মহান মে দিবসে শ্রমজীবী মানুষের স্মরণে কবিতা পাঠ ও আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে জাতীয় কবিতা পরিষদ। মঙ্গলবার সাওল হার্ট সেন্টারের কাজল মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে অংশ নেন দেশবরেণ্য কবিরা। 

আলোচনা সভায় মে দিবস উদযাপনের তাৎপর্য তুলে ধরেন জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মোহন রায়হান। তিনি বলেন, পৃথিবীর মূল চালিকা শ্রমজীবী মানুষ। আমরা কবিরা শ্রমজীবী মানুষের পক্ষে আজীবন।

কবিতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন বলেন, ‘বাংলাদেশে শ্রমিকরা বৈষম্যের শিকার হয়। পাশাপাশি এদেশের সাংবাদিকরাও ভীষণভাবে বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। তারা নিয়মিত বেতন পাচ্ছে না। এই অবস্থার পরিবর্তন জরুরি।’ 

অনুষ্ঠানে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন মোহন রায়হান, রেজাউদ্দিন স্টালিন, আবীর বাঙালি, শাহীন রেজা, শ্যামল জাকারিয়া, আসাদ কাজল, মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান, রফিক হাসান, ইউসুফ রেজা, ক্যামেলিয়া আহমেদ, মুহামদ মনিরুজ্জামান, রোকন জোহুর, মনিরুজ্জামান রোহান, সবুজ মনির, আফিয়া রুবি, শিমুল পারভীন, কাব্য রাসেল, রাসেল আহমেদ, তাসকিনা ইয়াসমিন, মো: মিলাদ উদ্দিন, নাহিদ হাসান, মুহাম্মদ বিল্লাল হুসেইন, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, শোভা চৌধুরী, নুরুন্নবী সোহেল, এবিএম সোহেল রশীদ, মানব সুরত প্রমুখ। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন শ রমজ ব

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ