ময়মনসিংহের ‘আলেকজান্দ্রা ক্যাসেল’ কাগজে-কলমেই সংরক্ষিত, বাস্তব চিত্র করুণ
Published: 2nd, May 2025 GMT
ময়মনসিংহ নগরের ঐতিহাসিক স্থাপনার একটি ‘আলেকজান্দ্রা ক্যাসেল’। স্থানীয়ভাবে এটা ‘লোহার কুঠি’ নামে পরিচিত। ময়মনসিংহ জেলা প্রতিষ্ঠার শতবার্ষিকী উপলক্ষে ১৮৮৯ সালে প্রাসাদটি নির্মাণ করা হয়। ময়মনসিংহ জেলা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৭৮৭ সালের ১ মে। প্রাসাদটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছিল ৪৫ হাজার টাকা।
প্রাসাদটি নির্মাণ করেছিলেন তৎকালীন জমিদার মহারাজা সুকান্ত সূর্যকান্ত আচার্য চৌধুরী। তৎকালীন ভারত সম্রাট সপ্তম অ্যাডওয়ার্ডের স্ত্রী আলেকজান্দ্রার নামানুসারে এর নামকরণ হয় ‘আলেকজান্দ্রা ক্যাসেল’। ভবন নির্মাণে লোহার ব্যবহার থাকায় স্থানীয়ভাবে এটি ‘লোহার কুঠি’ নামে পরিচিতি পায়। বর্তমানে প্রাসাদটি ময়মনসিংহ শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজের গ্রন্থাগার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে ১৩৬ বছরের পুরোনো ভবনটির অবস্থা অত্যন্ত নাজুক।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, ২০১৮ সালের ৮ মার্চ এটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সংরক্ষিত পুরাকীর্তির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়। ময়মনসিংহে তালিকাভুক্ত ১১টি পুরাকীর্তির একটি এটি। তবে এখনো এটি অধিদপ্তরের সরাসরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, সেখানে সংরক্ষিত পুরাকীর্তির কোনো সাইনবোর্ড নেই। নিচতলায় গ্রন্থাগার চালু থাকলেও দ্বিতীয় তলার লোহার সিঁড়িগুলো কাঁটাতারে ঘেরা। ভবনের সামনের দুটি ভাস্কর্যের বিভিন্ন অংশ ভাঙা। পেছনের বাগানে গরু চরানো হয়। ভবনের বিভিন্ন অংশ ভেঙে পড়ছে।
ভবনটি দেখতে আসা দর্শনার্থী জাহাঙ্গীর আলম ও ফিরোজা বেগম বলেন, স্থাপনাটি সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ জরুরি। ফলকে এর ইতিহাস উল্লেখ করলে নতুন প্রজন্ম অনেক কিছু জানতে পারবে।
এই প্রাসাদে অবস্থান করেছিলেন অনেক বরেণ্য ব্যক্তি। ১৯২৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ময়মনসিংহ সফরে এসে চার দিন আলেকজান্দ্রা ক্যাসেলে অবস্থান করেন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর ছেলে রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর, পুত্রবধূ প্রতিমা দেবী, দীনেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও ইতালীয় অধ্যক্ষ জোসেফ তুচি।
সংস্কৃতিকর্মী শামীম আশরাফ বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরসহ অনেক বরেণ্য ব্যক্তিত্বের স্মৃতিবিজড়িত স্থাপনাটি কেবল কাগজ-কলমেই সংরক্ষিত। বাস্তবে এর চিত্র করুণ।
শশীলজ জাদুঘরের ফিল্ড অফিসার সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, আলেকজান্দ্রা ক্যাসেলসহ ময়মনসিংহের ১১টি পুরাকীর্তির সংস্কার প্রকল্পের অনুমোদন হয়েছে। আগামী অর্থবছরে কাজ শুরু হবে। সংস্কারের পর এটি দর্শনার্থীদের উপযোগী করে তোলা হবে। দ্রুতই সেখানে সাইনবোর্ড লাগানো হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন দ রন থ ঠ ক র
এছাড়াও পড়ুন:
সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে অটোরিকশার ধাক্কা, নিহত ২
নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে ধাক্কা লেগে সিএনজিচালিত অটোরিকশার দুই যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন দুজন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১০টার দিকে উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসংলগ্ন এলাকার নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানার চায়নার মোড় এলাকার আবদুল জলিল (৪৫) ও নেত্রকোনা সদর উপজেলার গ্রামের পসর আলীর ছেলে শহীদ মিয়া (৪২)। অন্যদিকে আহত ব্যক্তিরা হলেন শহীদ মিয়ার স্ত্রী রেজিয়া আক্তার (৩৩) ও একজন অজ্ঞাতপরিচয় নারী। তাঁরা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ ও কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাতে ময়মনসিংহের শম্ভুগঞ্জ সেতু এলাকা থেকে একটি অটোরিকশায় করে ওই চার যাত্রী নেত্রকোনার উদ্দেশে রওনা হন। নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ সড়কের নারান্দিয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসংলগ্ন এলাকায় পৌঁছালে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা বালুভর্তি একটি ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দেয় অটোরিকশাটি। এ সময় অটোরিকশাটি দুমড়েমুচড়ে ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হন।
শ্যামগঞ্জ হাইওয়ে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নান্নু খান বলেন, নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ উদ্ধার করে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।