আমরা কোনো সাংবাদিকের চাকরি খাচ্ছিও না, দিচ্ছিও না: প্রেস সচিব
Published: 2nd, May 2025 GMT
‘কেউ কেউ বলছেন, আগের চেয়েও খারাপ অবস্থা। তিনজন সাংবাদিকের চাকরি চলে গেছে, আগে কি এমন ঘটনা ঘটেছে? তিনজন সাংবাদিকের চাকরি তো আমরা খাইনি। আপনারা সাংবাদিকেরা যাঁরা আন্দোলন করছেন, আপনারা টিভি স্টেশনগুলোর বাইরে গিয়ে প্রোটেস্ট করেন। আমরা কোনো সাংবাদিকের চাকরি খাচ্ছিও না, জব (চাকরি) দিচ্ছিও না। বাক্স্বাধীনতা হরণ করা হয়—এমন কোনো কাজ অন্তর্বর্তী সরকার করবে না।’
আজ শুক্রবার ‘জুলাই বিপ্লব পরবর্তী বাংলাদেশ: গণমাধ্যমের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে এ কথাগুলো বলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের জুলাই বিপ্লব স্মৃতি হলে এ সভার আয়োজন করে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন। এ সময় শফিকুল আলম অপতথ্য রুখে দিতে সাংবাদিকদের ফ্যাক্ট চেকিংসহ অন্যান্য বিষয়ে প্রশিক্ষণের পরামর্শ দেন।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘বাংলাদেশে সত্যিকার অর্থে যাঁরা সাংবাদিকতা করছেন, তাঁদের জন্য এর চেয়ে ভালো সময় আসেনি। আমরা কারও মুখ বন্ধ করছি না। কারও কলম ভেঙে ফেলছি না, কারও ছাপাখানায় গিয়ে সিলগালা করছি না। আমরা সবাইকে বলছি, আপনারা সাংবাদিকতা করুন। অধ্যাপক ইউনূস (প্রধান উপদেষ্টা) ক্ষমতা গ্রহণের পর সব সম্পাদককে ডেকেছিলেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন, আপনারা মন খুলে লিখেন, আমরা ভুলত্রুটির ঊর্ধ্বে নয়৷ আমার ভুলত্রুটি ধরিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব আপনার।’
অপতথ্যের বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘জুলাই পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের শিকার হয়েছি এই অপতথ্য নিয়ে। এর সঙ্গে দুটি ফোর্স—একটা হচ্ছে ইন্ডিয়ান মিডিয়া একটা বড় রকমের অপতথ্যের সোর্স, আরেকটা হচ্ছে আওয়ামী লীগের লোকেরা। এরা সব এক হয়েছে। তাঁরা মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার নিয়ে বসে আছে। তাঁরা প্রতিদিন একটার পর একটা (ভিডিও) দিচ্ছে। আপনি যেহেতু ফেসবুক ও ইউটিউবের মাধ্যমে কনজিউম করছেন, আপনি বুঝতেও পারছেন না এটি সত্য না মিথ্যা।’
শফিকুল আলম বলেন, ‘নিউজ কনজিউমের ধরন বদলে গেছে। ফলে প্রতিনিয়ত অপতথ্য আসছে, মিস ইনফরমেশন আসছে, ডিস ইনফরমেশন আসছে। এবং এগুলো দিয়ে সমাজকে ডিস্টেবিলাইজ (অস্থিতিশীল) করা হচ্ছে। আগে দেখা যেত এটি ডমেস্টিক্যালি হতো। এখন দেখা যাচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়াও এটার সঙ্গে ভয়াবহভাবে জড়িত। প্রতিদিন তাঁরা মিথ্যা নিউজ দিচ্ছে। অনেকে এটা বিশ্বাস করছে। তাঁদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আমাদের নামে অপতথ্য ছড়ানো।’
সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান, মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী। বক্তব্যে তাঁরা সাংবাদিকতার নীতিনৈতিকতা ও সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আলোচনা করেন। সভায় ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন প্রধান উপদেষ্টার উপ–প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার৷
লিখিত ধারণাপত্রে আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উল্লেখ করেন, ‘আমরা সবাই জানি, অতীতে সরকারের লোকজনই ঠিক করে দিতেন টকশোগুলোতে আলোচক হিসেবে কারা আসবেন কিংবা কারা আসতে পারবেন না। এখন এ ধরনের চর্চা বন্ধ করা হয়েছে। অতীতে এমনও হয়েছে কোনো একটা বিশেষ অ্যাসাইনমেন্ট কোনো রিপোর্টার কাভার করবেন এটা সরকারের লোকজন ঠিক করে দিয়েছে। এখন এ ধরনের চর্চাও বন্ধ করা হয়েছে।’
সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এস এম নছরুল কদির, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শহিদুল হক, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবদুস সাত্তার, বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ চট্টগ্রাম বিভাগের সদস্যসচিব খুরশীদ জামিল চৌধুরী প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব দ ক র চ কর অপতথ য ব দ কত আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
মন্ত্রণালয়ের প্রচার কার্যক্রম জোরদারের নির্দেশ তথ্য কর্মকর্তার
সব মন্ত্রণালয়ের প্রচার কার্যক্রম আরো জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান তথ্য অফিসার মো. নিজামূল কবীর।
বুধবার (৩০ জুলাই) তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এ নির্দেশনা দেন তিনি।
প্রধান তথ্য অফিসার বলেন, “বর্তমান সময়ে সব মন্ত্রণালয়ের প্রতিটি সেক্টরে ব্যাপক উন্নয়ন ও সংস্কারমূলক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু সে অনুযায়ী বিভিন্ন গণমাধ্যমে তার প্রতিফলন না ঘটায় জনগণ বর্তমান সরকারের কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে পারছে না। এ বিষয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত জনসংযোগ কর্মকর্তাদেরকে আরো আন্তরিক ও একনিষ্ঠভাবে নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের এসব সংস্কার ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রম ব্যাপকভাবে প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।”
আরো পড়ুন:
নদীর মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা গাছ নিয়ে গুজবের ছড়াছড়ি
সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব ঠেকাতে ডিসিদের সতর্ক থাকার নির্দেশ
তিনি বলেন, “বর্তমান সময়ে গুজব একটি বড় চ্যালেঞ্জ। একটি মহল পরিকল্পিতভাবে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে গুজব ও অপতথ্য প্রচার করছে। গুজবের নেতিবাচক প্রভাব থেকে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রকে রক্ষা করতে গুজব সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই।”
গুজব মোকাবিলায় তথ্য কর্মকর্তাদের ভূমিকা উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, “গুজব শনাক্তকরণ ও সঠিক তথ্য প্রচারে তথ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাগণ কাজ করছেন। গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত অপতথ্য তথা গুজব মনিটরিং ও এর সত্যতা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য তথ্য অধিদপ্তরের ‘গুজব প্রতিরোধ ও অবহিতকরণ কমিটি’ কাজ করছে। এই কমিটি গুজব প্রতিরোধে নিয়মিত আইকনোটেক্সট ও ভিডিও তৈরি করছে। গুজব প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে এসব আইকনোটেক্সট ও ভিডিও কার্যকর ভূমিকা পালন করছে।”
গুজব মোকাবিলায় তথ্য কর্মকর্তাদের দক্ষতা উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে নিজামূল কবীর বলেন, “তথ্যের চরিত্র নির্ধারণ ও তথ্যের উৎস যাচাইয়ে আধুনিক প্রযুক্তির বহুমুখী ব্যবহার সম্পর্কে তথ্য কর্মকর্তাদের দক্ষতা অর্জন করতে হবে। গুজব প্রতিরোধে আন্তরিকভাবে কাজ করার জন্য প্রতিটি মন্ত্রণালয়, সংস্থায় সংযুক্ত তথ্য কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ১ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় নানা কর্মসূচির আয়োজন করছে। মন্ত্রণালয়গুলোর জুলাই গণঅভ্যুত্থান সম্পর্কিত কার্যক্রম গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার নিশ্চিত করতে তিনি জনসংযোগ কর্মকর্তাদের নিদের্শনা প্রদান করেন প্রধান তথ্য কর্মকর্তা।
আলোচনা সভায় তথ্য অধিদপ্তরের সিনিয়র উপপ্রধান তথ্য অফিসার ইয়াকুব আলী ও ম. জাভেদ ইকবালসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/মেহেদী