যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়াকে সতর্ক করল উত্তর কোরিয়া
Published: 8th, November 2025 GMT
দক্ষিণ কোরিয়ার একটি বন্দরে মার্কিন বিমানবাহী রণতরী আগমনের ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী নো কোয়াং চোল সতর্ক করে বলেছেন, পিয়ংইয়ং শত্রুদের বিরুদ্ধে ‘আরো আক্রমণাত্মক পদক্ষেপে’ নেবে।
শনিবার (৮ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আলজাজিরা।
আরো পড়ুন:
রাশিয়ার জ্বালানি নিষেধাজ্ঞা থেকে হাঙ্গেরিতে অব্যাহতি দিলেন ট্রাম্প
ডায়াবেটিসসহ যেসব রোগ থাকলে বাতিল হতে পারে মার্কিন ভিসার আবেদন
প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার (৭ নভেম্বর) উত্তর কোরিয়া তার পূর্ব উপকূলে সমুদ্রে স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার চালানোর একদিন পরই দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী এই হুমকি দিলেন।
শনিবার উত্তর কোরিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) প্রতিরক্ষামন্ত্রী বক্তব্য উদ্ধৃত করে এক প্রতিবেদনে বলেছে, “আমরা শক্তিশালী শক্তির মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং শান্তি রক্ষার নীতিতে শত্রুদের হুমকির বিরুদ্ধে আরো আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ দেখাব।”
দক্ষিণ কোরিয়ার বার্তা সংস্থা ইয়োনহাপও উত্তর কোরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্য প্রকাশ করেছে যে, “উত্তর কোরিয়ার নিরাপত্তার সব ধরনের হুমকি সরাসরি লক্ষ্যবস্তু হবে এবং প্রয়োজনীয় উপায়ে জবাব দেয়া হবে।”
এর আগে বৃহস্পতিবার সাইবার-সম্পর্কিত অর্থপাচার কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ওয়াশিংটন উত্তর কোরিয়ার কিছু ব্যক্তি ও সংস্থার বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করে। তার কয়েকদিন আগে দক্ষিণ কোরিয়া সফর করেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। এরপরপরই শুক্রবার উত্তর কোরিয়া তার পূর্ব উপকূলে সাগরে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের একটি পরীক্ষা চালায়।
যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের সম্প্রতি দুই কোরিয়ার সীমান্ত সফর এবং পরে সিউলে অনুষ্ঠিত নিরাপত্তা বৈঠকের কঠোর সমালোচনা করেছেন উত্তর কোরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী চোল। তিনি অভিযোগ করেন, এই বৈঠকগুলো উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ শক্তি বাড়ানো এবং যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়ার পারমাণবিক ও প্রচলিত বাহিনীকে একত্র করার ষড়যন্ত্রের অংশ।
চোল বলেন, “এটি উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের শত্রুতার একটি প্রকাশ্য উদাহরণ।”
দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সামরিক মহড়ার অংশ হিসেবে বুধবার বুসানের নৌঘাঁটিতে পৌঁছেছে মার্কিন পারমাণবিক শক্তিচালিত বিমানবাহী রণতরী 'জর্জ ওয়াশিংটন।
গত মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়া সফরকালে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ বলেন, “সিউলের সঙ্গে ওয়াশিংটনের জোটের মূল লক্ষ্য উত্তর কোরিয়াকে নিরস্ত করা।” তবে দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থানরত মার্কিন বাহিনীকে আঞ্চলিক হুমকির মোকাবিলায় আরো নমনীয়ভাবে ব্যবহার করার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে বলে জানান তিনি।
গত মাসের শেষের দিকে দক্ষিণ কোরিয়া সফর করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুরুর সময় তিনি উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠকের আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। তবে শেষপর্যন্ত দুই নেতার মধ্যে কোনো বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়নি, বরং এক সপ্তাহ পরই ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায় পিয়ংইয়ং।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র য ক তর ষ ট র
এছাড়াও পড়ুন:
চীনের রণতরি উদ্বোধন, চাপে পড়বে যুক্তরাষ্ট্র
চীনের সর্বাধুনিক বিমানবাহী রণতরি ‘ফুজিয়ান’ আনুষ্ঠানিকভাবে নৌবাহিনীতে যুক্ত হয়েছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের উপস্থিতিতে এক জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে রণতরিটি নৌবাহিনীতে যুক্ত করা হয়।
ফুজিয়ান হলো চীনের তৃতীয় বিমানবাহী রণতরি, যা আধুনিক ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ক্যাটাপল্ট সিস্টেমে সজ্জিত। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধবিমানগুলো আরও বেশি গতিতে উড্ডয়ন করতে পারবে।
এটি চীনের নৌ সক্ষমতায় এক বড় অগ্রগতি। কারণ, বর্তমানে জাহাজের সংখ্যার দিক থেকে চীনের নৌবাহিনীই বিশ্বের সবচেয়ে বড়। সি চিন পিংয়ের নেতৃত্বে চীন সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অবিশ্বাস্য গতিতে নৌবাহিনী সম্প্রসারণ করছে, যা যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের ওপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করেছে।
চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানায়, ফুজিয়ানের সমতল ডেকে থাকা ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ক্যাটাপল্ট সিস্টেমের সাহায্যে তিন ধরনের যুদ্ধবিমান উৎক্ষেপণ করা সম্ভব। সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত এই রণতরি ভারী অস্ত্র ও জ্বালানি বহনকারী যুদ্ধবিমান মোতায়েন করতে পারবে, যা আরও দূরের শত্রু ঘাঁটিতে আঘাত হানতে সক্ষম। ফলে এটি চীনের প্রথম দুটি রণতরি—রুশ নির্মিত ‘লিয়াওনিং’ ও ‘শানডং’-এর তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী।
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ফুজিয়ানকে চীনের নৌবাহিনীর বিকাশে একটি বড় মাইলফলক হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।
বিশ্বে বর্তমানে শুধু যুক্তরাষ্ট্রেরই এমন একটি বিমানবাহী রণতরি রয়েছে, যাতে ফুজিয়ানের মতো ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ক্যাটাপল্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।