১৫ বছরের সাংবাদিকতা মূল্যায়নে জাতিসংঘের সহায়তা চাওয়া হবে: প্রেস সচিব
Published: 2nd, May 2025 GMT
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনা সরকারের আমলে সাংবাদিকদের ভূমিকা মূল্যায়ন কেমন ছিল- এ নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশের বিষয়ে জাতিসংঘের সহায়তা চাওয়া হবে।
শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে ‘জুলাই বিপ্লব পরবর্তী বাংলাদেশ: গণমাধ্যমের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। যৌথভাবে এ সভার আয়োজন করে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন।
প্রেস সচিব বলেন, জাতিসংঘকে অনুরোধ করা হবে বিশেষজ্ঞ একটি প্যানেল করে গত ১৫ বছরের তিনটি নির্বাচন, আইসিটির রায়ে ফাঁসি, মাওলানা সাঈদীর মামলার রায়ের পর সারাদেশে সংঘটিত ঘটনায় প্রাণহানি, শাপলা চত্বর ট্র্যাজেডিসহ সব বড় বড় ঘটনাগুলোতে কেমন সাংবাদিকতা হয়েছে, সাংবাদিকদের ভূমিকা কেমন ছিল, তা অনুসন্ধান করে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করতে।
শফিকুল আলম বলেন, জাতিসংঘ জুলাই গণহত্যা নিয়ে একটি চমৎকার প্রতিবেদন দিয়েছে। সেখানে আওয়ামী লীগের নেতা, মন্ত্রী কে কোথায়, কোন ভূমিকা রেখেছে, সেগুলো উল্লেখ করা আছে। এ রকম একটি প্রতিবেদন যেন গত ১৫ বছরের সাংবাদিকতা নিয়ে করা হয়, সে বিষয় জাতিসংঘ সহায়তার জন্য লিখব। দেখি তারা কী বলে।
তিনি আরও বলেন, বিদেশি মিডিয়া ও আওয়ামী লীগ অপতথ্য ছড়িয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। মানুষ এখন ভিডিও দেখেন বেশি, নিউজ পড়েন কম। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মিথ্যা ছড়ানো হচ্ছে। আওয়ামী লীগের পান্ডারা একটি ভিডিও দিয়ে ছড়াচ্ছিল- এক ছেলেকে জবাই করছে জামায়াতের নেতাকর্মীরা। পরে কিন্তু খোঁজ নিয়ে দেখা গেল, ল্যাটিন আমেরিকায় ড্রাগ নিয়ে এ
ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এগুলো মানুষ তো বিশ্বাস করছে। প্রতিনিয়ত অপতথ্য, মিস ও ডিজ ইনফরমেশন আসছে। এর মাধ্যমে সমাজের গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংঘাত লাগানো হচ্ছে।
জুলাই আন্দোলনের সময় চট্টগ্রামে সাংবাদিকরা আন্দোলনকারীদের পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি বারবার উঠে আসে আলোচনা সভায়। এ প্রসঙ্গে প্রেস সচিব বলেন, এ ঘটনার তদন্ত হওয়া উচিত। সাংবাদিক ইউনিয়ন ও প্রেস ক্লাবের উচিত একজন বিচারক, পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়ে একটি বিশেষজ্ঞ তদন্ত কমিটি গঠন করে বিষয়টি খোলাসা করা। এটি বহু আগেই করা প্রয়োজন ছিল। যারা এগুলো করেছে তাদের আইনের আওতায় আনা উচিত। আন্দোলন ব্যর্থ হলে এই সাংবাদিকরা ছাত্রদের কী করতো, আপনারা দেখতেন।
অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে দেশের মানুষ বর্তমানে সবচেয়ে বেশি মত প্রকাশের স্বাধীনতা উপভোগ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন মানুষ মন খুলে লিখছেন, সমালোচনা করছেন, গালিও দিচ্ছেন। কাউকে কিছু বলা হচ্ছে না। অনেকে আবার বলছেন, স্বৈরাচারের দোসরদের প্রতি সফট হচ্ছি। কিন্তু আমরা তো আইনের বাইরে গিয়ে কিছু করতে পারি না। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর প্রধান উপদেষ্টা সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠক করেও সাংবাদিকদের মন খুলে লিখতে বলেছেন। আমরা কোনো কলম ভেঙে দেইনি, কোনো প্রেসে তালা দেইনি। কোনো গণমাধ্যম যদি তার কর্মীকে চাকরিচ্যুত করে, আপনারা সেই গণমাধ্যম অফিসের সামনে গিয়ে প্রতিবাদ করুন।
সভায় বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী বলেন, আমরা দেখেছি শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে আমাদের কিছু সাংবাদিক প্রশ্ন করতো, প্রশ্নগুলো দেখলেই মনে হতো তারা দালালি আর চামচামি করছেন। আমরা তো এমন সাংবাদিকতা চাইনি। স্বৈরাচারের দোসররা যেন আর মাথাচাড়া দিয়ে না উঠতে পারে সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।
তিনি বলেন, সংবাদ মাধ্যমের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। এ দেশের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা আছে। আর কারো প্রতি সাংবাদিকরা দায়বদ্ধ নয়। যদি সাংবাদিকরা অন্যের প্রতি দায়বদ্ধ থাকেন তাহলে সেটি আর সাংবাদিকতা থাকে না। আমাদের সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলতে হবে।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব অন্তর্বর্তী কমিটির সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচির সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন- বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন। ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার। বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আব্দুস সাত্তার, বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ চট্টগ্রামের সদস্য সচিব ডা.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ১৫ বছর আম দ র ব দ কর ব দ কত
এছাড়াও পড়ুন:
রুয়ান্ডা-কঙ্গোর সঙ্গে চুক্তি করছে যুক্তরাষ্ট্র
ইউক্রেনের পর যুক্তরাষ্ট্রের নজর এবার আফ্রিকায়। কঙ্গো ও রুয়ান্ডার মধ্যে চলমান দ্বন্দ্ব নিরসনের পাশাপাশি তাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় খনিজ সম্পদ চুক্তির জন্য তোড়জোড় করছে ওয়াশিংটন।
বৃহস্পতিবার এ তথ্য দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আফ্রিকাবিষয়ক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা মাসসাদ বৌলোস। দোহায় এক সাক্ষাৎকারে বৌলোস বলেছেন, শান্তিচুক্তি সম্পন্ন হলে সেদিনই কঙ্গোর সঙ্গে খনিজ সম্পদ চুক্তি সম্পন্ন করবে যুক্তরাষ্ট্র। আর রুয়ান্ডার সঙ্গে একই তবে কিছুটা ভিন্ন আকারের চুক্তি করা হবে।
এই চুক্তি এমন একসময়ে হচ্ছে, যখন রুয়ান্ডাসমর্থিত এম২৩ বিদ্রোহীরা কঙ্গোতে নজিরবিহীন অগ্রগতি অর্জন করছে। অঞ্চলটি ট্যানটালাম, স্বর্ণসহ বিভিন্ন খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ এবং কয়েক দশক ধরে সংঘাতে জর্জরিত। রয়টার্স।