সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি ও অন্য কার্যক্রমের নগদ অর্থ উপকারভোগীরা নিজেদের পছন্দের ব্যাংক বা এমএফএস হিসাবে নিতে পারবেন। বিতরণকারী মন্ত্রণালয় বা বিভাগ ভাতা বিতরণে কোনো ব্যাংক বা মোবাইল আর্থিক সেবা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করে দিতে পারবে না।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সম্প্রতি সরকারের এ সিদ্ধান্ত পরিপত্র আকারে জারি করেছে। সরকারের নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে উপকারভোগীরা তাদের পছন্দমতো হিসাবে সরকারি ভাতার টাকা নিতে পারবেন। এ ছাড়া এমএফএস এবং এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অভিন্ন ক্যাশ আউট চার্জ শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। ক্যাশ আউট চার্জ সরকার পরিশোধ করবে। আগামী ১ জুলাই থেকে সরকারি ভাতা বিতরণের নতুন এ নিয়ম কার্যকর হবে। জানা গেছে, বর্তমানে চার্জ রয়েছে শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ। 

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা সমকালকে জানান, সরকার থেকে ব্যক্তি (জি-টু-পি) পদ্ধতিতে সামাজিক নিরাপত্তা ভাতার পাশাপাশি শিক্ষা উপবৃত্তি এবং অন্যান্য নগদ হস্তান্তর সম্পন্ন হয়। আগামী অর্থবছর থেকে উপকারভোগীরা এ ধরনের অর্থ তাদের পছন্দের অ্যাকাউন্টে নিতে পারবেন। ভাতাভোগীদের নতুন করে কোনো হিসাব খুলতে হবে না।

২০২১ সালে এমএফএস প্রতিষ্ঠান নগদকে ৭৫ শতাংশ ভাতা বিতরণের দায়িত্ব দেওয়া হয়। নগদ দায়িত্ব পায় ৪০টি জেলার। বাকি ২৪টি জেলায় অন্যান্য এমএফএস ও ব্যাংকের মাধ্যমে ভাতা দেওয়া হয়।  

অর্থ বিভাগের পরিপত্রে বলা হয়েছে, ভাতা বিতরণকারী মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর বা সংস্থা এখন থেকে তাদের পছন্দমতো কোনো মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে পারবে না। ফলে সারাদেশের যে কোনো জায়গার ভাতাভোগীরা তাদের নিজেদের পছন্দের হিসাবে ভাতার টাকা গ্রহণ করতে পারবেন।

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি ও অন্যান্য নগদ অর্থ ক্যাশ আউট চার্জসহ একসঙ্গে পাঠাতে হবে। নগদ বিতরণের ক্ষেত্রে এমএফএস বা ব্যাংক উপকারভোগীর ওপর কোনো ধরনের চার্জ আরোপ করতে পারবে না। ইফটি রিটার্নের ক্ষেত্রে ক্যাশ আউট চার্জসহ সরকারকে ফেরত দিতে হবে। ইএফটির রিয়েল টাইম ট্র্যাকিংয়ের জন্য অর্থ বিভাগের সিঙ্গেল রেজিস্ট্রি সিস্টেমে প্রতিটি এমএফএস এবং ব্যাংক সংযোগ স্থাপন আগামী ২৯ মে’র মধ্যে শেষ করতে হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক য শ আউট চ র জ দ র পছন দ পছন দ র প রব ন ব তরণ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরিতে না ফেরালে রাজপথ ছাড়বেন না ইআরপিপি স্বাস্থ্যকর্মীরা

পাঁচ মাস ধরে বেতন নেই। পরিবার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন কেউ, কেউ আবার চাকরির বয়সসীমা পার করে এখন আর নতুন কোথাও আবেদন করার সুযোগ পাচ্ছেন না। এর মধ্যেই প্রকল্প শেষের অজুহাতে চাকরিচ্যুত হয়েছেন তারা—যারা ২০২০ সালের করোনা মহামারির সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশের ফ্রন্টলাইন স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। এই অবস্থায় নিজেদের চাকরি স্থায়ীকরণ এবং অবিলম্বে বকেয়া বেতনের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রধান ফটকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ারডনেস (ইআরপিপি) প্রকল্পের আউটসোর্সিং স্বাস্থ্যকর্মীরা। 

আজ সোমবার বেলা ১১টা থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রধান ফটকে অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করেন।

আন্দোলনকারীরা বলছেন, তাদের প্রধান দাবি হলো স্থায়ীকরণের মাধ্যমে চাকরি বহাল রাখতে হবে এবং রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্তির লিখিত নিশ্চয়তা দিতে হবে। সেইসঙ্গে গত চার মাসের বকেয়া ভাতা অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে। তা না হলে অবস্থান কর্মসূচি চলবে, প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

বিক্ষোভরত কর্মীদের একজন বলেন, সরকারের ডাকেই তো আমরা এসেছিলাম। ভয়ঙ্কর সময় ছিল সেটা। তখন যদি পেছনে না ফিরে মানুষকে সেবা দিতে পারি, আজ যখন একটু স্থিতি এসেছে—তখন কেন আমরা উপেক্ষিত হবো? ৫ মাস ধরে একটা টাকাও পাইনি, পরিবার চালানো দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নিপসমে কর্মরত ইআরপিপির মেডিকেল টেকনোলজিস্ট আবু সুফিয়ান বলেন, প্রায় পাঁচ বছর এই প্রকল্পে কাজ করেছি। এখন বয়স ৩৫ ছাড়িয়েছে। সরকারি চাকরির আবেদনের শেষ সীমা পেরিয়ে গেছি। এখন আমাদের বাদ দিয়ে নতুন অদক্ষ জনবল নেয়ার চেষ্টা চলছে। এটা শুধু অবিচার না, আমাদের মর্যাদায় আঘাত।

ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি সেন্টারের ডাটা অপারেটর আব্দুর রহমান বলেন, ঘরে ছোট বাচ্চা, স্কুলের বেতন দিতে পারিনি। স্ত্রী-সংসার নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছি। করোনার সময় এই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডাকেই আমি কাজে গিয়েছিলাম, এখন সেই অধিদপ্তরের সিঁড়িতেই বসে থাকতে হচ্ছে দাবি আদায়ের জন্য।

ইআরপিপি প্রকল্পের আওতায় কর্মরত এসব স্বাস্থ্যকর্মীদের অভিযোগ, করোনার সময় গড়ে তোলা আরটি-পিসিআর ল্যাব, ডেডিকেটেড আইসিইউ বা আইসোলেশন ইউনিটে তারাই প্রথম দিন থেকে দায়িত্ব পালন করেছেন। অথচ আজ তাদের বাদ দিয়ে সেই পদে নতুন লোক নিয়োগের পাঁয়তারা চলছে। 

তারা বলছেন, আমরা চাকরি ভিক্ষা চাই না। আমরা যেটুকু প্রাপ্য, সেটুকু চাই। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত প্রকল্প চলবে, তবে আমাদের চাকরি কেড়ে নেয়া হলো কেন? আমাদের রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত না করে অন্যদের সুযোগ দেওয়া মানে অবিচারকে পুরস্কৃত করা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ