“বাসায় আসলেই আমাকে ধরে, অনেক ভাউচার দেয় এটা দিলি না, ওটা দিলে না। প্রতিদিনই একই কথা বলে আমাকে শেষ করে দিচ্ছে। তোর মা এখান থেকে যায় না ক্যা? তোর মা এখান থেকে না গেলে তোকে খুন করব।” এভাবেই কেঁদে কেঁদে কথাগুলো বলেছিলেন নিহত ছেলে পলাশ সাহার মা আরতী সাহা।

তিনি বলেন, “ছেলের সংসারে এভাবে আড়াই বছর ধরে অশান্তি চলে আসছিল। গত পরশু দিন পলাশ আমার সাথে কথা বলার সময় এসব কথা জানায়। আমার সাথেই কথা বললেই ফেসবুকে লিখে দেয়- মার সাথে কি কথা বলেছিস, আমাকে বলতে হবে। এভাবেই সংসারে অশান্তি করে আসছিল পলাশের স্ত্রী।”

চট্টগ্রামে র‌্যাব-৭ এ কর্মরত সিনিয়র এএসপি পলাশ সাহার মরদেহ গ্রামের বাড়ী গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার তাড়াশী গ্রামে নেওয়া হলে স্বজনদের কান্নায় ভারি হয়ে ওঠে আকাশ বাতাস।

সেসময় পলাশের মা আরো বলেন, “তোরা আমার বাবার কাছে নিয়ে যা, আমি আমার বাবাকে একটু দেখবো। কি এমন রাগ করে আমাকে ছেড়ে চলে গেলি!”

গতকাল বৃহস্পতিবার (৮ মে) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে র‌্যাবের পাহারায় একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে সিনিয়র এএসপি পলাশ সাহার মরদেহ নিয়ে আসা হয় গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার তাড়াশী গ্রামে। অ্যাম্বুলেন্স থেকে মরদেহ বের করার পর রাখা হয় উঠানে। এসময় স্বজনদের আহাজারীতে ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ। পলাশকে এক নজর দেখতে আসা লোকজনেরও চোখ ভারী হয়ে ওঠে। পলাশের মা কান্নার মধ্যে বার বার ছেলের বউয়ের নির্যাতনের কথা তুলে ধরেন। সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। 

দুপুরে উপজেলার পারকোনা শ্মাশানে তার মরদেহের শেষকৃত্য করা হয়। এর আগে র‌্যাব-৬ এর পক্ষ থেকে পলাশের মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

এর আগে বুধবার (৭ মে) দুপুর সাড়ে ১২ টায় র‌্যাব-৭ এর চান্দগাঁও ক্যাম্পের তৃতীয় তলা থেকে সিনিয়র এএসপি পলাশ সাহার গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহের পাশ থেকে একটি চিরকুট পাওয়া যায়। 

ওই চিরকুটে উল্লেখ করা হয়, ‘‘আমার মৃত্যুর জন্য মা এবং বউ কেউ দায়ী না। আমিই দায়ী। কাউকে ভালো রাখতে পারলাম না। বউ যেন সব স্বর্ণ নিয়ে যায় এবং ভালো থাকে। মায়ের দায়িত্ব দুই ভাইয়ের ওপর। তারা যেন মাকে ভালো রাখে। স্বর্ণ বাদে যা আছে তা মায়ের জন্য। দিদি যেন কো-অর্ডিনেট করে।”

ঢাকা/বাদল/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পল শ স হ র র মরদ হ পল শ র

এছাড়াও পড়ুন:

বাবার ইচ্ছা পূরণে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করতে গেলেন প্রবাসী তরুণ

চাঁদপুরের সৌদিপ্রবাসী মেহেদী হাসানের (২৫) বাবার ইচ্ছা ছিল ছেলেকে হেলিকপ্টারে চড়িয়ে বিয়ে করাতে নিয়ে যাবেন। বাবার সেই ইচ্ছা পূরণ করলেন তিনি।

আজ শুক্রবার বিকেলে স্বজনদের নিয়ে ভাড়া করা হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করতে কনের বাড়িতে যান মেহেদী হাসান। বিয়ের পর নববধূকে হেলিকপ্টারে নিয়ে ফিরে আসেন নিজ বাড়িতে। এ ঘটনায় উচ্ছ্বসিত এলাকাবাসী।

মেহেদী হাসান মতলব উত্তর উপজেলার এমএম কান্দি গ্রামের আবদুল বারেক দেওয়ানের ছেলে। মেহেদীর নববধূর নাম আবিদা সুলতানা। তিনি একই উপজেলার রুহিতারপাড় গ্রামের মো. আল আমিনের মেয়ে। আজ শুক্রবার বিকেল চারটায় কনের বাড়িতে বিয়ে সম্পন্ন হয়।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কয়েক বছর আগে মেহেদী হাসান সৌদি আরবে যান। বিয়ে করার জন্য কিছুদিন আগে বাড়ি ফেরেন। কনে দেখা ও বিয়ের তারিখ ঠিক হয়। আজ শুক্রবার রুহিতারপাড় গ্রামের একটি মাঠে বরপক্ষকে নিয়ে হেলিকপ্টারটি নামলে স্থানীয় লোকজন সেখানে ভিড় করেন। হেলিকপ্টার থেকে নেমে স্বজনদের নিয়ে মেহেদী হাসান হেঁটে কনের বাড়িতে যান। বিয়ের পর নববধূকে নিয়ে হেলিকপ্টারটি তাঁর গ্রামে পৌঁছালে ভিড় করেন এলাকাবাসী।

মেহেদী হাসান বলেন, তাঁর বাবার এই ইচ্ছা পূরণ করতে পেরে তিনি ও তাঁর পরিবার খুবই আনন্দিত। সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন তিনি।

মেহেদী হাসানের বাবা আবদুল বারেক দেওয়ান বলেন, ইচ্ছা ছিল ছেলে বড় ও প্রতিষ্ঠিত হলে হেলিকপ্টারে চড়িয়ে তাকে বিয়ে করাবেন। আজ তাঁর সে ইচ্ছা পূরণ হলো। এতে তিনি খুবই আনন্দিত।

মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রবিউল হক বলেন, ঘটনা জানার পর হেলিপ্যাড এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাবার ইচ্ছা পূরণে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করতে গেলেন প্রবাসী তরুণ
  • ২৬ টুকরা লাশ: নিহতের বন্ধুকে আসামি করে মামলা