‘একটি অ্যাপার্টমেন্ট কি শুধুই আশ্রয়স্থল, নাকি সামগ্রিক জীবনধারার প্রতিচ্ছবি?’

এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে চোখে পড়ে ‘শেল্‌টেক্‌ স্যাফায়ার’ সিরিজের আবাসিক প্রকল্পগুলোর দিকে, যা ঢাকার অভিজাত এলাকায় পরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠছে। শুধু ইট-বালু-সিমেন্টের কাঠামো হিসেবে নয়, আবাসন প্রকল্পগুলো এমন হওয়া উচিত, যেখানে থাকবে আধুনিক জীবনধারার পূর্ণ প্রতিফলন। এই ভাবনাকে বুকে ধারণ করে শেল্‌টেক্‌ (প্রা.

) লিমিটেড নির্মাণ করে চলেছে তাদের প্রিমিয়াম আবাসন প্রকল্প শেল্‌টেক্‌ স্যাফায়ার সিরিজ। শহরের সেরা লোকেশনে শেল্‌টেক্‌ স্যাফায়ার সিরিজের প্রতিটি প্রকল্প আন্তর্জাতিক মানের স্থাপত্যশৈলী, উচ্চমানের নির্মাণসামগ্রী, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব নকশার সুনিপুণ সমন্বয়ে গড়ে উঠছে। ফলে স্যাফায়ার সিরিজ হয়ে উঠছে আধুনিক ও উন্নত জীবনযাত্রার একটি নির্ভরযোগ্য প্রতিচ্ছবি।

ধানমন্ডিতে বিশ্বমানের এক্সক্লুসিভ অ্যাপার্টমেন্ট

ঢাকার অন্যতম পরিকল্পিত ও অভিজাত এলাকা ধানমন্ডিতে শেল্‌টেক্‌ স্যাফায়ার সিরিজের মোট চারটি প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু হতে যাচ্ছে। যার মধ্যে একটির নাম শেল্‌টেক্‌ রেবেকা মহিউদ্দিন। ধানমন্ডি লেকের সন্নিকটে ১১ কাঠা জমির ওপর নির্মিতব্য ১০তলা ভবনটিতে থাকছে প্রায় ২ হাজার ৩৯১ বর্গফুটের মোট ১৮টি অ্যাপার্টমেন্ট, যার নকশা করেছে স্থপতি ফয়েজ উল্লাহর নেতৃত্বে আর্কিটেকচার ফার্ম ‘ভলিউম জিরো’।

ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার রোড-১১-তে নির্মিতব্য ভবনটির নকশা এমনভাবে করা হয়েছে, যাতে প্রাকৃতিক আলো ও বাতাস সহজে ঘরে প্রবেশ করতে পারে। শুধু তা-ই নয়, ভবনটিতে থাকছে কমিউনিটি হল, জিমনেশিয়াম এবং বসার জায়গাসহ একটি দৃষ্টিনন্দন ছাদবাগান। অর্থাৎ সুস্থ ও সুন্দর ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে নির্মাণ করা হচ্ছে শেল্‌টেক্‌ রেবেকা মহিউদ্দিন।

ধানমন্ডি ৩ নম্বর রোডে অবস্থিত শেল্‌টেক্‌ প্রত্যাশা ভবনটি একটি পরিবেশবান্ধব প্রকল্প হিসেবে নির্মিত হচ্ছে, যা প্রকৃতির সঙ্গে প্রতিশ্রুতির এক অনন্য নিদর্শন। নান্দনিক নকশা, টেকসই নির্মাণ এবং আধুনিক নাগরিক চাহিদার সমন্বয়ে গঠিত এই প্রকল্পটি রাজধানীর আবাসন খাতে নতুন মাত্রা যুক্ত করতে চলেছে। এই ভবন নির্মাণে সবুজকে প্রাধান্য দেওয়ার পাশাপাশি চেষ্টা করা হয়েছে কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনার। প্রখ্যাত স্থপতি নাহাস আহমেদ খলিলের নেতৃত্বে, সৃজনশীলতা ও স্থাপত্য নান্দনিকতায় নির্মিতব্য প্রকল্পটিতে রয়েছে মোট ১৬টি অভিজাত ইউনিট, প্রতিটির আয়তন ২ হাজার ৬৫০ স্কয়ারফিট। প্রতিটি অ্যাপার্টমেন্টে থাকছে চারটি প্রশস্ত বেডরুম। এ ছাড়া রয়েছে ডাবল-হাইট এন্ট্রেন্স, ছাদজুড়ে সবুজ বাগান, কমিউনিটি স্পেস এবং আধুনিক জিমনেশিয়ামের মতো সুবিধা। সবুজের প্রাধান্য, কার্বন নিঃসরণ কমানো এবং প্রাকৃতিক আলো-বাতাসের সঠিক চলাচলের ব্যবস্থা নিশ্চিত করে পরিবেশের সঙ্গে একধরনের সেতুবন্ধ সৃষ্টি করতে চলেছে শেল্‌টেক্‌ প্রত্যাশা।

ধানমন্ডিতে স্যাফায়ার সিরিজের আরেকটি প্রকল্প শেল্‌টেক্‌ উইন্টার বেরি। এটি ধানমন্ডির রোড ৪/এ-তে অবস্থিত, যার ডিজাইন কনসালট্যান্ট হিসেবে আছে ভলিউম জিরো লিমিটেড। ২০ কাঠা জমির ওপর নির্মাণাধীন ১৪ তলা ভবনটিতে থাকছে ৩৬টি ইউনিট। প্রতিটি অ্যাপার্টমেন্টের আয়তন ২ হাজার ৩৫০ থেকে ২ হাজার ৭৫১ বর্গফুটের মধ্যে এবং প্রতিটি ইউনিটে থাকছে ৩ থেকে ৪টি বেডরুম। নিরাপত্তায় রয়েছে মোশন সেন্সর ও ভিডিও ডোরবেলের মতো আধুনিক সুবিধা। এ ছাড়া শেল্‌টেক্‌ উইন্টার বেরিতে থাকছে সুইমিংপুল, কমিউনিটি স্পেস, নামাজের স্থান, শিশুদের খেলার জায়গাসহ আধুনিক জীবনের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা।

ধানমন্ডি ৯/এ-তে আর্কিটেক্ট নাহাস আহমেদ খলিলের নকশায় স্যাফায়ার সিরিজের আরেকটি প্রিমিয়াম প্রকল্প ‘শেল্‌টেক্‌ কুল ব্রিজ’। ১৩ তলাবিশিষ্ট এই ভবনের প্রতিটি ফ্লোরে থাকছে দুটি করে ইউনিট, যার প্রতিটির আয়তন প্রায় ২ হাজার ৪৭০ বর্গফুট। অন্যান্য স্যাফায়ার সিরিজের মতো এটিতেও থাকছে সুসজ্জিত ছাদবাগান, কমিউনিটি হল ও আধুনিক লাউঞ্জ।

ধানমন্ডি রোড ১১-তে ২৩৯১ স্কয়ারফুটের অ্যাপার্টমেন্ট ‘শেল্‌টেক্‌ রেবেকা মহিউদ্দিন’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অ য প র টম ন ট প রকল প ধ নমন ড ইউন ট

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রামের রেলওয়ের ‘হাতির বাংলো’ নিয়ে কেন এত মাতামাতি

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে চট্টগ্রামের ‘হাতির বাংলো’–এর কথা এখন সারা দেশের মানুষ কমবেশি জানেন। ইউটিউবে ‘হাতির বাংলো’ লিখে সার্চ দিলেই এর প্রমাণ পাওয়া যাবে। ভ্রমণবিষয়ক ভ্লগার আর কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের কাছে এটি এখন রীতিমতো ট্রেন্ড। এর মধ্যেই ভবনটি যুক্ত হয়েছে চট্টগ্রামের দর্শনীয় স্থানের তালিকায়। কিন্তু শতবর্ষী এই স্থাপনা নিয়ে এত মাতামাতির কারণ কী? এর উত্তর পাওয়া গেল হাতির বাংলোর সম্মুখ দর্শনের পর।

চট্টগ্রাম নগরের লালখান বাজার এলাকার ম্যাজিস্ট্রেট কলোনির বিপরীতে রেলওয়ের ছোট টিলা ধরে উঠতেই চোখে পড়ল ভবনটি। কাউকে চিনিয়ে দিতে হলো না। একটা আস্ত হাতির মাথা যেন কেউ বসিয়ে দিয়েছেন। বোঝা গেল লোকমুখে এমন নামকরণের কারণও। এমন একটি ভবন নিয়ে মাতামাতি না হওয়াটাই তো অস্বাভাবিক।

যাঁরা জে আর আর টলকিয়েনের ‘লর্ড অব দ্য রিংস’ উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত চলচ্চিত্রটি দেখেছেন, তাঁদের নিশ্চয়ই হবিটদের কথা মনে আছে। খর্বকায় হবিটদের বাড়ির মতোই অনেকটা রূপকথার আদল আছে এতে। আর পাশাপাশি দেওয়া হয়েছে এশিয়ান হাতির আকৃতি। রূপকথার আবেশে মিশেছে প্রকৃতির মূর্ত প্রতিকৃতি। সব মিলিয়ে ভবনটি অনন্য। ডুপ্লেক্স এই বাড়ি নিয়ে মানুষের কৌতূহল দীর্ঘদিনের। প্রতিদিনই বাংলোটি দেখতে আসেন অনেকেই। ছবি ও ভিডিও তুলে রাখেন। আবার কেউ কেউ ফেসবুক, ইউটিউবে তা ছড়িয়েও দেন। এভাবে হাতির বাংলো নিয়ে আগ্রহ ও কৌতূহল বেড়ে চলেছে।

চট্টগ্রাম নগরের লালখান বাজার আর সিআরবির মাঝের পাহাড়ে অবস্থিত রেলওয়ের হাতির বাংলো। যেতে হয় নগরের শহীদ সাইফুদ্দিন খালেদ সড়কের পাশে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন ও লেডিস ক্লাবের সামনের রাস্তা দিয়ে।

এই বাংলো ঠিক কবে নির্মিত হয়েছিল, তার সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই রেলওয়ের কাছে। তবে রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান, ১৮৯৮ সালের দিকে এই বাংলো নির্মাণ করা হতে পারে। ওই সময় চট্টগ্রামে রেললাইন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল। তখন নির্মাণকাজের সঙ্গে যুক্ত প্রকৌশলী ও কর্মকর্তাদের থাকার জন্য এই বাংলো নির্মাণ করা হতে পারে।

ব্যতিক্রমী স্থাপত্য

এখন যেমন পাহাড় কেটে, গাছপাল কেটে ভবন নির্মাণ করা হয়, হাতির বাংলো নির্মাণে তার কিছুই হয়নি। চারপাশের সৌন্দর্যকে এতটুকুও ব্যাহত করা হয়নি, বরং প্রকৃতির সঙ্গে মিশে গেছে এই স্থাপনা।

পাহাড়ি এলাকায় পিচঢালা সড়কের পাশে খোলা প্রাঙ্গণ। তা পেরিয়ে হাতির বাংলো। হাতির বাংলোর প্রবেশফটকে রয়েছে হাতির মুখ, শুঁড় তুলে দাঁড়িয়ে আছে। শুঁড় যেমন ঢেউয়ের মতো, ঠিক তেমনই ডুপ্লেক্স বাড়ির ওপরের অংশটিও। এর খোলা অংশটি দোতলার ব্যালকনি। এরপর রয়েছে বড় একটি কক্ষ, যা প্রায় হলরুমের সমান। কেউ থাকেন না এই কক্ষে। সামনে, পেছনে ও পাশে ছোট-বড় আটটি জানালা রয়েছে। বাংলোর নিচতলায় দুটি আলাদা বড় কক্ষ।

বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের ডেপুটি চেয়ারম্যান আদর ইউসুফ জানান, বাংলোটি নির্মিত হয়েছে হাতির আদলে, যা দেশের স্থাপত্য ইতিহাসে একটি ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত। বাহ্যিক কাঠামোটি ত্রিমাত্রিকভাবে হাতির মতোই—মাথা, শুঁড়, কানের পরিণত অংশ, শরীরের বর্ধিত কায়া ইত্যাদি রূপে গঠিত। ভবনটির মূল কাঠামো নির্মিত হয়েছে ইট ও পাথরের গাঁথুনির ওপর। তবে এর হাতির রূপ ফুটিয়ে তুলতে ব্যবহৃত হয়েছে ফেরো সিমেন্ট, যা উনিশ শতকে উন্নত নির্মাণপ্রযুক্তির নির্দেশক। স্থানীয়ভাবে প্রাপ্ত কাঠ ব্যবহার করে নির্মিত দরজা ও জানালাগুলোতে কারিগরি দক্ষতার পরিচয় রয়েছে। প্রচলিত ঔপনিবেশিক বাংলোর গঠন থেকে এটি অনেকটাই আলাদা। স্থাপত্যশৈলীতে কোনো সুপরিকল্পিত আদর্শ অনুসরণ না করলেও একে ঘিরে আছে একধরনের আভিজাত্য ও প্রকৌশলগত সৃজনশীলতা।

এক সময় ডুপ্লেক্স এই ভবনটিতে থাকতেন রেলওয়ের কর্মকর্তারা। তবে ভবনটি এখন পরিত্যক্ত। সস্প্রতি তোলা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দশমিনায় ভবন নির্মাণের ছয় মাসের মধ্যে খসে পড়ছে পলেস্তারা
  • চট্টগ্রামের রেলওয়ের ‘হাতির বাংলো’ নিয়ে কেন এত মাতামাতি