রাজনৈতিক দলের সমর্থন ছাড়া প্রক্সি ভোট বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়: সিইসি
Published: 29th, April 2025 GMT
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটাধিকার অন্তর্ভুক্ত করতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। পাশাপাশি ক্রটিমুক্ত কোন পদ্ধতিতে এটা প্রয়োগ করা হবে সে ব্যাপারে পরামর্শ এলেও এখনই সিদ্ধান্ত দেয়নি। তবে তারা প্রত্যেকেই দলীয় ফোরামে আলোচনা করে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে মতামত ইসিকে জানাবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার প্রয়োগ পদ্ধতি নির্ধারণে ইউএনপির সহযোগিতায় গতকাল মঙ্গলবার অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপের আয়োজন করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনের অডিটরিয়ামে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ‘ভোটিং সিস্টেম উন্নয়ন’ সংক্রান্ত সেমিনার উদ্ধোধন করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিন। এসব অন্যান্য কমিশনার, ইসি সচিবসহ সংশ্লিষ্টরা কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর তিনটা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত সেমিনারে পোস্টাল ব্যালট, অনলাইন ভোটিং ও প্রক্সি ভোটিং পদ্ধতির স্বচ্ছতা, ডিজাইন, নিরাপত্তা, মান ও আইনি চ্যালেঞ্জসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে উন্মুক্ত আলোচনায় উঠে আসে।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল এমআইএসটি, বুয়েট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রযুক্তিবিদ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠক করে ইসি। ওই বৈঠকের পর একটি পরামর্শক কমিটি গঠন করা হয়, যাদের দায়িত্ব ছিল অনলাইন ভোট, প্রক্সি ভোট, পছন্দের প্রতীকে ভোট দেওয়ার নিশ্চয়তা ও পোস্টাল ব্যালটে ভোটের ওপর বিস্তারিত প্রতিবেদন তৈরি করা। ওই কমিটির প্রতিবেদন তিনটির ওপরই অংশীজনরা গতকাল আলোচনা করেন।
বিএনপি-জামায়াতসহ ছোট-বড় ২১টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন। এছাড়া গণমাধ্যমের সম্পাদক, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ বিশিষ্টজনরা এতে অংশ নিয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন। সিপিবি, এলডিপি, জেএসডি, এনসিপি, এবি পার্টি, গণ অধিকার পরিষদ, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, এনপিপি, ইসলামী আন্দোলন, সাংস্কৃতি মুক্তিজোট, এনডিএম, বাংলাদেশ কংগ্রেস, নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিসহ বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও এমআইিএসটি’র কারিগরি বিশেষজ্ঞরা সেমিনারে অংশ নেন।
উন্মুক্ত আলোচনায় বক্তারা বলেন, প্রবাসীদের ভোটের তিন পদ্ধতির মধ্যে পোস্টাল ও অনলাইন ভোটিংয়ের চেয়ে প্রক্সি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের আগ্রহ থাকলেও এ পদ্ধতিটি বেশী ঝুঁকিপুর্ণ।
পরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপি প্রবাসীদের ভোটের ব্যবস্থা করার পক্ষে মত দিয়েছে। তবে তিনটি পদ্ধতির বিষয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনা করে ১৫ মে মধ্যে মতামত দেবে। সহজ, বোধগম্য হবে, গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি বাছাই হবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে কেবল জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বিবেচনায় নিলে হবে না, পাশাপাশি পাসপোর্টও বিবেচনায় নিতে হবে। কেননা, অনেকের এনআইডি নেই।
তার বক্তব্যে, ২০১৪ সালে যখন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছিল ইসি, তখন আমরা প্রবাসীদের ভোট দেওয়া সুয়োগের প্রস্তাব করেছিলাম। এরআগে ২০১৭, ২০২২, ২০২৩ সালের ৩১ দফার রাষ্ট্র সংস্কারের সময়ও এই বিষয়টি বিএনপির পক্ষে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রবাসীদের অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার উদ্যোগের প্রতি বিএনপির পূর্ণ সমর্থন আছে।
তিনি আরও বলেন, এই দুনিয়ায় কেনো সিস্টেমই ফুল প্রুফ না। ফুল প্রুফ হলে সংস্কার, বিপ্লবের প্রয়োজন হয় না। আমরা বিবেচনা করবো সবচেয়ে যেটা সহজ, বোধগম্য হবে, সবচেয়ে যেটা গ্রহণযোগ্য হবে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের কাছে সেই প্রক্রিয়ার প্রতি আমরা সম্মত হতে পারবো আশা করেন তিনি।
জামাতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, সম্প্রতি আমরা ইসির সঙ্গে বৈঠকে প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের বিষয়টি এনেছিলাম। ইসি সেই উদ্যোগ নিয়েছে। প্রক্সি ভোটের ত্রুটির বিষয়ে তিনি বলেন, এক্স একজনকে পছন্দ করে, ওয়াই আরেকজনকে পছন্দ করে। তাহলে এক্স এর প্রক্সি যদি ওয়াইকে দেওয়া হয় তাহলে ভোটারের রায়ের সঠিক প্রতিফলন হবে না। তবে দলীয় ফোরামে আলোচনার পরই পরবর্তীতে মতামত দেওয়া হবে। তবে কোনো অবস্থাতেই সিস্টেমকে ডেসট্রয় করা যাবে না।
জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পরে প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার আগ্রহ বেশ দেখছি। ইসির কাছে আমাদের প্রত্যাশা যেন অর্ধেক নয়, পরিপূর্ণ সমর্থন দিয়ে যেন তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে পারে। প্রক্সি ভোট হলে কোথাও কোথাও বেশ ভোট আসতে পারে৷ সেক্ষেত্রে এটা একটা হুমকি হতে পারে। আমরা দলীয় ফোরামের আলোচনা করে ইসিকে মতামত জানাবো।
এ নেতার ভাষ্য, ভোটের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলো ট্রাস্ট। এটা বজায় রাখতে হবে। সবার যাতে ট্রাস্ট থাকে অনলাইন হোক, পোস্টাল হোক। তবে প্রক্সি নিয়ে সন্দেহ আছে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন বলেন, অনলাইন, প্রক্সি ও পোস্টাল; তিনটি পদ্ধতিরই সুবিধা, অসুবিধা আছে। তবে দলগুলোর নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে। তিনি জানান, প্রবাসে দেড় কোটি ভোটার, এর প্রভাব জাতীয় নির্বাচনে আছে৷ তাই সতর্কতার সাথে আরও আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। তাই ইসির উচিত দলগুলোকে আস্থায় এনে যেন কাজ করে।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, দলীয় ফোরামে আলোচনা করে মতামত জানানো হবে। তিনি জানান, দেড় কোটি প্রবাসী ভোটার রয়েছে। মানুষের জন্য সুবিধা হয়, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয় এমন পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে। তিনি বলেন, প্রক্সি ভোটে দেখেছি মা একটি দলকে ভোট দেন। আর বাবা আরেকটি দলকে ভোট দেন। এক্ষেত্রে প্রক্সির মাধ্যমে কী করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়, সেটা ভাবতে হবে।
আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি অ্যাফেয়ার্স সেক্রেটারি আব্বাস ইসলাম খান জানান, প্রক্সি ভোট বাংলাদেশের জন্য খুব ঝুঁকিপূর্ণ। উন্নত বিশ্ব যেখানে পারছে না, আমাদের নাগরিকরা যেখানে সত্যিকার নাগরিক হতে পারিনি, সেখানে দলগুলো কিন্তু ফাঁকফোকর বের করে ফেলবে। বাংলাদেশ লেবার পার্টির সভাপতি ডা.
বাংলাদেশ জাসদের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজাহান আলী সাজু বলেন, তারাও দলীয় ফোরামে আলোচনা করে মতামত জানাবে। তবে তারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে মডেল নির্বাচন হিসেবে দেখতে চায়। বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি কাজী আবুল খায়ের জানান, প্রবাসীদের ভোটিং ব্যবস্থা নির্ধারণের পূর্বে দলগুলোর একমত হতে হবে যে, নির্বাচনে ভুল হলেও ফলাফল মেনে নেবো।
যা বললেন সিইসি: এদিন সকালে এ সেমিনারের শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, আগামী নির্বাচন স্বল্প পরিসরে হলেও প্রবাসীদের ভোটিং অন্তত শুরু করতে চাই। অন্তত যাত্রা শুরু হোক। এজন্য সকল রাজনৈতিক দলসহ অন্যান্যদের সমর্থন চাই। অন্যথায় এটা ভেস্তে যাবে। তিনি বলেন, প্রক্সি ভোট অনেক দেশ চালু করেছে, অনেক দেশ চালু করতে পারেনি। পাশ্ববর্তী দেশ ভারত এখন পর্যন্ত এটা চালু করতে পারেনি। আশা করি, সমর্থন পাবো। সিইসি বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার প্রথমেই ওয়াদা করেছিলাম যে আসছে নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটের ব্যবস্থা করবো। প্রবাসীরাও দেখা করে ভোটের ব্যবস্থা করার অনুরোধ করেন। আপনাদের পরামর্শ নিয়েই আমরা সামনের দিকে এগোতে চাই। আমরা ইনহাউস এটা নিয়ে অনেক আলোচনা করেছি। বুয়েট, ডুয়েট, এমআইএসটিসহ দেশি-বিদেশি ফার্মকে যুক্ত করে একটা ব্যবস্থা বের করার চেষ্টা করেছি।
নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, দেশের মোট ভোটারের ১০ শতাংশের মতো প্রবাসী ভোটার। আশা করি সবার মতামত নিয়ে এটা বাস্তবায়ন করতে পারবো।
ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, প্রবাসীরা ভোট দিতে না পারলে ভোটের কাস্ট হারে প্রভাব পড়ে। সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ নির্বাচন কমিশন। আমরা উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট চাই। এই উৎসবে প্রবাসীদের অন্তর্ভুক্ত করতে চাই।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প রব স দ র ভ ট দল য় ফ র ম ব যবস থ গ রহণয ন বল ন ব এনপ দলগ ল এনপ র মত মত ত করত
এছাড়াও পড়ুন:
প্রধান উপদেষ্টা একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করেছেন: জামায়াতে ইসলামী
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠককে স্বাভাবিক বললেও, দুইজনের যৌথ বিবৃতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে জামায়াতে ইসলামী।
শনিবার জামায়াতের নির্বাহী পরিষদের বৈঠকের পর বিবৃতিতে দলটি বলেছে, ‘যৌথ বিবৃতি প্রদান বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির ব্যত্যয় বলে আমরা মনে করি। এর মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করেছেন, যা তার নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন করেছে।’
দলের আমির ডা. শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে বিবৃতিতে বলা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, ‘১৩ জুন লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মাদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে, তাকে জামায়াত খুবই স্বাভাবিক মনে করে। ইতোমধ্যে প্রধান উপদেষ্টা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পৃথক পৃথকভাবে এবং যৌথভাবে বৈঠক করেছেন।’
লন্ডন বৈঠকের যৌথ বিবৃতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে জামায়াত বলেছে, ‘গত ৬ জুন জাতির উদ্দেশে ভাষণে ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেন প্রধান উপদেষ্টা। তার এই ঘোষণার পর লন্ডন সফরে একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিদেশে যৌথ প্রেস ব্রিফিং এবং বৈঠকের বিষয় সম্পর্কে যৌথ বিবৃতি প্রদান করা বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির ব্যত্যয় বলে জামায়াত মনে করে। এর মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করেছেন, যা তার নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন করে।’
লন্ডন বৈঠকের যৌথ বিবৃতিতে মধ্য ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে। জামায়াত এ প্রসঙ্গে বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা মনে করি দেশে ফিরে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে এ ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টার অভিমত প্রকাশ করাই সমীচীন ছিল।’
জামায়াত ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের বিরোধী নয় বিবৃতিতে স্পষ্ট করা হয়। এতে বলা হয়েছে, ‘গত ১৬ এপ্রিল জামায়াত আমির দলীয় দৃষ্টিভঙ্গী তুলে ধরে জানিয়েছিলেন ২০২৬ সালের রসজানের পূর্বে ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হতে পারে।’
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘জামায়াত মনে করে সরকার প্রধান হিসেবে কোনো একটি দলের সঙ্গে যৌথ প্রেস ব্রিফিং নৈতিকভাবে কিছুতেই যথার্থ নয়। প্রধান উপদেষ্টা একটি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতি দেওয়ায় আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হওয়ার বিষয়ে জনগণের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যেখানে বাংলাদেশে অনেকগুলো রাজনৈতিক দল সক্রিয়ভাবে বিদ্যমান, সেখানে শুধু একটি দলের সঙ্গে আলাপে দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সঠিক বলে বিবেচিত হতে পারে না। জামায়াত আশা করে, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য বর্তমান অন্তর্বতীকালীন সরকার নিরপেক্ষ থেকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করবে এবং বিচার ও সংস্কারের ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত করবে। সরকারের নিরপেক্ষতা এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিয়ে যে সংশয় দেখা দিয়েছে তা নিরসনে প্রধান উপদেষ্টার ভূমিকা জাতির সামনে স্পষ্ট করার জন্য বাংলাদেশ জামায়াতের নির্বাহী পরিষদ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।’
এর আগে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের দিন জামায়াত আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া না জানালেও দলটির শীর্ষস্থানীয় নেতারা সমকালকে বলেছিলেন, ‘জামায়াতই প্রথম বলেছে, রমজানের আগে নির্বাচন হওয়া উচিত। তাই নির্বাচনের যে নতুন সময়সীমা বলা হচ্ছে, এ নিয়ে আপত্তির কিছু নেই। কিন্তু সরকার যেভাবে শুধু বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করে সময়সীমা নির্ধারণ করেছে, তা অগ্রহণযোগ্য।’
জামায়াত নেতারা শুক্রবার রাতেই সমকালকে বলেছিলেন, যৌথ বিবৃতির মাধ্যমে বোঝানো হচ্ছে– সরকার এবং বিএনপি সমশক্তি। এর পর আর সরকারের নিরপেক্ষতা থাকে না। এ বক্তব্য ড. ইউনূসকে জানাবে জামায়াত।