বরিশাল চেম্বারে প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বরিশালের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক উপমা ফারিসাকে চেম্বারের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) রেহান উদ্দিন স্বাক্ষরিত এ–সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়েছে, নবনিযুক্ত প্রশাসককে চার মাসের মধ্যে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচনের মাধ্যমে নবনির্বাচিত কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে হবে।

আওয়ামী লীগের শাসনামলে বরিশাল চেম্বারের সভাপতি ছিলেন বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টু। ওই সময় চেম্বারটির কার্যক্রম নিয়ে সদস্য ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ ছিল। গত ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাইদুর রহমান গ্রেপ্তার হন। এরপর জাহাঙ্গীর হোসেন মানিককে আহ্বায়ক ও ইলিয়াস হোসেনকে সদস্যসচিব করে বরিশাল চেম্বারের নতুন কমিটি গঠন করা হয়। পরে চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি নির্বাচনে সভাপতি নির্বাচিত হন বরিশাল দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এবায়দুল হক চান। চেম্বারের একাধিক সদস্যের অভিযোগ, গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে এবায়দুল হক চান একটি ‘পকেট কমিটি’ গঠন করেছিলেন। এ নিয়ে সদস্যদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছিল। পরে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দেওয়ার পর তদন্তে অভিযোগের প্রমাণ মেলে। তাই কমিটি বাতিল করে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়, চেম্বার সভাপতি এবায়দুল হক চান সাধারণ সদস্যদের অভিযোগের সন্তোষজনক জবাব দিতে ব্যর্থ হন। এ ছাড়া বর্তমান কমিটির কার্যক্রম সদস্যদের সঙ্গে সমন্বয় করে চলতে পারছিল না। ফলে সংগঠনটি বাণিজ্য, শিল্প ও সেবা খাতের স্বার্থে সঠিকভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছিল না। তাই বাণিজ্য সংগঠন আইন, ২০২২-এর ১৭(১) ধারা অনুযায়ী, কমিটি বাতিল করে প্রশাসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

এ বিষয়ে জানতে এবায়দুল হক চানের সঙ্গে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

তবে বরিশাল জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলায়ার হোসেন বরিশাল চেম্বারে প্রশাসক নিয়োগের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘আজ এ–সংক্রান্ত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠি আমরা পেয়েছি। নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বর শ ল চ ম ব র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

লিফলেট বিতরণে যাওয়া বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে হামলার অভিযোগ

মাদারীপুরের শিবচরে তারেক রহমানের ৩১ দফা–সংবলিত লিফলেট বিতরণের সময় বিএনপির নেতা–কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সোমবার রাত আটটার দিকে শিবচর উপজেলার চরশ্যামাইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার বিকেলে তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লিফলেট নিয়ে বের হন মাদারীপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাজ্জাদ হোসেন ওরফে লাবলু সিদ্দিকীর কর্মী-সমর্থকেরা। শিবচর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে লিফলেট বিতরণ করেন তাঁরা। ফেরার পথে উপজেলার চরশ্যামাইল এলাকায় এলে শিবচর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক আওয়ামী লীগ দলীয় চেয়ারম্যান বাবুল ফকিরের লোকজনের সঙ্গে বিএনপির নেতা–কর্মীদের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ইউপি চেয়ারম্যানের লোকজন বিএনপির নেতা–কর্মীদের ওপর হামলা চালান বলে অভিযোগ।

এ সময় উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে আহত হন উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন। ভাঙচুর করা হয় পাঁচটি মোটরসাইকেল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে শিবচর থানা–পুলিশ ও জেলার অতিরিক্ত পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হওয়া সুমন আহম্মেদ ও রাশেদ মৃধা বলেন, তারেক রহমানের ৩১ দফা লিফলেট নিয়ে তাঁরা চরশ্যামাইল এলাকার কাজীর দোকান নামক স্থানে এলে আওয়ামী লীগ নেতা বাবুল ফকিরের ছেলে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা সুমন ফকিরের নেতৃত্বে শতাধিক মানুষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে তাঁদের অনেক লোকজন আহত হয়েছেন। মোটরসাইকেল রেখে তাঁদের অনেকে সেখান থেকে ফিরেছেন।

বিএনপি নেতা সাজ্জাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, প্রথমে বিএনপি কর্মীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কয়েকজন অনুসারীর কথাকাটাকাটি হয়। পরে বিষয়টি মিটমাটও হয়ে গেছে। লিফলেট বিতরণ শেষ করে মোটরসাইকেল নিয়ে ফেরার সময় রাস্তায় গতিরোধ করে দুই দিক থেকে লাঠিসোঁটা নিয়ে আক্রমণ করে। কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। হামলায় যারা আহত বেশির ভাগই বিএনপির কর্মী সমর্থক। তিনি হামলার নিন্দা জানিয়ে জড়িতের বিচার দাবি করেন।

এ বিষয়ে কথা বলতে বাবলু ফকিরের মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘খবর পেয়ে আমিসহ অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিই। এ ঘটনায় থানায় এখনো অভিযোগ দেয়নি কেউ। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ