বুধবার যশোরের চৌগাছায় বাড়ির পাশে শিশুটিকে ধর্ষণ করে প্রতিবেশী দাদা। এরপর শিশুটিকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিশুটির মা থানায় অভিযোগ দিলে অভিযুক্ত মিজানুর রহমানকে (৫৫) আটক করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে পাঠালে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

শিশুটির মা হাসপাতালে জানান, তার মেয়েটি বুধবার বিকেলে বাড়ির পাশে খেলা করছিল। এসময় শিশুটিকে একা পেয়ে মিজানুর জোর করে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে। এরপর মেয়েটি রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়িতে ফিরে কান্না করছিল। তার কাছ থেকে ঘটনা শুনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে আনা হয়। তার চিকিৎসা চলছে। 

যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. হোসাইন সাফায়েত বলেন, শিশুটিকে আশাঙ্কাজনক অবস্থায় আনা হয়। তার শরীরের ক্ষত স্থানে অপারেশন করা হয়েছে। এখন শিশুটিকে অবজারভেশনে রাখা হয়েছে। এখন শঙ্কামুক্ত। 

চৌগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, শিশুটির শরীরে প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে, রিপোর্ট পাওয়ার পর আসল ঘটনা জানা যাবে। ঘটনার পরেই অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে। অভিযুক্ত আসামিকে বিচারক কারাগারে প্রেরণ করেছে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশুটির চিকিৎসার খোঁজ খবর নিতে যান বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। এ সময় তার সঙ্গে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) যশোরের নেতৃবৃন্দ ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এসময় বিএনপি নেতা অমিত শিশুর চিকিৎসার দায়িত্ব নেন এবং শিশুটির পরিবার আইনি বিচার পেতে  জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতৃবৃন্দদের নির্দেশনা দেন।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন বলেন, শিশুটির সঙ্গে পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। শিশুটির বাবা বিদেশ থাকে। এই পরিবারে কোন পুরুষ সদস্য নেই। তাছাড়া তারা গরীব। ঘটনাটি জানার পর বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের নেতৃত্বে আমরা শিশুটিকে দেখতে যাই। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দণ্ডাদেশ বহালের রায়ের বিরুদ্ধে ১০ আসামির আপিল ও লিভ টু আপিল
  • কম খরচে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তিতে কাজ করছে মন্ত্রণালয়: আসিফ নজরুল
  • সংস্কারের জন্য তিন লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে আইন মন্ত্রণালয়: আসিফ নজরুল
  • যে ‘ধর্মীয় অনুপ্রেরণায়’ ইরানে এই হামলা চালাল ইসরায়েল
  • দক্ষিণ ভারতের নিষ্পেষিত মুসলিম নারীদের কণ্ঠস্বর
  • সুবিচার মিলবে কত বছরে
  • ধর্ষণের শিকার শিশুটির চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন বিএনপি নেতা অমিত
  • রেফারেন্স ও মতামতপ্রক্রিয়া নিয়ে রিট খারিজ, আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন
  • আইনজীবী তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষা