নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে একটি টেক্সটাইল মিলে তিতাস গ্যাসের মিটার বিস্ফোরণে লাগা আগুনে দগ্ধ চার প্রহরীর মধ্যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রোববার রাত ও আজ সোমবার সকালে রাজধানীর জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁদের মৃত্যু হয়।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের আবদুল হান্নান (৫০) এবং রূপগঞ্জ উপজেলার রূপসী এলাকার কবির হোসেন (৪৫)। তাঁরা রূপগঞ্জ উপজেলার রূপসী কাজীপাড়া এলাকার জৈনপুরী আশরাফিয়া টেক্সটাইল মিলসের প্রহরী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। দুর্ঘটনায় আবদুল হান্নানের শরীরের ৪০ শতাংশ ও কবির হোসেনের শরীরের ৫৩ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল।

জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন শাওন বিন রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, দগ্ধ চারজনকে গত বৃহস্পতিবার হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে একজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ওই দিনই ছেড়ে দেওয়া হয়। আর গুরুতর দগ্ধ তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে গতকাল দিবাগত রাত দেড়টার দিকে অবস্থার অবনতি হলে আবদুল হান্নানকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়। রাত তিনটার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ছাড়া আইসিইউতে থাকা অবস্থায় আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কবির হোসেনের মৃত্যু হয়। এ দুর্ঘটনায় দগ্ধ সাইফুল ইসলাম (৩২) এখনো চিকিৎসাধীন। তাঁর শরীরের ৩৪ শতাংশ দগ্ধ হলেও এখন অবস্থা উন্নতির দিকে।

বৃহস্পতিবার সকাল আটটার দিকে উপজেলার আশরাফিয়া টেক্সটাইল মিলসে (মঞ্জু টেক্সটাইল) অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। তখন নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন জানান, ১ মে শ্রমিক দিবসে রূপগঞ্জের কারখানাগুলোর উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ ছিল। ফলে তিতাস গ্যাসের সরবরাহ লাইনে গ্যাসের উচ্চ চাপ সৃষ্টি হয়ে টেক্সটাইল মিলটির গ্যাসের মিটার বিস্ফোরিত হয়। এতে দগ্ধ হন প্রতিষ্ঠানটির চার নিরাপত্তাপ্রহরী।

ওই দুর্ঘটনায় আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি বলে জানিয়েছেন রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লিয়াকত আলী। তিনি বলেন বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপজ ল র র পগঞ জ প রহর আবদ ল র ঘটন অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

কদম রসুল সেতুটির পশ্চিমাংশের মুখটি পুনঃনির্ধারণের দাবি

নারায়ণগঞ্জ নাগরিক আন্দোলনের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বী বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে বহু প্রকল্প, মেগা-প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে যা, কেবল মাত্র নিজেদের ব্যক্তি বিশেষের অর্থ লুটপাটের উদ্দেশ্যে গ্রহণ করা হয়েছে বলে পরবর্তীতে প্রমাণ হয়েছে। সে সব প্রকল্প বিভিন্ন জায়গায় উপকারের চেয়ে ক্ষতির কারণ হয়ে উঠেছে।

তিনি বলেন, সে রকমই একটি প্রকল্প নারায়ণগঞ্জে কদম রসুল সেতুটির নকশায় দেখা যায়, পশ্চিমাংশের মুখটি শহরের অত্যন্ত ব্যস্ততম সড়ক ফলপট্টি এলাকায় নারায়ণগঞ্জ কলেজের সামনে এসে নেমেছে। যা নারায়ণগঞ্জের মানুষের জন্য একটি ভয়াবহ দুর্ভোগের কারণ হবে।

আমরা অতি দ্রুত যথাযথ সমীক্ষার মাধ্যমে এই ত্রুটি সমাধান করে গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুটির পশ্চিমাংশের মুখটি পুনঃনির্ধারণের দাবি জানাচ্ছি।

শনিবার (৩ মে) বেলা সাড়ে ১১ টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে নারায়ণগঞ্জ নাগরিক আন্দোলনের ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবী করা হয়।

রফিউর রাব্বী বলেন, এমনিতে একনং রেল গেট থেকে পুরো সিরাজ উদদ্দৌলা সড়কটিতে সব সময় অস্বাভাবিক ট্র্যফিক জ্যাম থাকে।

এখানে শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ বড় স্কুল নারায়ণগঞ্জ হাই স্কুল, পাশে নারায়ণগঞ্জ কলেজ, এর সাথে দিগুবাবু বাজারে প্রদেশের মুখ, এইটি শহরের রেলস্টেশন, বাস টার্মিনাল ও লঞ্চঘাটের সংযোগ সড়ক, সর্বপরি দেশের বৃহত্তর রঙ ও সুতার বাজার টানবাজারে প্রবেশের এইটি একটি প্রধানতম সড়ক হওয়ায় এখানে প্রতিনিয়ত যেমনি ভয়াবহ যানজট লেগে থাকে, আবার এর সাথেই রেল ক্রসিং থাকায় বিভিন্ন সময় এখানে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।

তিনি আরও বলেন, এমনি একটি ব্যস্ততম সড়কে কদম রসুল সেতুর মুখ যদি যুক্ত হয় তা হলে এই সেতু থেকে যানবাহন সড়কে নামার ক্ষেত্রে যেমনি বড় ধরণের সংকটে পড়বে, অন্যদিকে এই পুরো এলাকাটিই সম্পূর্ণ ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে উঠবে।

এত বড় সেতুর নকশা তৈরির ক্ষেত্রে নগরের এই বাস্তবতা ও সংকটটি গভীর ভাবে বিবেচনায় নেয়া উচিত ছিল বলে আমরা মনে করি। এই প্রকল্পে যথাযথ সমীক্ষারক্ষেত্রে ঘাটতি রয়েছে বলে আমরা মনে করছি। অপরিকল্পিত উন্নয়ন জনদুর্ভোগ বৃদ্ধি করা ছাড়া কোন সুফল বয়ে আনে না।

যেনতেন ভাবে প্রকল্প সম্পন্ন করে নারায়ণগঞ্জের মানুষের দুর্ভোগ আরও বৃদ্ধি করার কোন উদ্যোগ নারায়ণগঞ্জবাসী মেনে নেবে না। 

প্রসঙ্গত, শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব ও পশ্চিম পাড়কে সংযুক্ত করার প্রয়োজনে নদীর উপর কদম রসুলসেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। সেতু নির্মাণের সংবাদটি আমাদেরকে আনন্দিত করেছে। এই প্রকল্পটি ২০১৭ সালে একনেকে অনুমোদিত হয়। এর কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৮ সালে।

এর মেয়াদ ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২৬ সালের জুন মাস পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। এর প্রকল্প ব্যয় ৭ শ’ ৩৫ কোটি টাকা। সেতুটির মূল দৈর্ঘ ৩৮০ মিটার, প্রশস্ত ১২ দশমিক ৮০ মিটার। সংযোগ সড়ক ১৩৭৯ মিটার।

সেতুটি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) যৌথভাবে নির্মাণ করবে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রুপগঞ্জে ডাইং কারখানায় গ্যাস বিস্ফোরণে দ্বন্ধ ২ জনের মৃত্যু 
  • সন্ত্রাসী হামলায় আহত সাংবাদিক হৃদয়ের পাশে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি 
  • নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিস হবে পুরোপুরি দালালমুক্ত : ডিসি
  • সিদ্ধিরগঞ্জে কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে কিশোর নিহত, গ্রেপ্তার ২
  • ৯ মাস পর নারায়ণগঞ্জে পাসপোর্ট অফিস চালু
  • নারায়ণগঞ্জে নির্মাণাধীন নকশাবহির্ভূত পাঁচটি ভবনে রাজউকের অভিযান, জরিমানা
  • নারায়ণগঞ্জে ছুরিকাঘাতে কিশোর নিহত, দুই কিশোর আটক
  • চালের দাম একেবারে পড়ে যাওয়া ঠিক না, বললেন খাদ্য উপদেষ্টা
  • কদম রসুল সেতুটির পশ্চিমাংশের মুখটি পুনঃনির্ধারণের দাবি