বরিশাল চেম্বারের কমিটি বাতিল, প্রশাসক নিয়োগ
Published: 6th, May 2025 GMT
বরিশাল চেম্বারে প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বরিশালের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক উপমা ফারিসাকে চেম্বারের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) রেহান উদ্দিন স্বাক্ষরিত এ–সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়েছে, নবনিযুক্ত প্রশাসককে চার মাসের মধ্যে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচনের মাধ্যমে নবনির্বাচিত কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে হবে।
আওয়ামী লীগের শাসনামলে বরিশাল চেম্বারের সভাপতি ছিলেন বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টু। ওই সময় চেম্বারটির কার্যক্রম নিয়ে সদস্য ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ ছিল। গত ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাইদুর রহমান গ্রেপ্তার হন। এরপর জাহাঙ্গীর হোসেন মানিককে আহ্বায়ক ও ইলিয়াস হোসেনকে সদস্যসচিব করে বরিশাল চেম্বারের নতুন কমিটি গঠন করা হয়। পরে চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি নির্বাচনে সভাপতি নির্বাচিত হন বরিশাল দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এবায়দুল হক চান। চেম্বারের একাধিক সদস্যের অভিযোগ, গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে এবায়দুল হক চান একটি ‘পকেট কমিটি’ গঠন করেছিলেন। এ নিয়ে সদস্যদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছিল। পরে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দেওয়ার পর তদন্তে অভিযোগের প্রমাণ মেলে। তাই কমিটি বাতিল করে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়, চেম্বার সভাপতি এবায়দুল হক চান সাধারণ সদস্যদের অভিযোগের সন্তোষজনক জবাব দিতে ব্যর্থ হন। এ ছাড়া বর্তমান কমিটির কার্যক্রম সদস্যদের সঙ্গে সমন্বয় করে চলতে পারছিল না। ফলে সংগঠনটি বাণিজ্য, শিল্প ও সেবা খাতের স্বার্থে সঠিকভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছিল না। তাই বাণিজ্য সংগঠন আইন, ২০২২-এর ১৭(১) ধারা অনুযায়ী, কমিটি বাতিল করে প্রশাসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
এ বিষয়ে জানতে এবায়দুল হক চানের সঙ্গে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে বরিশাল জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলায়ার হোসেন বরিশাল চেম্বারে প্রশাসক নিয়োগের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘আজ এ–সংক্রান্ত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠি আমরা পেয়েছি। নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বর শ ল চ ম ব র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
চাকসুর গঠনতন্ত্র সংস্কারের দাবি ইনসানিয়াত বিপ্লবের
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) গঠনতন্ত্র সংস্কার প্রস্তাবনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে শাখা ইনসানিয়াত বিপ্লব স্টুডেন্ট ফ্রন্ট।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুর আড়াইটায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (চবিসাস) কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করেন সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ।
এ সময় লিখিত বক্তব্যে শাখা ইনসানিয়াত বিপ্লব স্টুডেন্ট ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক কেফায়েত উল্লাহ বলেন, “চাকসু শিক্ষার্থীদের অধিকার, চাহিদা, দাবি ও সমস্যাগুলো প্রশাসন ও শিক্ষকমণ্ডলীর নিকট উপস্থাপন করবে। প্রতিটি প্রস্তাবনা পেশ ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের কাছে স্বচ্ছতা বজায় রাখবে। চাকসু বিশ্ববিদ্যালয় ও ছাত্র সংসদকে দলীয়করণ হওয়া থেকে রক্ষা করবে এবং অভ্যন্তরীণ শান্তিশৃঙ্খলা নিশ্চিত করবে।”
আরো পড়ুন:
জবির আবাসিক হল ও ২ বিভাগের নাম পরিবর্তন
খাতা জমা দিতে দেরি করায় ১৬ শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাত, হাসপাতালে ২
তিনি বলেন, “চাকসু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য কার্যকরী ও যথোপযুক্ত মানবিক ও সমাজসেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করবে। শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান-গবেষণার বিকাশ ঘটাতে বছরে অন্তত একবার জার্নাল, গবেষণামূলক সাময়িকী, সৃজনশীল লিখনিমূলক সাময়িকী প্রকাশ করবে।”
চাকসুর কার্যকরী কমিটির সংস্কার প্রস্তাবনায় তিনি বলেন, “চাকসুর সভাপতি ও কোষাধ্যক্ষ পদ ছাত্রদের থেকে নির্বাচিত হতে হবে। যেহেতু চাকসু একটি ছাত্র সংসদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ সংসদের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে থাকবেন। সংবিধান সংশোধনে দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের মাধ্যমে সংশোধনী প্রস্তাব উপস্থাপন করা যাবে।”
তিনি আরো বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার (উপাচার্য) অনুমোদন ও স্বাক্ষর ছাড়া ব্যাংক থেকে কোনো তহবিল উত্তোলন ও ব্যয় করা যাবে না এবং প্রতিমাসে প্রধান উপদেষ্টার কাছে আয়-ব্যয়ের হিসাব দাখিল করতে হবে। ছাত্র সংসদের উদ্যোগে কোনো ধর্মীয় সভা করা যাবে না এবং ধর্মীয় বিতর্কিত বক্তাকে ছাত্র সংসদের মাধ্যমে আমন্ত্রণ করা যাবে না। এ সংসদ ধর্মীয় সাম্য বজায় রাখবেন এবং ধর্মীয় ব্যাপারে নিরপেক্ষ থাকবেন। ছাত্র সংসদ কোনো একক রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করবে না এবং কোনো রাজনৈতিক দলের পদাধিকারী ব্যক্তিকে কোনো অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ করতে পারবে না। ছাত্র সংসদ সকল রাজনৈতিক দলের বিষয়ে পক্ষপাতমুক্ত ও দল নিরপেক্ষ চরিত্র বজায় রাখবে।”
লিখিত বক্তব্যে কেফায়েত বলেন, “চাকসু নির্বাচনে প্রার্থীগণ তাদের রাজনৈতিক দলীয় ব্যনারে নির্বাচন করতে পারবে কিনা সে ব্যাপারে সুস্পষ্ট নির্দেশনা প্রদান করতে হবে। প্রার্থীর বৈধতা যাচাইয়ের জন্য তার পূর্ব কোনো অপরাধের খতিয়ান আছে কিনা, তা যাচাই করতে হবে এবং ছাত্রত্বের বৈধতার প্রমাণে স্বচ্ছতা রাখতে হবে। ছাত্র সংসদ তহবিলের কমপক্ষে এক-তৃতীয়াংশ দুঃস্থ ও গরিব ছাত্রছাত্রীদের জন্য বরাদ্দ থাকতে হবে।”
এ সময় অন্যদের মাঝে আরো উপস্থিত ছিলেন চবি শাখা ইনসানিয়াত বিপ্লব স্টুডেন্ট ফ্রন্টের সভাপতি জুয়েনা সুলতানা, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমন্বয়ক আরিফুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহরিয়ার প্রান্ত, সহ-সভাপতি রেশমা আক্তার, সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. মিজান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম সাকিব এবং অর্থ সম্পাদক জুনায়েদ শিবলী।
ঢাকা/মিজান/মেহেদী