বেসরকারি প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ (২২) হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ফারিয়া হক ওরফে টিনাকে (২০) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেছে পুলিশ।

আজ শুক্রবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে ফারিয়াকে হাজির করে পুলিশ এই রিমান্ডের আবেদন করে।

ফারিয়া বেসরকারি ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের ছাত্রী। আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, জাহিদুল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ফারিয়ার রিমান্ড আবেদনের শুনানি আজ বিকেলে অনুষ্ঠিত হবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর ভাটারা এলাকা থেকে ফারিয়াকে গ্রেপ্তার করার কথা জানায় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জাহিদুল হত্যায় ফারিয়ার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।

এই হত্যা মামলায় দায় স্বীকার করে ইতিমধ্যে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন মো.

মাহাথির হাসান (২০) ও মো. আল কামাল শেখ ওরফে কামাল নামের দুই আসামি।

পুলিশ ও আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, মাহাথির জবানবন্দিতে বলেছেন, হত্যার সময় তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন। পূর্বপরিচিত দুজন নারী শিক্ষার্থী তাঁকে ফোন করে অভিযোগ করেছিলেন, জাহিদুল তাঁদের দেখে অশোভন ভঙ্গি ও হাসাহাসি করেছেন। তাই তিনিসহ তিনজন ঘটনাস্থলে যান। পরে ওই দুই নারী শিক্ষার্থীর পূর্বপরিচিত মেহেরাজ ইসলামসহ অন্যরা জাহিদুলকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান।

এই মামলায় এখন পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্র জানায়। গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন মেহেরাজ ইসলাম, আলভী হোসেন জুনায়েদ, আল আমিন সানি ও মো. হৃদয় মিয়াজী।

পুলিশ বলছে, গত ১৯ এপ্রিল বিকেলে রাজধানীর বনানীতে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে কয়েকজন দেশি অস্ত্র নিয়ে জাহিদুল ও তাঁর বন্ধু তরিকুল ইসলামের ওপর হামলা চালান। হামলায় গুরুতর আহত জাহিদুলকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

এ ঘটনায় জাহিদুলের ফুফাতো ভাই হুমায়ুন কবীর বাদী হয়ে আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২৫ থেকে ৩০ জনের বিরুদ্ধে রাজধানীর বনানী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

জাহিদুল প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

কুয়েত, বাহরাইন, আমিরাতের আকাশপথ আবার সচল

কাতার ও ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল কুয়েত, বাহরাইন ও আমিরাতের আকাশপথ। পরে এই তিন দেশ তাদের আকাশপথ আবার সচল করেছে। কুয়েত ও বাহরাইনের আকাশপথ আবারো খুলে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশ দুটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।

কাতারে মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের হামলার পর আকাশপথ বন্ধ ঘোষণা করেছিল কর্তৃপক্ষ। বিমানবন্দরগুলোর কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার কথা জানিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কর্তৃপক্ষও।

ইরাক ও কাতারে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর কথা নিশ্চিত করেছে ইরান। এক বিবৃতিতে দেশটির সশস্ত্র বাহিনী জানিয়েছে, ‘ইয়া আবা আব্দুল্লাহ আল হুসেইন’ সাংকেতিক নাম ধারণ করে বিপ্লবী গার্ড বাহিনী কাতারের মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে। ‘বাশারাত ফাতেহ’ অপারেশনে কাতারের উদেইদ ঘাঁটিকে লক্ষ্যবস্তু’ করে ‘বিধ্বংসী ও শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা করা হয়েছে।

বিবৃতির বরাত দিয়ে ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে, কাতারের আল উদেইদে অবস্থিত আমেরিকান ঘাঁটিতে ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। গত সপ্তাহে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে মার্কিন বিমান হামলার প্রতিশোধ হিসেবে এই হামলা চালানো হয়েছে। এর আগে, কাতার নিশ্চিত করেছে ইরান থেকে মোট ১৯টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে, যার মধ্যে মাত্র একটি ঘাঁটিতে আঘাত হেনেছে।

হামলার পর ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) বলেছে, হোয়াইট হাউস ও তাদের মিত্রদের প্রতি ইরানের বার্তা ‘সুস্পষ্ট’। ইরানের আঞ্চলিক অখণ্ডতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তার উপর কোনো আক্রমণকে ‘খামোখা ছেড়ে দেওয়া হবে না’।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই অভিযান সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের নির্দেশে এবং খাতাম আল আম্বিয়া কেন্দ্রীয় সদর দপ্তরের নেতৃত্বে পরিচালিত হয়েছে। 

এই বিবৃতির কিছু আগে কাতারের রাজধানী দোহা এবং এর উপকণ্ঠ লুসাইলে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। আকাশে প্রজেক্টাইল দেখা গেছে।

সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘এই সফল অভিযানে ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যা ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলায় যুক্তরাষ্ট্র যে পরিমাণ বোমা ব্যবহার করেছিল তার সমান ছিল। শক্তিশালী ইরানি বাহিনীর হামলায় যে ঘাঁটিটি লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল তা কাতারের নগর স্থাপনা এবং আবাসিক এলাকা থেকে অনেক দূরে ছিল।

যুক্তরাষ্ট্র বলেছিল, তারা ১৪টি বোমা দিয়ে ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে। এর কয়েক মিনিট আগে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর সঙ্গে সম্পৃক্ত আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা তাসনিম নিউজ এজেন্সি জানায়, কাতার ও ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে ‘বিশারাত ফাতেহ’ এবং ‘ইয়া আবা আব্দুল্লাহ’ কোড নামে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে।

তাসনিম জানায়, ‘বিশারাত ফাতেহ’ ও ‘ইয়া আবা আবদুল্লাহ’ নামে এসব হামলা চালানো হয়েছে। এসব হামলায় একাধিক ওয়ারহেড বা ক্ষেপণাস্ত্র বহনে সক্ষম খাইবার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে। 

আইআরজিসির বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থাটি জানাচ্ছে, এই প্রথমবার এই ক্ষেপণাস্ত্র কোনো হামলায় ব্যবহার করা হলো। সেই সঙ্গে হামলায় আধুনিক ড্রোনও ব্যবহার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ