ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় নকল শিশুখাদ্য তৈরির অভিযোগে একটি কারখানার মালিককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জুস, আইস ললি, তেঁতুলের চাটনিসহ এসব পণ্য ধ্বংসের পাশাপাশি কারখানাটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার রাত ৮টার দিকে পৌরসভার আঁধারকোঠা এলাকার আব্দুল্লাহ ফুড নামের ওই কারখানায় অভিযান চালায় সেনাবাহিনী ও পুলিশের সদস্যের যৌথ একটি দল। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মালিককে জরিমানা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোলাম রাব্বানী।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, ওই এলাকার একটি বাড়িতে জাহিদুল ইসলাম (৬০) নামের এক ব্যক্তি বিএসটিআইয়ের অনুমোদন ছাড়াই বিভিন্ন ধরনের শিশুখাদ্য উৎপাদন করে আসছিলেন। রাজধানী ঢাকার ঠিকানা ব্যবহার করে ওই কারখানায় স্যাকারিন, ঘন চিনি ও ক্ষতিকর রাসায়নিক দিয়ে জুস, আইস ললি, তেঁতুলের চাটনিসহ বিভিন্ন ধরনের শিশুখাদ্য উৎপাদন করা হচ্ছিল। খবর পেয়ে গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে এসব নকল পণ্য উদ্ধার করে উপজেলা ভূমি কার্যালয় চত্বরে নিয়ে যায়। পরে সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারখানার মালিক জাহিদুলকে জরিমানা করা হয়।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোলাম রাব্বানী বলেন, মানবস্বাস্থ্য, বিশেষ করে শিশুদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এসব পণ্য। নকল পণ্য উৎপাদনের কারণে ২০০৯ সালের ভোক্তা অধিকার আইনের ৪৫ ধারায় কারখানার মালিককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে নকল পণ্য ধ্বংস করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

গাজীপুরে সাংবাদিক হত্যার প্রতিবাদে রাবিতে মানববন্ধন

গাজীপুরের সাংবাদিক তুহিনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যার ঘটনার বিচার ও সারাদেশে সাংবাদিকদের নিরাপত্তার দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়েছে।

শনিবার (৯ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন সংলগ্ন প্যারিস রোডে এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেছেন রাবিতে কর্মরত সাংবাদিকরা।

মানববন্ধন ও বিক্ষোভে অংশ নেওয়া সাংবাদিকরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, তুহিন হত্যার ন্যায়বিচার নিশ্চিত না হলে এবং সারাদেশে সংবাদকর্মীদের নিরাপত্তা বিধান না হলে আরো কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।

আরো পড়ুন:

অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ

চটের বিছানা নিয়ে বাগবিতণ্ডা, যুবককে হত্যা

বিক্ষোভ সমাবেশে রাবি প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি সৈয়দ সাকিব বলেন, “সাম্প্রতিক যে হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে, এ রকম নৃশংসভাবে সাংবাদিককে হত্যা সর্বশেষ কবে হয়েছে আমার মনে পড়ে না। অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে আমি বলতে চাই, আপনার কাছ থেকে একটি সুস্পষ্ট বার্তা আমরা শুনতে চাই। আপনি এ সংবাদকর্মীদের অভিভাবক, কিন্তু এখনো পর্যন্ত আমরা আপনার কোনো প্রতিবাদ দেখিনি, এমনকি একটি ফেসবুক পোস্টও না। এভাবে একদম প্রকাশ্যে ও নৃশংসভাবে একজন সংবাদকর্মীকে হত্যার পরো আপনার পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য না আসা অত্যন্ত দুঃখজনক।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা আজ এখানে সমগ্র দেশের সাংবাদিকদের নিরাপত্তার দাবি নিয়ে দাঁড়িয়েছি। অবিলম্বে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করতে হবে এবং আমরা যারা সাংবাদিক আছি, আমাদের নিরাপত্তাও আপনাদের নিশ্চিত করতে হবে। রাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমরা বিভিন্ন ধরনের পরিস্থিতি লক্ষ্য করছি, তাই আমাদের নিরাপত্তা এখন সময়ের দাবি।”

বিক্ষোভ সমাবেশে বর্তমান সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সভাপতি মনির হোসেন মাহিন বলেন, “সাংবাদিক তুহিনকে প্রকাশ্যে যেভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে, তা আমরা সবাই দেখেছি। জুলাই-পরবর্তী সময়েও যদি সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়?”

তিনি বলেন, “আজ আমাদের এখানে দাঁড়ানোর কথা নয়। এখন আমাদের রাষ্ট্র নিয়ে ভাবার কথা, অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করার কথা। কিন্তু আজ দাঁড়িয়েছি আমার ভাইয়ের হত্যার বিচার চাইতে। সাংবাদিকদের অবহেলার চোখে দেখার কোনো সুযোগ নেই। সাংবাদিকরা যেমন রাষ্ট্রের প্রয়োজনে কলম দিয়ে লিখতে পারে, তেমনি প্রয়োজনে সেই কলমকে অস্ত্রে পরিণত করতে পারে। তাই আমরা সতর্ক করছি—এ ধরনের সাহস যেন আর কেউ না দেখাতে পারে, তার জন্য আমরা ন্যায়সঙ্গত ও যথাযথ বিচার চাই।”

সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরো বলেন, “আপনারা গদিতে বসেছেন শুধু এসির হাওয়া খাওয়ার জন্য নয়। হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আপনারা এ গদিতে বসেছেন। যদি সেই দায়িত্ব পালন করতে না পারেন, তাহলে গদি ছেড়ে দিন। আপনাদের বাইরে বাংলাদেশে অনেক যোগ্য ব্যক্তি আছেন, যারা দেশকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারবেন এবং আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবেন।

রাবি প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের জিসানের সঞ্চালনায় অর্ধশতাধিক সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ